সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ঘোষিত বিশেষ আর্থিক সুবিধার পরিমাণ কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। সংশোধিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চাকরিরত সরকারি কর্মচারীরা ন্যূনতম ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং অবসরপ্রাপ্ত পেনশনভোগীরা ন্যূনতম ৭৫০ টাকা বিশেষ ভাতা পাবেন।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের বাজেট ঘোষণার পরদিন অর্থাৎ ৩ জুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল, সেটিতে সংশোধন আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পৃথক একটি সংশোধিত আদেশ শিগগিরই জারি করা হবে। এই প্রস্তাব আজ রোববার (২২ জুন) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন পেয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ আজ বিকেলে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করে। এর আগে সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার জানান, প্রাথমিকভাবে চাকরিজীবীদের জন্য ন্যূনতম ১ হাজার টাকা ও পেনশনভোগীদের জন্য ৫০০ টাকা বিশেষ ভাতা নির্ধারণের কথা বলা হলেও, সংশোধিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেই পরিমাণ বাড়িয়ে যথাক্রমে ১ হাজার ৫০০ ও ৭৫০ টাকা করা হয়েছে।
বাজেট ঘোষণার আগে সরকারি কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করে কাজ চলছিল। তবে পরবর্তীতে মহার্ঘ ভাতার পরিবর্তে ‘বিশেষ সুবিধা’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “২০১৫ সালের পর বেতন কাঠামো পুনর্নির্ধারণ না হওয়ায় এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বৃদ্ধির প্রস্তাব রাখা হয়েছে।”
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, ১ জুলাই ২০২৫ থেকে গ্রেড-১ থেকে গ্রেড-৯ পর্যন্ত কর্মচারীদের ১০ শতাংশ এবং গ্রেড-১০ থেকে গ্রেড-২০ পর্যন্ত কর্মচারীদের ১৫ শতাংশ হারে বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হবে। এই সুবিধা জাতীয় বেতন স্কিমের আওতাভুক্ত বেসামরিক সরকারি কর্মচারী, স্বশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বিমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিজিবি ও পুলিশ বাহিনীর কর্মচারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। একইসঙ্গে, পুনঃস্থাপনকৃত পেনশনভোগীরাও এই বিশেষ সুবিধার আওতায় আসবেন।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, অবসরোত্তর ছুটিতে (PRL) থাকা কর্মচারীরা সর্বশেষ মূল বেতনের ভিত্তিতে তাদের গ্রেড অনুযায়ী বিশেষ সুবিধা পাবেন। পেনশনভোগী যারা পেনশন পুনঃস্থাপনের জন্য উপযুক্ত, তারাও পেনশনের প্রযোজ্য অংশের উপর নির্ধারিত হারে ভাতা পাবেন। তবে যেসব কর্মচারী শতভাগ পেনশন সমর্পণ করে এককালীন আনুতোষিক গ্রহণ করেছেন এবং পুনঃস্থাপনের যোগ্য নন, তাঁদের জন্য এ সুবিধা প্রযোজ্য হবে না। একইসঙ্গে, যারা বিনা বেতনে ছুটিতে রয়েছেন, তারাও এই সুবিধা থেকে বাদ পড়বেন।
এদিন অর্থ বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, সামাজিক সুরক্ষা খাতে অতিরিক্ত ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। এর ফলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এই খাতে মোট বরাদ্দ দাঁড়িয়েছে ৯১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা। এই বরাদ্দের মধ্যে অবসর ভাতা ও সঞ্চয়পত্রের সুদ অন্তর্ভুক্ত নয়। আগের অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ৯০ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকা।
Leave a Reply