1. admin@kp-nat.com : admin : Ayub Ali
  2. ayub.bhs@gmail.com : Ayub ali : Ayub ali
বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ০৩:২৪ অপরাহ্ন
Title :
সরকারী চাকুরীজীবিদের প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধা ও এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধা। আন্দোলনে সকলের প্রাপ্তির খাতা ভরা, কেবল এমপিওভুক্ত শিক্ষক ছাড়া। কিন্তু কেন? নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন নিয়ে যা জানালো মাউশি। সরকারী শিক্ষক কর্মচারী বনাম এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারী! এ কেমন বৈষম্য? এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ফেব্রুয়ারির বেতন ও বোনাস নিয়ে মাউশির আশ্বাস। ইএফটির ৫ম ধাপের শিক্ষক কর্মচারীর বেতনের খবর। সংশোধনের পরিপূর্ণ নির্দেশিকা ১০০% Authentic. এই এডিট অপশন কতটুকু সাহায্য করবে সংশোধনীর জন্য? সংশোধন কিন্তু সবার লাগবে তবে…… এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারী সুযোগ সুবিধা কতটুুকু বাড়ছে?

দুই বাংলা বিভক্ত কেন?

  • Update Time : শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ২৫ Time View

বাংলার বিভক্তি ও তার পেছনের কারণগুলো বিশদে ব্যাখ্যা করতে গেলে আমাদের ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায় এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে আলাদা আলাদা করে বিশ্লেষণ করতে হবে।


প্রথম বিভাজন: ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ

বঙ্গভঙ্গ ব্রিটিশ ভারতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যেখানে প্রথমবারের মতো বাংলা প্রদেশকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়।

প্রেক্ষাপট ও কারণ

  1. প্রশাসনিক জটিলতা:
    • ব্রিটিশ ভারতীয় শাসনে বাংলা ছিল সবচেয়ে জনবহুল এবং ভৌগোলিকভাবে বড় প্রদেশ।
    • এই বিশাল প্রদেশ শাসন করা ব্রিটিশদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছিল।
    • ব্রিটিশ সরকার দাবি করে, প্রশাসনিক সুবিধার জন্য বাংলাকে ভাগ করা জরুরি।
  2. ব্রিটিশ কৌশল – “Divide and Rule”:
    • ব্রিটিশরা জানত, হিন্দু-মুসলিম একত্রে আন্দোলন করলে তাদের শাসন টেকানো কঠিন হবে। তাই তারা ধর্মীয় বিভাজনের মাধ্যমে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়াতে চেয়েছিল।
    • পূর্ব বাংলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের সংখ্যা বেশি ছিল, যেখানে পশ্চিম বাংলায় হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। ব্রিটিশরা এই ব্যবধানকে কাজে লাগিয়ে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি করেছিল।
  3. অর্থনৈতিক কারণে বিভাজন:
    • পূর্ব বাংলা অর্থনৈতিকভাবে পশ্চাৎপদ ছিল। ঢাকাকে প্রশাসনিক কেন্দ্র করে একটি আলাদা প্রদেশ গঠন করলে, ব্রিটিশরা দাবি করে, পূর্ব বাংলার উন্নয়ন দ্রুত হবে।

ফলাফল

  • বঙ্গভঙ্গের ফলে বাংলা দুই ভাগে ভাগ হয়:
    1. পূর্ব বাংলা ও আসাম প্রদেশ (ঢাকা রাজধানী) – মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল।
    2. পশ্চিম বাংলা (কলকাতা রাজধানী) – হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল।
  • এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হিন্দু সম্প্রদায়ের তীব্র আন্দোলন শুরু হয়। কারণ:
    • কলকাতার বণিক সমাজ বঙ্গভঙ্গের ফলে ব্যবসায়িক সুবিধা হারানোর আশঙ্কা করে।
    • বাংলার হিন্দু সম্প্রদায় এটি তাদের সংস্কৃতির উপর আঘাত হিসেবে দেখে।
  • বিপুল আন্দোলনের ফলে বঙ্গভঙ্গ ১৯১১ সালে বাতিল করা হয়।

দ্বিতীয় বিভাজন: ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান বিভক্তি

প্রেক্ষাপট

১৯৪৭ সালে ভারত উপমহাদেশ বিভক্ত হয়ে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুটি পৃথক রাষ্ট্র গঠিত হয়। এর মধ্যে বাংলা পুনরায় বিভক্ত হয়ে পশ্চিম বাংলা ভারতের অংশ এবং পূর্ব বাংলা (পূর্ব পাকিস্তান) পাকিস্তানের অংশ হয়।

