গত ৫ অক্টোবর ২০২৪ শিক্ষক দিবসে সরকার ঘোষণা দেয় যে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীগণ এর বেতন প্রদান নিয়ে যে, বৈষম্য রয়েছে তা দুর করার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শুধু স্কুল ও কলেজের এমপিওভুক্ত ৩,৯৮,০০০ হাজার শিক্ষক কর্মচারীর বেতন ইএফটির মাধ্যমে প্রদানের। । সেই ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চলতি মাসের ১ তারিখে ১,৮৯,৯১৩ জন শিক্ষক কর্মচারীর বেতন রতড়িঘড়ি করে প্রদান করে। কিন্তু এই তাড়াহুড়া করতে গিয়ে বিশাল একটি অংশ বাদ পড়ে যায়। যার সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ। সেই সমস্যার সমাধান আজকাল পরশু করতে করতে আজ প্রায় ১৮ দিন পর আজ ১৯ তারিখে কিছু সংখ্যক শিক্ষক কর্মচারীর পেমেন্ট তালিকা প্রকাশ করে যার সংখ্য ৬৭হাজার ৪৪০ জন। এর পর ২৭/০১/২০২৫ তারিখ সোমবার আরও প্রায় ৮৪ হাজার এর অধিক শিক্ষক কর্মচারীর পেমেন্টের তালিকা প্রকাশ করে। এ পর্যন্ত তিন ধাপে ৩৪২১২৭ জন শিক্ষক কর্মচারী ইএফটি আওতাভুক্ত হয়েছেন। এখন প্রায় ৫৬ হাজার এর অধিক শিক্ষক কর্মচারীর ইএফটিতে বেতন ধোয়াশায় ফেলে দিল। এই শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন কোন দিন কিভাবে দিবে তা নিয়ে। তবে যাদের বেতন এই ধাপে আসেনি তাদের ক্ষেত্রে হয়তবা একটু সময় সাপেক্ষে হবে। এখন কার কত সময় লাগবে তা নির্ভর করবে তার ভুলের মাত্রার উপর। যদি ভুলের পরিমাণ কম হয় তাহলে সংশোধন ও কম পরিমাণে লাগবে তখন সময় কম লাগবে। তবে অবশ্যই সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হবে। এবং সংশোধনের পর তারা অবশ্যই ইএফটির আওতাভুক্ত হবে এবং তাদের বেতন পাবে তা নিয়ে কোন প্রকার সংশয় নাই।
জন্ম তারিখের ভুল রয়েছে ১০ হাজার শিক্ষক কর্মচারীর। নিষ্ক্রিয় ও ভুল ব্যাংক হিসাব রয়েছে প্রায় ১৩ হাজার এর অধিক শিক্ষক কর্মচারীর। সঠিক এনআইডি যুক্ত শিক্ষক কর্মচারীর সংখ্যা ৩ লাখ ৬৩ হাজার। সঠিক ব্যাংক হিসাব যুক্ত শিক্ষক কর্মচারীর সংখ্যা ৩ লাখ ৫৮ হাজার। ইএমআইএস সেলের সাথে এনআইডির মিল নেই ৭৮ হাজার শিক্ষক কর্মচারীর।
সকল বৈধ নিয়োগকৃত শিক্ষকই অবশ্যই ইএফটির আওতাভুক্ত হবে। দুই দিন আগে অথবা দুই দিন পরে। তথ্যের জটিলতার কারণে হয়ত সাময়িক ভাবে তাদের কিছুদিন ভোগান্তি পোহাতে হবে।
১ম, ২য় ও ৩য় ধাপে ইএফটিতে বেতন আসার পরও শিক্ষক-কর্মচারীদের একটি অংশ এই তিন ধাপে ইএফটিতে বেতন পাবেন না। নানা কারণে তাদের তথ্য এন্ট্রি করা হয়নি বলে জানা গেছে। যেমনঃ জন্ম তারিখে ভুল বা নামের বানানের বড় ধরনের ভুল। এই ধরনের সমস্যা ছাড়া অধিকাংশ শিক্ষক কর্মচারী কিন্তু ইএফটির আওতাভুক্ত হয়ে গেছে তিন ধাপে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম ইএমআইএস সেলের একটি সূত্র জানিয়েছে, একাধিক কারণে শিক্ষক-কর্মচারীদের একটি অংশ ৩ ধাপে ইএফটিতে বেতনের মেসেজ পাননি। তারা এখন তথ্য সংশোধনের মেসেজ পাবেন।
