1. admin@kp-nat.com : admin : Ayub Ali
  2. ayub.bhs@gmail.com : Ayub ali : Ayub ali
শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ০৬:৩৫ অপরাহ্ন

MPO শিক্ষকেরা চিৎকার করে কাঁদতে চাইলেও তো তাদের কান্না কেউ শুনেনা।

  • Update Time : সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫
  • ২০৬ Time View
MPO শিক্ষকেরা চিৎকার করে কাঁদতে চাইলেও তো তাদের কান্না কেউ শুনেনা।

এ এক গোলক ধাঁধার দেশ, একে অপরে ঠকানোর কাজে ধরছে নতুন বেশ। চিৎকার করে কাঁদতে চাইছি তবু করতে পারি না চিৎকার, দুঃখের দহনে করুন আঘাতে জানাই তাদের ধিক্কার।

“আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া / করিতে পারিনি চিৎকার”
কবির এ-ই অসমাপ্ত চিৎকার যেন আজ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সমাজিক বাস্তবতায় পরিপূর্ণ রূপ পেয়েছে। বুকে জমে থাকা যন্ত্রণা, মুখে ফুটে না-ওঠা অভিমান—সবকিছুই মিলে গেছে বেতন-বোনাস নিয়ে ‘প্রশাসনিক নিষ্পৃহতা’র বিরুদ্ধে এক গোপন ধিক্কার-সৈনিক হয়ে। নিচে সেই মিলকরণটি রইল—

কতটুকু অশ্রু গড়ালে হৃদয় জলে সিক্ত,
কত প্রদীপ শিখা জ্বালালেই
জীবন আলোয় ত্রিপ্ত।
কত ব্যথা বুকে চাপালেই
তাকে বলি আমি ধৈর্য,
নির্মমতা কতদূর হলে জাতি হবে নির্লজ্জ।
আমি চিৎকার করে কাঁদিতে
চাহিয়া করিতে পারিনি চিৎকার||
বুকের ব্যথা বুকে চাপায়ে
নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার
আজও কানে ভাসে সেই কথাগুলো
কে জানে হবে যে শেষ কথা||
নিয়তির ডাকে দিলি যে সাড়া
ফেলে গেলি শুধু নিরবতা
যার চলেযায় সেই বুঝে হায়
বিচ্ছেদে কি যন্ত্রণা||
অবুঝ শিশুর অবুঝ প্রশ্ন
কি দিয়া দেব সান্তনা ।
আমি চিৎকার করে কাঁদিতে
চাহিয়া করিতে পারিনি চিৎকার||
বুকের ব্যথা বুকে চাপায়ে
নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার।
বিধাতা তরে ডাকি বারেবারে
করুন মোরে মার্জনা||
দুঃখ সহিতে দিন শক্তি
আপনার সকাসে প্রার্থণা
চাহিনা সহিতে আমার মাটিতে
মজলুমের আর্তনাদ||
বিষাদ অনলে পুড়ে বারেবারে
লুন্ঠিত হবে স্বপ্নস্বাদ
আমি চিৎকার করে কাঁদিতে
চাহিয়া করিতে পারিনি চিৎকার||
বুকের ব্যথা বুকে চাপায়ে
নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার।
কতটুকু অশ্রু গড়ালে হৃদয় জলে সিক্ত,
কত প্রদীপ শিখা জ্বালালেই
জীবন আলোয় ত্রিপ্ত।
কত ব্যথা বুকে চাপালেই
তাকে বলি আমি ধৈর্য,
নির্মমতা কতদূর হলে জাতি হবে নির্লজ্জ।

“কতটুকু অশ্রু গড়ালে হৃদয় জলে সিক্ত” — অশ্রুর হিসাব মাউশির?

এপ্রিল শেষ হতে চলেছে, অথচ এপ্রিলের বেতনের কোনো নিশ্চিত সিদ্ধান্ত নেই। ঈদের আগেই বেতন-বোনাস নাও পেতে পারেন—এমন অস্পষ্ট বার্তা ভেসে বেড়াচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, ইএমআইএস-এর সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট খন্দকার আজিজুর রহমান ডেঙ্গুতে আক্রান্ত—এই একক ঘটনাকেই ই-পে-রোল থমকে যাওয়ার কারণ হিসেবে দেখিয়ে স্থবির করে রাখা হয়েছে গোটা ব্যবস্থা। আর কিভাবে বললে মাউশির কানে পৌছাবে। আর কত অশ্রু ঝড়ালে মাউশির দানবদের হৃদয় সিক্ত হবে।