কারণসমূহ

  1. ধর্মীয় বিভাজন:
    • ১৯৪০ সালে মুসলিম লীগ “লাহোর প্রস্তাব”-এ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলো নিয়ে আলাদা রাষ্ট্র পাকিস্তান গঠনের দাবি তোলে।
    • ধর্মকে ভিত্তি করে দুটি পৃথক রাষ্ট্র গঠনের দাবিতে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে পার্থক্য আরও তীব্র হয়ে ওঠে।
  2. রাজনৈতিক চাপ:
    • মুসলিম লীগ এবং কংগ্রেসের মধ্যে মতবিরোধ।
    • ব্রিটিশ সরকার ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য দ্রুত সমাধানের পথে হাঁটে এবং দ্বিজাতি তত্ত্ব (Two-Nation Theory) মেনে নেয়।
  3. র‍্যাডক্লিফ লাইন ও সীমান্ত নির্ধারণ:
    • স্যার সাইরিল র‍্যাডক্লিফ সীমান্ত নির্ধারণের দায়িত্ব পান।
    • বাংলার বিভাজন হিন্দু-মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলোর ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।
    • পশ্চিম বাংলা ভারতের অংশ হয়, আর পূর্ব বাংলা হয় পাকিস্তানের পূর্ব অংশ।

বিভক্তির প্রভাব

  1. ধর্মীয় সংকট:
    • বিভাজন মূলত ধর্মের ভিত্তিতে হওয়ায় দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্বেষ বেড়ে যায়।
    • অনেক মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে হিন্দু ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হয়, যা ব্যাপক সহিংসতার সৃষ্টি করে।
  2. সাংস্কৃতিক বিভাজন:
    • একই ভাষা-বর্ণ-সংস্কৃতির লোক হলেও, দুই রাষ্ট্রের মধ্যে রাজনৈতিক সীমারেখা তৈরি হয়।
    • পশ্চিম বাংলা ভারতীয় সংস্কৃতির একটি অংশ হয়ে ওঠে, যেখানে পূর্ব বাংলা পাকিস্তানের শাসনে মুসলিম সাংস্কৃতির দিকে ধাবিত হয়।
  3. বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূচনা:
    • পূর্ব বাংলার প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের বৈষম্যমূলক আচরণ দীর্ঘদিন ধরে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি করে।
    • এর পরিণতিতে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে পূর্ব বাংলা বাংলাদেশ হিসেবে স্বাধীন রাষ্ট্র হয়ে ওঠে।

দুই বাংলার বিভাজনের প্রভাব – আজকের প্রেক্ষাপটে

  1. রাজনৈতিক প্রভাব:
    • পশ্চিম বাংলা ও বাংলাদেশ দুটি স্বাধীন প্রশাসনিক এবং রাষ্ট্রীয় কাঠামোর অংশ।
    • দুটি বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চল হলেও তাদের অভিন্ন প্রশাসনিক লক্ষ্য নেই।
  2. সাংস্কৃতিক সংযোগ ও পার্থক্য:
    • দুই বাংলার সাহিত্য, সঙ্গীত, এবং ঐতিহ্যের মধ্যে অনেক মিল থাকলেও, পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে দুই পক্ষের নিজস্ব রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক প্রবাহ তৈরি হয়েছে।
  3. অর্থনৈতিক প্রভাব:
    • বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে নিজস্ব অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তুলেছে, যেখানে পশ্চিম বাংলা ভারতের বৃহত্তর অর্থনীতির অংশ।

উপসংহার

বাংলার বিভাজন ছিল একদিকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক নীতির কূটকৌশল এবং অন্যদিকে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার প্রতিফলন। বিভাজন কেবল একটি ভৌগোলিক ভাগ নয়, বরং এটি ছিল মানুষের জীবনে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও মানসিক এক বিশাল পরিবর্তন। তবে ভাষা এবং সংস্কৃতি এখনও দুই বাংলাকে ঐতিহ্যের এক অভিন্ন সুতায় বেঁধে রেখেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আমার খবর
© All rights reserved © 2025 Kisukhoner Pathshala
Customized By BlogTheme