1. admin@kp-nat.com : admin : Ayub Ali
  2. ayub.bhs@gmail.com : Ayub ali : Ayub ali
শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৫:০৪ অপরাহ্ন

উৎসব ভাতা নিয়ে ত্রিমুখী চক্রান্ত অবশেষে সফল হতে চলেছে

  • Update Time : মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
  • ১০৬১ Time View
উৎসব ভাতা নিয়ে ত্রিমুখী চক্রান্ত অবশেষে সফল হতে চলেছে

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের উৎসব ভাতা: ত্রিমুখী চক্রান্তের খোলা চিঠি

প্রতি বছর ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা উপলক্ষে এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীরা যে উৎসব ভাতা পেয়ে থাকেন, তা তাঁদের জন্য এক ধরনের আর্থিক স্বস্তি ও আনন্দের বার্তা হয়ে আসে। তবে ২০২৫ সালের ঈদুল আযহা সামনে রেখে এ ভাতাকে কেন্দ্র করে যে নাটক শুরু হয়েছে, তা কেবল হতাশাজনক নয় বরং শিক্ষকদের প্রতি রাষ্ট্রীয় উদাসীনতা ও পরিকল্পিত বঞ্চনার বহিঃপ্রকাশ। বর্তমানে উৎসব ভাতা নিয়ে একটি ত্রিমুখী চক্রান্ত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)—এই তিন পক্ষ মিলে কৌশলে চেষ্টা করছে, যেন এই ঈদের পূর্বে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা ভাতা না পান বা কম পান।

বর্তমানে যে অজুহাত দেওয়া হচ্ছে, তা অত্যন্ত হাস্যকর। অর্থ মন্ত্রণালয় দাবি করছে, মাউশি যেই প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে তাতে নাকি এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধির বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল না। তাদের ভাষ্যমতে, যেহেতু কর্মচারীরা আগে থেকেই ৫০% হারে উৎসব ভাতা পেয়ে আসছেন, তাই সেখানে স্পষ্ট করে বলা উচিত ছিল—তাদের ভাতা আরও ২৫% বাড়িয়ে ৭৫% করতে হবে। অথচ এটি নতুন কিছু নয়। শিক্ষকরা দীর্ঘ ২১ বছর ধরে ২৫% হারে এবং কর্মচারীরা ৫০% হারে ভাতা পেয়ে আসছেন—এ তথ্য দেশের প্রতিটি মানুষ জানেন। আর এই বিষয়টিই অর্থ মন্ত্রণালয় হঠাৎ করে “না জানার” ভান করছে, যা একেবারে নাটকীয় এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

অন্যদিকে, মাউশি দাবি করছে, তারা যে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে সেখানে বলা হয়েছিল এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ২৫% বাড়ানো প্রয়োজন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন তারা আরও পরিষ্কারভাবে, নির্দিষ্টভাবে—শিক্ষক ২৫% থেকে ৫০%, আর কর্মচারী ৫০% থেকে ৭৫% করার সুপারিশ করেনি? এটি কি মাউশির অনিচ্ছা, না কি তারা জেনেশুনে এমন অস্পষ্টতা রেখে সুযোগ তৈরি করেছে, যাতে অর্থ মন্ত্রণালয় অজুহাত দাঁড় করাতে পারে?

আর সবচেয়ে উদ্বেগজনক ভূমিকা পালন করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তারা পুরো বিষয়টিকে যেন উপভোগ করছে। একদিকে শিক্ষকরা অনিশ্চয়তায় ভুগছেন, অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক রকম নিশ্চুপ। প্রশ্ন হলো, শিক্ষক-কর্মচারীদের অধিকার রক্ষায় তাদের সক্রিয় হবার কথা ছিল—কিন্তু তারা কোথায়? এমন অবস্থানে থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আসলে কি নিরপেক্ষ? নাকি চক্রান্তের নেপথ্য পরিচালক?

বর্তমানে যা বোঝা যাচ্ছে, তা হলো—এই তিনটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে সময় ক্ষেপণ করছে এবং এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করছে, যাতে ঈদের আগেই ভাতা দেওয়া সম্ভব না হয়। এটি একটি কৌশল, যাতে বলার সুযোগ থাকে—“সময়ের অভাবে এবার দেওয়া গেল না।” অথচ প্রতি বছর এই ভাতার বাজেট বরাদ্দ হয়, অর্থ মন্ত্রণালয় তা জানে, মাউশি জানে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও জানে। তাহলে এবার এত ধোঁয়াশা কেন?

এই পরিস্থিতি আমাদের সামনে এক কঠিন প্রশ্ন তোলে—এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীরা কি কেবল অবহেলার পাত্র? তাঁদের অধিকার নিয়ে এভাবে ছিনিমিনি খেলা কি কখনো গ্রহণযোগ্য হতে পারে? এমন চক্রান্ত শুধু অর্থনৈতিক বঞ্চনাই নয়, এটি একটি শ্রেণির মর্যাদা, আত্মমর্যাদা এবং সামাজিক অবস্থানের ওপর আঘাত।

এবার প্রয়োজন সোচ্চার হওয়া। শিক্ষক সমাজকে সংগঠিত হয়ে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। সামাজিক ও গণমাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরতে হবে। জাতীয় শিক্ষক সংগঠনগুলোকে এগিয়ে এসে সরকারের কাছে চূড়ান্ত অবস্থান জানাতে হবে। প্রয়োজনে আন্দোলনের প্রস্তুতিও নিতে হবে। কারণ এটি কেবল একটি ভাতার লড়াই নয়, এটি সম্মানের লড়াই।

এই লেখার মাধ্যমে দেশের প্রতিটি শিক্ষক, কর্মচারী ও সচেতন নাগরিকের প্রতি আহ্বান—এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে দাঁড়ান। চুপ থাকলে শুধু অধিকার নয়, সম্মানটুকুও হারিয়ে যাবে। আমাদের এখনই রুখে দাঁড়াতে হবে। সারাজীবন কেন আমাদের এভাবে বঞ্চিত হওয়ার কাঁতারে সামিল হতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আমার খবর
© All rights reserved © 2025 Kisukhoner Pathshala
Customized By BlogTheme