উৎসব যখন আসে বা উৎসবের সময় যখন ঘনিয়ে আসে তখন সবার মনে একটা অনুভুতি কাজ করে আর তাহলো আনন্দের অনুভূতি এবং সুখের অনুভুতি। একমাত্র ব্যাতিক্রম হলো এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা। আমাদের উৎসব আসলেই শুরু হয় নানা ধরনের টেনশন নানা ধরনের উদ্বেগ। প্রথম উদ্বেগ এই অল্প পরিমাণ উৎসব ভাতা দিয়ে তো আর প্রয়োজন মিটবে না সে ঈদুল ফিতরে হোক বা ঈদুল আযহাতে হোক। একজন সহকারী শিক্ষক সে সিনিয়র হোক আর জুনিয়র এন্টি লেভেলের টিচার হোক ৩১২৫টাকা থেকে শুরু করে ৮ হাজার টাকা দিয়ে উৎসবের কোন চাহিদা মিটবে কেউ কি বলতে পারেন। এ তো গেল এক সমস্যা, সমস্যা আরও রয়েছে….
এরপর যে সমস্যা সামনে আসে তা হলো সময় মতো বেতন বোনাস পাওয়া যাবে তো? এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ও ভিক্ষার সমপরিমাণ বোনাস যা দেওয়া হয় তা নিয়ে আবার কোটিপতি আমলাদের সুদের ব্যবসা। যার কারণে শিক্ষক কর্মচারীদের নিকট কখনও বা আসে ঈদের দুই একদিন আগে অথবা ঈদের ছুুটির পরে। সবাই আশায় বুক বেঁধেছিল যে, ইএফটি চালু হলে হয়ত আর সেই অবস্থা থাকবে না। ইএফটি চালু হওয়ার পর আমাদের বেতন ও ভাতা সময় মতো আমাদের হাতে পৌছাবে কিন্তু বাস্তবে তার ছিটেফোটাও হয়নি। ইএফটি চালূ হওয়ার পরও বেতন প্রাপ্তির গুণগত পরিবর্তন বলতে কিছুই হয়নি। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে সমস্য আরও বেড়েছে বৈ কমেনি।
আরও পড়ুন…….ইএফটির তথ্য সংশোধনের সর্বশেষ আপডেট।
এখন আসি আসল প্রসংগে বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টার বয়ান মোতাবেক আগামী ঈদুল আযহা থেকে উৎসব ভাতা বৃদ্ধি পাওয়ার কথা সেই মোতাবেক অর্থ মন্ত্রণালয় নকি কাজও করছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো আমাদের উৎসব ভাতা কি পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে? যদি তা ১০০% করা না হয় তাহলে কিন্তু সমস্যা কাটবে না বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়বে। কোন কোন ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়বে সেই আলোচনা আমি এখানে বা আজকে করব না। আজ আমি যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করব তা হলো উৎসব ভাতা কি পরিমাণ বাড়তে পারে তা নিয়ে এবং বৃদ্ধি যদি আমাদের কাঙ্খিত না হয় তাহলে কি করলে কাঙ্খিত পরিমাণ বৃদ্ধি করা যেতে পারে সেই উপায় নিয়ে।
১ম উপায়ঃ ১ম উপায় অলরেডি গত হয়ে গেছে সেই সুযোগ আমরা হেলায় হারিয়েছি। আমার মনে হয় আপনারা বুঝতে পেরেছেন আমি কি বলতে চাইছি? গত বাইশ দিনের আন্দোলনে আমাদের সামনে সুযোগ ছিল পরিপূর্ণ পরিস্কার ঘোষণা নিয়ে আন্দোলনের মাঠ ত্যাগ করার। তারজন্য আমাদের যা করতে হতো তাহল আন্দোলনের মাঠে ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার শিক্ষক কর্মচারীর তাহলেই আমরা আমাদের কোন ভাতা কি পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে তার সুস্পষ্ট ঘোষণা নিয়ে আসতে পারতাম। আফসোস আমরা সেটা পারিনি আমাদের স্বার্থপরতার কারণে।
৩য় উপায়ঃ কুটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করা। যদিও এভাবে আমাদের কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতো পারব কিনা সেটা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কেননা কুটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হলে যে ধরনের নেতৃত্ব দরকার সে ধরনের নেতৃত্বে বড়ই অভাব রয়েছে আমাদের এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীর মধ্যে। আমাদের নেতার অভাব নেই, আমাদের সংগঠনের অভাব নেই। আমাদের সংগঠনের সংখ্যা ৬২টি। কিন্তু কাজ উদ্ধার করার মত সংগঠন খুঁজে পাওয়া মুশকিল। অধিকাংশ সংগঠনের নেতাদের ব্যাপারে বলতে লজ্জা লাগে শুদ্ধ ভাষায় মিডিয়ার সামনে কথা বলতে পারে না। তারা কিভাবে কুটনৈতিক তৎপরতা দিয়ে দাবি আদায় করবে। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের নিজের মধ্যেই কোন প্রকারের ঐক্য নেই। তারপরও বলব দাবি আদায়ের একটি অন্যতম কৌশল হলো কুটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি করা।
৪র্থ উপায়ঃ সরকারের উচ্চ মহলে আমাদের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরা যদি সেটা সম্ভব হয় তাহলে কিন্তু সম্ভব। কিন্তু এখন অবধি এ কাজে আমরা সফল হতে পারি নাই। আমরা যদি এ কাজটা করতে পারি তাহলে আমাদের দাবি পুরণ হবে।
যাই হোক আমি এখানে মাত্র কয়েকটি উপায়ের কথা বলেছি মাত্র আমার বিশ্বাস আপনারা ভাবলেও আমার চেয়েও ভাল ভাল উপায় বের করতে পারবেন। কিন্তু সেই উপায়গুলো সঠিক সময়ে বের করে সেটা নিয়ে যদি সময়মতো না সামনের দিকে যেতে না পারেন তাহলে কিন্তু আমাদের আমলাদের যড়যন্ত্রের কবলে পড়বেন নিশ্চিত। এবং তারা দয়া করে যতটুকু আমাদের হাতে ধরিয়ে দিবে আমরা ততটুকু নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে এটা নিশ্চিত। সেই বৃদ্ধি বড় জোড় ৫০% হতে পারে এর বেশি নয় নিশ্চিত।
[…] […]
এমপিও শিক্ষক/কর্চারীদের বোনাস? সবকিছুই সরকার ও আমলাদের কুটচাল