তাদের নাম যে কারণে ইএফটির আওতাভুক্ত হয়নি সেই কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- তাদের নিকট থেকে যে ধরনের তথ্য চাওয়া হয়েছিল, সে অনুযায়ী তথ্য না দেওয়া এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের সঙ্গে তথ্যের মিল না থাকা। বিভিন্ন সময় ইএমআইএস ইনফরমেশন আপডেট করার সময় বিভিন্ন রকম তথ্য প্রদান করা। এমপিওভুক্ত হওয়ার সময় একরকম তথ্য প্রদান করা এবং পরে ইএমআইএস আপডেটের সময় আর এক ধরনের তথ্য দেওয়া। আর সেই কারণে তাদের নামের বানানের বড় ধরনের ভুল। জন্ম তারিখের ভুল ধরা পড়েছে।
ওই সূত্র জানিয়েছে, অনেক শিক্ষকের জাতীয় পরিচয়পত্রে যে নাম দেওয়া আছে, এমপিও শিটে সেই নাম নেই; আবার কারো কারো নামের জন্ম তারিখ ভুল দেওয়া, নামের বানান ভুল করা, দ্বৈত এমপিওসহ আরও কিছু কারণে শিক্ষক-কর্মচারীরা ইএফটিতে বেতন পাননি।
জানতে চাইলে ইএমআইএস সেলের সিনিয়র সিস্টেম এনালিষ্ট খন্দকার আজিজুর রহমান জানান এধরনের কারণে শিক্ষকরা বাদ পড়েছেন। তৃতীয় পেমেন্ট তালিকায় যাদের নাম ইএফটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি তাদের কে সঠিক ও নির্দেশিত প্রক্রিয়া অবলম্বন করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।
প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের করণীয়:
ইএমআইএস সেল জানিয়েছে, যে শিক্ষক-কর্মচারীরা ইএফটিতে বেতনের মেসেজ ১ম, ২য় ও তৃতীয় ধাপে পাননি তাদের অপেক্ষা করতে হবে। ইএমআইএস সেলের নির্দেশনার জন্য। প্রতিষ্ঠানের আইডিতে কোন শিক্ষক কর্মচারীর কি ভুল আছে তা দ্রুতই দেখার ব্যবস্থা করা হবে এবং তথ্য সংশোধনের নির্দেশনা প্রদান করা হবে। তৃতীয় ধাপে যাদের ইএফটিতে বেতন পেতে যাচ্ছে তাদেরও তথ্যে আংশিক ভুল ছিল যা সংশোধনের নির্দেশনা দেওয়া হবে। ভুল তথ্য নির্দেশনা মোতাবেক যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংশোধন করে পুনরায় প্রেরণ করতে হবে।তথ্য প্রেরণকালে বরখাস্ত, পদত্যাগ বা অস্তিত্বহীন যাদের দেখানো হয়েছে তাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করিবেন। তবে এর আগে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের ড্যাশবোর্ডে প্রবেশের এক্সেস ওপেন করে দেওয়া হবে।
ইএমআইএস সেলের এক কর্মকর্তা জানান, ‘১ম ধাপে যারা ইএফটিতে বেতনের মেসেজ পাননি এবং দ্বিতীয় ও ৩য় ধাপে যারা মেসেজ পান নি, তাদের আপাতত অপেক্ষা ছাড়া কিছু করার নেই। তাদের অপেক্ষা দীর্ঘতর হবে। তৃতীয় ধাপের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর কী কারণে বেতনের মেসেজ পাঠানো হয়নি সে বিষয়টি প্রতিষ্ঠান প্রধানদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই মোতাবেক পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহন করতে হবে।
৪র্থ ধাপের শিক্ষক কর্মচারীদের যে কাজ গুলো করতে হতে পারে-
iBas++ সিস্টেমে কোনো ধরনের তথ্য অমিল (যেমন নাম, জন্ম তারিখ, এনআইডি নম্বর, ঠিকানা) থাকলে, তা সঠিকভাবে আপডেট করা প্রয়োজন। গ্রাহককে ব্যাংক শাখায় গিয়ে তথ্য সংশোধন করতে হবে। সঠিক তথ্য আপডেট হলে, পরবর্তী লেনদেন বা সেবা পাওয়া সহজ হয়ে যাবে।
আমার এন আইডি স্মার্ট হয়নি তাই ১৩ সংখ্যা দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট খুলেছিলাম। বর্তমানে এন আই ডি ১৭ সংখ্যায় দিতে বলা হয়েছে তাই আগে জন্ম সাল যোগ করে ১৭ সংখ্যা করা হয়েছে। এটা কি কোন ভুলের কারণ হতে পারে ?