বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল উৎসব ভাতা বৃদ্ধি। এ দাবির প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শিক্ষকেদের বেতন ও উৎসব ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তবে কর্মচারীদের বেতন ও ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন….MPO শিক্ষকদের উৎসব ভাতার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রসংগে যা জানালো EMIS সেল
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। যদিও বেতন কত শতাংশ বাড়ানো হবে সে বিষয়ে এখনও নির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা আসেনি, তবে উৎসব ভাতা বর্তমানের মতোই মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে বহাল থাকবে। অর্থাৎ, চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরেও শিক্ষকরা একই হারে উৎসব ভাতা পাবেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, শিক্ষকদের জন্য মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা বহাল রাখা হয়েছে এবং তাদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে বেতন কত শতাংশ বাড়বে, সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। প্রাথমিকভাবে মূল বেতনের ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব বিবেচনায় রয়েছে।
কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ বিভাগের বাজেট শাখার এক কর্মকর্তা জানান, চলতি অর্থবছর বা আসন্ন অর্থবছর—কোনোটিতেই কর্মচারীদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধির কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বেতন বৃদ্ধির ব্যাপারেও এখন পর্যন্ত কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশনা মন্ত্রণালয় থেকে পাওয়া যায়নি। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, কর্মচারীদের বেতন-ভাতায় কোনো পরিবর্তন আসছে না।
এর আগে, গত ১৮ মে শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হবে এবং তাদের ৫ থেকে ৬ বছরের অবসর ও কল্যাণ ভাতার যে বকেয়া রয়েছে, তা পরিশোধ করা হবে। এসব বাস্তবায়নে আগামী বাজেটে পরিচালন ব্যয় বাড়ানো হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “আমি যখন শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি, তখন প্রতিদিন আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি এবং তাদের নানা দাবি-দাওয়া শুনেছি। এসব আলোচনায় উঠে এসেছে, শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চনা ও বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছেন। এ অবস্থার পরিবর্তনে আমরা দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে চাই। শিক্ষাখাতে বিশেষভাবে উন্নয়ন বাজেটে গুরুত্ব দেওয়া হবে। স্কুল পর্যায়ে নানা সমস্যা রয়েছে, যা শিশুদের শিক্ষা প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। এসব সমস্যা সমাধানে বাজেটে পরিচালন ব্যয় বাড়ানো হবে এবং শিক্ষকদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।”
Leave a Reply