জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করতে হলে কিছু নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। যদি কোনো ভুল বা ভুল তথ্য (যেমন নাম, জন্মতারিখ, পিতার নাম, মা’র নাম, ঠিকানা ইত্যাদি) জন্ম নিবন্ধনে থাকে, তবে সেই ভুল সংশোধন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে হয়। বাংলাদেশে জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য প্রধানত স্থানীয় পৌরসভা/ইউনিয়ন পরিষদ বা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
এখানে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার ধাপগুলোর একটি বিস্তারিত তালিকা দেওয়া হলো:
১. সংশোধনের কারণ জানিয়ে আবেদন করা:
- প্রথমে, সংশোধন করতে চাওয়া তথ্যের ভুল বা অপ্রত্যাশিত অংশ সম্পর্কে একটি অফিসিয়াল আবেদন করতে হবে।
- আবেদনটি সঠিকভাবে এবং স্পষ্টভাবে লিখতে হবে, যাতে সংশোধন করতে চাওয়া তথ্য সঠিকভাবে নির্দিষ্ট করা যায়।
২. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করা:
- সংশোধনের আবেদন করার জন্য কিছু প্রমাণপত্র বা কাগজপত্র প্রয়োজন হবে। সাধারণত নিচের কাগজপত্রগুলো প্রয়োজন হতে পারে:
- অভিভাবকের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)
- জন্ম নিবন্ধন সনদপত্রের কপি
- যে তথ্য সংশোধন করতে চান, তার জন্য প্রমাণ (যেমন: স্কুল সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট, হসপিটাল বিল ইত্যাদি)
- মেমোরেন্ডাম/ডকুমেন্ট (যদি প্রয়োজন হয়)
৩. সংশোধনের জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা:
- সংশোধনের আবেদনটি স্থানীয় পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ বা সিটি করপোরেশন অফিসে জমা দিতে হবে।
যদি কোন সংশোধন প্রক্রিয়া আন্তঃনগর বা জাতীয় স্তরে হয়ে থাকে, তবে সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রার অফিস বা জাতীয় জন্ম নিবন্ধন তথ্যকেন্দ্র (NIDW) এর মাধ্যমে সংশোধনের জন্য আবেদন করতে হবে।
৪. তথ্য যাচাই:
- আবেদনটি জমা দেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তথ্য যাচাই করবে। এটি হতে পারে আপনার দেয়া প্রমাণপত্র বা অফিসিয়াল রেকর্ড এর মাধ্যমে যাচাই।
- যদি প্রয়োজন হয়, তারা উক্ত তথ্য সংশোধন করার জন্য সাক্ষী বা অতিরিক্ত ডকুমেন্টের প্রয়োজন হতে পারে।
৫. সংশোধন কাজের সম্পন্ন হওয়া:
- সমস্ত যাচাই-বাছাই সম্পন্ন হলে সংশোধনের কাজ শুরু হবে। সংশোধন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর সংশোধিত জন্ম নিবন্ধন সনদপত্র প্রদান করা হবে।
- সংশোধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কিছু সময় (সাধারণত ৭-১৫ কার্যদিবস) লাগতে পারে।
৬. সংশোধন সনদ গ্রহণ করা:
- সংশোধিত জন্ম নিবন্ধন সনদ আপনার হাতে এসে পৌঁছাবে। আপনি সংশোধনকৃত তথ্য দেখে নিশ্চিত হয়ে এটি গ্রহণ করবেন।
৭. ফি প্রদান:
- জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য সাধারণত কিছু ফি নেওয়া হয়। এটি আপনার স্থানীয় পৌরসভা বা ইউনিয়ন অফিস এর নির্ধারিত ফি হতে পারে।
যেসব কারণে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করা হতে পারে:
- নাম সংশোধন: ভুল নাম লেখা।
- জন্মতারিখ সংশোধন: ভুল জন্ম তারিখ বা বছর লেখা।
- পিতার বা মায়ের নাম সংশোধন: ভুলভাবে পিতা/মাতার নাম লেখা।
- ঠিকানা সংশোধন: নিবন্ধনে ভুল ঠিকানা লেখা।
- লিঙ্গ সংশোধন: যদি ভুলভাবে লিঙ্গ (পুরুষ/মহিলা) লেখা হয়ে থাকে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট:
- জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া কখনও কখনও সময়সাপেক্ষ হতে পারে, তাই ধৈর্য সহকারে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন।
- যদি সংশোধন প্রক্রিয়া দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে স্থানীয় অফিস বা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন।
এটি আপনার তথ্য সংশোধন প্রক্রিয়া পরিচালনায় সহায়ক হতে পারে।
Post Views: 149
Leave a Reply