পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) সংস্কার করে একটি পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা কমিশন হিসেবে গড়ে তোলার প্রস্তাব বিবেচনায় রয়েছে। বিষয়টি সরকারের আলোচনায় আছে, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।
শুক্রবার (২ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত ‘ডিইউ রিসার্চ এক্সিলেন্স রিকগনিশন ২০২৫’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. মাহমুদ বলেন,
“দেশে গবেষণায় প্রয়োজনীয় উপকরণ ও অবকাঠামোর ঘাটতি রয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠানে কিছু সুবিধা আছে, অন্যটিতে নেই। ইউজিসির মাধ্যমে যদি একটি গবেষণা-নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যায়, তাহলে দেশের বিদ্যমান গবেষণাগারের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”
তিনি আরও বলেন,
“বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মূলত স্নাতক পর্যায়ের পাঠদানে সীমাবদ্ধ। পোস্ট-ডক গবেষণাসহ উচ্চতর গবেষণার সুযোগ নেই বললেই চলে। আমাদের গবেষণাবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে অগ্রসর হতে হবে।”
এসডিজি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশে পেটেন্ট রাইটস বাধ্যতামূলক হবে, যা বিশেষ করে ওষুধ শিল্পে বহুজাতিক কোম্পানির আধিপত্যকে আরও জোরদার করতে পারে— এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
“আমরা যদি নিজস্ব অর্থায়নে গবেষণা করি এবং নিজস্ব পেটেন্ট তৈরি করতে পারি, তবে আমরাও একদিন পেটেন্ট রপ্তানি করতে পারবো। আমাদের মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিও গড়ে উঠতে পারে,” — বলেন ড. মাহমুদ।
এর আগে শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল সংবাদমাধ্যম দৈনিক শিক্ষাডটকম-এর ফেসবুক লাইভে সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন শিক্ষা খাতে স্থায়ী কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন।
তিনি বলেন,
“শুধু সংস্কার নয়, একটি স্বাধীন ও স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে, যা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমান্তরালভাবে কাজ করবে।”
তার মতে,
নিউজিল্যান্ডের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন,
“সেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি একটি আলাদা প্রহরী সংস্থা কাজ করে, যারা মন্ত্রণালয়কে পরামর্শ দেয় এবং রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি প্রতিবেদন দিতে পারে।”
ড. মিলন মন্তব্য করেন,
“নতুন মন্ত্রী আসলেই নতুন পরিকল্পনা আসে, যা শিক্ষার ধারাবাহিকতাকে ব্যাহত করে। শিক্ষা এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও স্থিরতা অপরিহার্য।”
তিনি বলেন,
“এই কমিশন কেউ রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে পারবে না। এটি হতে হবে এমন একটি প্রতিষ্ঠান যা কারিকুলাম, পরীক্ষা পদ্ধতি, কারিগরি শিক্ষাসহ শিক্ষাব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নেবে।”
Leave a Reply