বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বদলি কার্যক্রম চালু করতে নতুন করে সফটওয়্যার তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বুধবার (৮ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) দুটি শাখার উপ-পরিচালক এবং ইএমআইএস সেলের কর্মকর্তাদের মধ্যে এ বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপস্থিত একজন কর্মকর্তা জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বদলির সফটওয়্যার নতুনভাবে তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী কোন সংস্থার মাধ্যমে সফটওয়্যার তৈরি করা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটুআই (a2i) অথবা টেলিটককে দায়িত্ব দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আগামী সপ্তাহে তাদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠিয়ে আলোচনায় বসা হবে। তারা আগ্রহ দেখালে সফটওয়্যার তৈরির কাজ তাদের যেকোনো একটির মাধ্যমে করা হবে। তবে যদি তারা রাজি না হয়, সেক্ষেত্রে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ভেন্ডর নির্বাচন করা হবে।
তবে এ বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে—এর আগে মাউশির তৎকালীন মহাপরিচালক প্রফেসর আজাদ খান এটুআইকে সফটওয়্যার তৈরির দায়িত্ব দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন, সেটির অগ্রগতি কী হলো? জবাবে এক কর্মকর্তা জানান, প্রফেসর আজাদ খান ইতোমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন, তাই তাঁর ব্যক্তিগত বক্তব্য নিয়ে মন্তব্য করার কিছু নেই। আজকের সভায় মূলত নতুন উদ্যোগ নিয়েই আলোচনা হয়েছে।
শিক্ষা প্রশাসনের একাধিক সূত্র জানায়, বেসরকারি শিক্ষক বদলি কার্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তি-নির্ভর স্বচ্ছ ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ আগেই নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সফটওয়্যারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান ও মাউশির মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। ফলে পরিকল্পনা অনুযায়ী বদলি কার্যক্রম শুরু করা যায়নি।
মাউশি ও সফটওয়্যার ভেন্ডর—দুই পক্ষই নিজ নিজ নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চাইছে। এই মতপার্থক্যের কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন করে সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সফটওয়্যার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে বদলির অপেক্ষায় থাকা প্রায় লক্ষাধিক এনটিআরসিএ সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষককে আরও অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে হচ্ছে।
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে—কবে নাগাদ সফটওয়্যার তৈরি সম্পন্ন হবে এবং কবে থেকে বদলি কার্যক্রম শুরু হবে? শিক্ষকদের দীর্ঘ প্রতীক্ষা যে এখনও অবসান হচ্ছে না, তা এক প্রকার নিশ্চিত।
Leave a Reply