বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নন-টিচিং স্টাফ (কর্মচারী) নিয়োগে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই নীতিমালার আওতায় নিয়োগ প্রক্রিয়া কেন্দ্রীয়ভাবে তদারকি করবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), এবং নিয়োগ পরীক্ষা ও সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করবে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি)।
বুধবার (১৮ জুন) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) মিজানুর রহমানের কক্ষে আয়োজিত এক সভায় এ নীতিমালার অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভায় উপস্থিত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে প্রায়ই অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিকে কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার জন্য ক্ষেত্র বিশেষে ৮ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। এটি বন্ধ করতেই কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ বিষয়ে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর থেকে একটি প্রস্তাব করা হয়েছিল। এ প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে।’
তবে প্রশ্ন হলো এভাবে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালিত হলেই কি ঘুষ দূর্নীতি বন্ধ হয়ে যাবে। অতীত কিন্তু তা বলে না। অতীতে কিন্তু অনেক স্কুল কলেজ ডিসি এর তত্ববধায়নে পরিচালিত হয়েছে সেই সময়ে কি নিয়োগে ঘুষ বন্ধ ছিল ছিলনা তো। আমাদের দেশের আমলারা যদি সঠিক ও নিয়মতান্ত্রিক ভাবে চলত তাহলে কি দেশে এত অনিয়ম থাকত। এদেশের আমলারা যে কি পরিমাণ ভয়ানক তা আরও ভালভাবে টের পাওয়া যাবে নিয়োগ কার্যক্রম তাদের দ্বারা পরিচালিত হওয়া শুরু হউক।
নিয়োগ নীতিমালায় কোনো পরিবর্তন আসছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, এমপিও নীতিমালায় নিয়োগের যে শর্তাবলি রয়েছে, সেগুলোর ভিত্তিতেই নিয়োগ কার্যক্রম চলবে। এখানে মূল নীতিতে কোনো সংশোধন আনা হয়নি। কেবলমাত্র প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ ও কার্যকর করতে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়োগ কার্যক্রম তদারকি করবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), আর নিয়োগ পরীক্ষা ও অন্যান্য কার্যক্রম জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) পরিচালনা করবেন। এ ক্ষেত্রে কিছুটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতির ধারা অনুসরণ করা হবে।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের কাছে ডিআই (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর) একটি প্রস্তাব পাঠায়। সেখানে প্রতিষ্ঠান প্রধান, সহকারী প্রধান ও অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের ক্ষমতা এনটিআরসিএকে দেওয়ার পাশাপাশি, নন-টিচিং স্টাফ নিয়োগ ম্যানেজিং কমিটির পরিবর্তে জেলা প্রশাসক বা মাউশির মাধ্যমে সম্পন্ন করার সুপারিশ করা হয়। শেষ পর্যন্ত মন্ত্রণালয় সেই প্রস্তাবেই অনুমোদন দিয়েছে।
Leave a Reply