জুলাই থেকে স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া
আগামী জুলাই মাস থেকে স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে দেশের চার লাখ বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর বদলি কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। শিক্ষা অধিদপ্তর জানিয়েছে, সফটওয়্যার তৈরির কাজ প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং নির্ধারিত সময়েই এটি চালু হবে।
এ প্রেক্ষিতে গত ২৬ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বদলি নীতিমালা-২০২৫ প্রকাশ করা হয়। নীতিমালায় বলা হয়েছে, এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা বর্তমানে দেশের বিভিন্ন বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। তাদের বদলি কার্যক্রমকে স্বচ্ছ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে এই নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, শিক্ষক-কর্মচারীরা একটি নির্ধারিত সফটওয়্যার প্ল্যাটফর্মে গিয়ে অনলাইনে বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন। প্রত্যেক শিক্ষক সর্বোচ্চ তিনটি প্রতিষ্ঠানে বদলির ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারবেন।
প্রথম কর্মস্থলে দুই বছর পূর্ণ হলে বদলির জন্য আবেদনযোগ্য হবেন। বদলির পর নতুন কর্মস্থলে ন্যূনতম দুই বছর দায়িত্ব পালনের পর পুনরায় আবেদন করা যাবে। একজন শিক্ষক সর্বোচ্চ তিনবার বদলির সুযোগ পাবেন। প্রতি প্রতিষ্ঠানে বছরে সর্বোচ্চ দুইজন শিক্ষক বদলির অনুমতি পাবেন। নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে, এবং স্বামী বা স্ত্রীর কর্মস্থলকেও বিবেচনায় নেওয়া হবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এনটিআরসিএ শূন্য পদের তালিকা অনলাইনে প্রকাশ করবে। এরপর ১ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত বদলির আবেদন গ্রহণ করা হবে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বদলির আদেশ জারি এবং ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান সম্পন্ন হবে।
আবেদনকারী শিক্ষক প্রথমে নিজ জেলা এবং সেখানে পদ না থাকলে নিজ বিভাগের যেকোনো জেলায় বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) বদলির সফটওয়্যার ও অনলাইন ফরমেট নির্ধারণ করবে। পুরো বদলি প্রক্রিয়া সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রিত হবে। বদলিকৃত শিক্ষকের ইনডেক্স অনলাইনে স্থানান্তরিত হবে এবং পূর্ববর্তী আর্থিক সুবিধা ও জ্যেষ্ঠতা বজায় থাকবে।
পারস্পরিক বদলির ক্ষেত্রে লিখিত আবেদনের ভিত্তিতে মাউশির মহাপরিচালক সিদ্ধান্ত দেবেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর ড. খান মঈনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল বলেন, “সরকারি হাইস্কুলের জন্য ডায়নামিক ওয়েবসাইট এবং বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য বদলি সফটওয়্যার আগামী জুলাই মাসেই চালু হবে। শিক্ষকদের তথ্যপ্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জনের প্রয়োজন রয়েছে, যেন তারা এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে সক্ষম হন।”
এই উদ্যোগের মাধ্যমে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, গতিশীলতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Leave a Reply