অভাগা যেদিকে চায়, সেদিকেই সাগর শুকিয়ে যায়। বাংলায় এই প্রবাদটি এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ক্ষেত্রে অনেকটাংশে সত্য বলে ধরে নেওয়ায় যায়। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের চতুর্থ ধাপে ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা দিতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ৮ হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের পর এই শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ছাড় করা হবে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) একটি সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ছাড়ের অনুমোদন হলে পরবর্তীতে এটি চিফ অ্যাকাউন্টস অফিসারের কার্যালয়ে পাঠানো হবে। এরপর ব্যাংকগুলো টাকা যাবে। তারপর বেতন পাবে ৪র্থ ধাপের শিক্ষক কর্মচারীগণ।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মাউশির সংশ্লিষ্ট শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চতুর্থ ধাপে ৮ হাজার ২৩৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী ইএফটির মাধ্যমে বেতন পাবেন। এর মধ্যে স্কুল পর্যায়ের ৬ হাজার ২০০ এর কিছু বেশি এবং কলেজের এক হাজার ৮০০ এর বেশি শিক্ষক-কর্মচারী বেতন পাবেন। আগামী সপ্তাহে তাদের বেতন ছাড় হতে পারে।’ তারপর তারা ডিসেম্বরের বেতন পাবেন হয়তবা তারপর সামনের আসবে জানুয়ারীর বেতন প্রসংগ।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। তবে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হয়। এই অর্থ তুলতে শিক্ষকদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো। যেটা কিনা যুগের পর ধরে চলে আসছিল এই পদ্ধতিতে কিন্তু কোন দিনও তার সমাধান হয়নি। এবার ভাবা হয়েছিল হয়তবা এই সমস্যার সমাধান হবে কিন্তু হলো কই। আপাদদৃষ্টিতে যা মনে হচ্ছে হবে না।
ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বেতন-ভাতা ছাড়ের জন্য কয়েক পর্যায়ে অনুমোদনসহ সংশ্লিষ্ট কাজে অনেক ক্ষেত্রেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পেতে দেরি হয়। অনেক সময় পরের মাসের ১০ তারিখের পরও আগের মাসের বেতন-ভাতা জোটে। এখন কি তবে মাসের ১ তারিখে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীগণ তাদের বেতন ভাতার টাকা পাবে। দেখা যাক সামনের দিন গুলোতে আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে।
এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। পরবর্তী সময়ে গত ১ জানুয়ারি ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে ৬৭ হাজার এবং তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার ৭০০ শিক্ষক-কর্মচারী ইএফটির মাধ্যমে ডিসেম্বর-২০২৪ মাসের বেতন-ভাতা পেয়েছেন। এখন চতুর্থ ধাপে ৮ হাজার ২৩৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী বেতন পাবেন।
Leave a Reply