এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের উৎসব ভাতা দ্বিগুণের সিদ্ধান্ত, ব্যয় বাড়বে ২২৯ কোটি টাকা
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের উৎসব ভাতা মূল বেতনের ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে এখানে অত্যন্ত অমানবিক একটা বিষয় ঘটতে চলেছে যা তা হল, এমপিওভুক্ত ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের উৎসব ভাতার প্রাপ্যতার কোন পরিবর্তন হচ্ছে না। কারণ হিসাবে যা বোঝা যাচ্ছে তা হল যেহেতু তারা শুরু থেকেই ৫০% উৎসব ভাতা পেয়ে আসছে এবং এর সাথে সরকারের অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার একটি প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আসন্ন ঈদুল আজহায় এই নতুন হারে বোনাস দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
বর্তমানে দেশের ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৬৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী এমপিও স্কিমের আওতায় রয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের তথ্যমতে, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ২২৯ কোটি টাকা। বাজেটের অতিরিক্ত চাপ এড়াতে এই অর্থ নতুনভাবে বরাদ্দ দিতে হবে না , চলতি অর্থবছরের বাজেটে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অব্যবহৃত বিভিন্ন খাত থেকে সরবরাহ করার নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ বিভাগ। অর্থবিভাগের এই যুক্তিতেই এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধি করছে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ শুধু যদি এমপিওভুক্ত শিক্ষকের উৎসব ভাতা বাড়ানো হয় তাহলে যে পরিমাণ ব্যয় দরকার তা এমপিও স্কীমের অব্যবহৃত অর্থ হতে সংকুলান হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যদি এর সাথে কর্মচারীদের যুক্ত করা যায় তাহলে নতুন বরাদ্দের প্রয়োজন হবে। যে ঝুকি অর্থ মন্ত্রণালয় নিতে চাইছে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২১ এপ্রিল অর্থ সচিব খায়রুজ্জামান মজুমদারকে পাঠানো এক চিঠিতে উৎসব ভাতা ৫০ শতাংশে উন্নীত করার অনুরোধ জানায়। চিঠিতে বলা হয়, চলতি বাজেটে নতুন স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ রাখা ৫০ কোটি টাকা এবং সরকারিকরণ হওয়া প্রতিষ্ঠানের কারণে সাশ্রয় হওয়া ১৭৯ কোটি টাকা মিলিয়ে মোট ২২৯ কোটি টাকা ব্যয় করা সম্ভব। যা দিয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়তি প্রদানকৃত অর্থ প্রদান করা সম্ভব কিন্তু এখানে যদি এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের যুক্ত করা যায় তাহলে নতুন করে বরাদ্দ লাগবে।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ১৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটির সভায় এই প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
বর্তমানে অর্থ উপদেষ্টা ও অর্থসচিব বিদেশে অবস্থান করায় তাদের মতামত জানা সম্ভব হয়নি। তবে অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, যেহেতু বিদ্যমান বাজেট থেকেই অর্থ জোগান দেওয়া যাবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে, তাই বিভাগ বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখছে। তাদের দেশে ফেরার পর, আগামী ২৯ এপ্রিলের মধ্যে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ ২৯ এপ্রিলের পর যে কোন দিন বিশেষ করে মে মাসের ৫ থেকে ১০ তারিখের মধ্যেই চুড়ান্ত অনুমোদন বা প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী, চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৭ জুন বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হতে পারে। সেক্ষেত্রে যদি মাউশি নুতন কোন জটিলতা তৈরি না করে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ঈদুল আযহার বোনাস ঈদের পূর্বে পেতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
Leave a Reply