“একটা মানুষ যে-কোন সময় অসুস্থ হতেই পারে, তাই বলে পুরো সিস্টেম অচল?”
প্রশ্নটা আজ খোলা আকাশে ঝুলে আছে—জবাব নেই, শুধু দেরির যন্ত্রণা।

“কত ব্যথা বুকে চাপালেই তাকে বলি আমি ধৈর্য” — ধৈর্যের গন্ডি ফুরোচ্ছে

মাসের পর মাস বেতনে বিলম্ব। ঘরভাড়া, বাজার-খরচ, সন্তানদের টিউশন ফি—সবই জমে পাহাড়; তবু শিক্ষক-মনের প্রশান্তিকে ‘ধৈর্য’ বলে অভিহিত করা হয়। কিন্তু কবিই তো সাবধান করেছিলেন—

“মানুষের দীর্ঘদিনের চাপা ক্ষোভ একদিন বড় বিদ্রোহের জন্ম দেয়।”

বুকের ব্যাথা, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের মিটিমিটি হাসি কত সহ্য করবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক সমাজ। আর কত ধৈর্য ধরব আমরা সারাজীবন। এদেশে কি ধৈর্য কি শুধু আমাদের ধরতে হবে আজীবন। এভাবে তো একদিন ধৈর্য এর গন্ডি শেষ হয়ে যাবে।

৩. “নির্মমতা কতদূর হলে জাতি হবে নির্লজ্জ” — বৈষম্যের নগ্ন রূপ

সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা নির্ধারিত দিনে বেতন পান; সেখানে এমপিওভুক্তরা বছরের পর বছর ‘লাইনে দাঁড়ানো মানুষ’—অগ্রাধিকারহীন। একই জাতীয় কোষাগার, কিন্তু দু-রকম তরিকা—এ-ই কি ‘নির্মমতার শেষ সীমা’? এটা কোন ধরনের নির্লজ্জতা এদেশের নীতি নির্ধারকদের। যারা নিজেদের পাওনা সকল সময় তো সঠিক সময়ে নিতে তাদের তো কোন ভুল হয় না। তখন তো তাদের নির্লজ্জ দেখায় না যে, আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব আমি সঠিক ভাবে পালন করছি না অথচ সঠিক সময়ে বেতন নিচ্ছি।

৪. “অবুঝ শিশুর অবুঝ প্রশ্ন কি দিয়ে দেব সান্ত্বনা” — শিক্ষকও তো অভিভাবক

উৎসবের নতুন জামা, স্কুল-ফিসের টাকা, অসুস্থ বাবা-মায়ের ওষুধ—সব প্রশ্নের দায় মাথায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের। অথচ উল্টো দিকে মাউশির কক্ষে জমা পড়ে থাকে নীরবতা। মাউশি কখনও বুঝে না বা বোঝার চেষ্টা করে না আমরা যেমন শিক্ষক তেমনি আমাদের পরিবার আছে, আছে তাদের দায়িত্বের বোঝা, আমরা সারাজীবন কিভাবে তাদের সান্ত্বনা দিয়ে সময় পার করব?

৫. এখন কী চাই?—পাঁচ দফা দাবিই চূড়ান্ত সমাধান

  1. বেতন-বোনাসের নির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার—কাজের আগেই তারিখ ঘোষণা ও আইনি বাঁধন।
  2. ব্যাক-আপ সিস্টেম—একজন কর্মকর্তা অসুস্থ হলেই যাতে পুরো পে-রোল থেমে না যায়।
  3. জবাবদিহি ও রিয়েল-টাইম আপডেট—মাউশির ওয়েবসাইটে অগ্রগতি ট্র্যাকার।
  4. সুষম বাজেট বরাদ্দ—পোশাক ও পদভেদে নয়, বাস্তব প্রয়োজন গণনা করে।
  5. শিক্ষক-কর্মচারী ফিডব্যাক প্ল্যাটফর্ম—গোপনীয় অভিযোগ ও পরামর্শ জমা দিয়ে সমাধান ট্র্যাক করার সুযোগ।

৬. শেষে কবির সাথে সুর মিলিয়ে—“দুঃখ সইতে দাও গো শক্তি” নয়, দায়িত্ব পালনের শক্তি দাও

আমরা আর নীরব নই। ‘চিৎকার’ থমকে থাকলেও আজ শব্দহীন লেখনীতে প্রতিবাদের ভাষা খুঁজে পেয়েছে। ইএমআইএস-এর একটি ডেস্কে, মাউশির এক টেবিলে নয়—পুরো ব্যবস্থায় পেশাদার পরিকল্পনা না থাকলে শিক্ষাব্যবস্থাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আমার খবর
© All rights reserved © 2025 Kisukhoner Pathshala
Customized By BlogTheme