বাংলাদেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা এদেশের শিক্ষার অগ্রসরতার ব্যাপারে কি ভুমিকা পালন করে, কতটুক ভুমিকা পালন করে তার হিসাব নতুন করে দেখানোর কোন দরকার কারও কাছে আছে বলে মনে হয় না। এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ভুমিকা যদি এদেশের সরকার ও আমলারা বিন্দু মাত্র মুল্যায়ন করত তাহলে আজ এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক কর্মচারীদের দুর্দশা এত করুন হতো না।
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ভুমিকা ৯৭%-৯৮%। সেটা এদেশের সরকারও শিকার করবে। তেমনি এদেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের যদি কোন ছোট খাটো বিষয় আলোচনা হয় তাহলে সেটাও এদেশের ৯৭%-৯৮% মানুষের দৃষ্টিগোচর হয়। তার জীবন্ত উদাহারণ হলো এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ইএফটি বাস্তবায়নের বিষয়টি। বাংলাদেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদেরও তো ইএফটিতে বেতন প্রদান শুরু হয়েছে কিন্তু কেউ বলতে পারবেন এভাবে মিডিয়ায় আলোচনা হয়েছে। যেভাবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ইএফটির নামে হয়রানি করা হচ্ছে এখনও পর্যন্ত তার আর কোন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের হতে হয়নি।
আরও পড়ুন…….এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধি সম্পর্কে যে তথ্য দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বর্তমানে বেশ কিছু দিন থেকে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের উৎসব ভাতা প্রদানের বিষয়টি। যেখানে সরকারী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা তাদের মুল বেতনের ১০০% হারে উৎসব ভাতা পেয়ে থাকে সেখানে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীরা উৎসব ভাতা পায় মুল বেতনের ২৫% ও ৫০% এই পরিমাণ ভাতা কিন্তু এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা যে তাদের এই ব্যবস্থা শুরুর কাল থেকে পেয়ে আসছে এমন কিন্তু নয়। এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা উৎসব ভাতা পেয়ে আসছে বিগত ২০০৪ সাল থেকে সম্ভবত। অর্থাৎ বিগত ২১ বছর থেকে এমপিওভুক্ত একজন শিক্ষক কর্মচারীরা ২৫ ও ৫০% হারে উৎসব ভাতা পেয়ে আসছে। যার এতটুকু পরিবর্তন এতদিনে হয় নি।
বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর হতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা তাদের দীর্ঘদিনের দাবি উৎসব ভাতা ও অন্যান্য ভাতার বৈষম্য দুরীকরনের জন্য তাদের দারস্থ হন। সেই দাবিগুলো আদায়ে ক্রমাগত শিক্ষক কর্মচারীদের চাপ ও চাওয়ার প্রতি সম্মান জানিয়ে বর্তমান সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেন তার অংশ হিসাবে প্রথমে বর্তমান বাজেট হতে আগামী ঈদুল আযহার পূর্বে উৎসব ভাতার বৈষম্য দুরীকরণের জন্য বর্তমান সরকার প্রতিশ্রুতি দেন এবং অন্যান্য ভাতা গুলো আগামী বাজেট হতে ক্রমান্বয়ে পুরণ করা হবে বলে জানান যা আমরা সকলেই কমবেশি জানি।
এখন সামনে ঈদুল আযহা এগিয়ে আসছে বিধায় উৎসব ভাতার বিষয়টি দিন দিন সামনে চলে আসছে তারই ধারাবাহিকতায় আজ ২১-০৪-২৫ইং তারিখে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে এ মাসের শেষে অথবা আগামী মাসের প্রথমার্ধে উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে কিন্তু কি পরিমাণ বৃদ্ধি করা হবে তা এখনও ধোয়াশার মধ্যে রেখেছে। বিভিন্ন বিষয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের কাজ দেরি করানো মাউশি ও মন্ত্রণালয়ের যেন এক স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা সকল সময় অযথা অকারণে সময়ক্ষেপন করে শেষ মূহুর্তে কাজের প্রস্তুতি শুরু করবে আর বলবে যে আজ কাল পরশুর মধ্যে বা দ্রুততর সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ যেন প্রতি মাসেই একই নাটকের পূর্ণমঞ্চায়ন এবং সকল নাটকের শেষ দৃশ্যগুলো যেন একই রকম।
এভাবে সময়ক্ষেপন করা এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়ে দাঁড়িয়েছে মাউশি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। কারণ হিসাবে যা বোঝা যায় তা হলো শেষ সময়ে এসে প্রকাশ করলে তা নিয়ে কিন্তু কেউ তেমন বেশি কথা বা প্রতিবাদ করতে পারবেনা এই কুটনীতির আশ্রয় নিয়েছে মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় থেকে যতেই বলা হোক আগামী মাসের প্রথমার্ধের মধ্যেই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বাস্তবে তা হবে বলে মনে হয় না। বাস্তবে প্রজ্ঞাপন জারি করতে করতে ২০ তারিখের আশেপাশের সময় প্রজ্ঞাপন জারি হবে মিলিয়ে নিয়েন আমার কথা। ঐ সময় প্রজ্ঞাপন জারি করলে খুব বেশি প্রতিবাদ করার সময় পাবে না শিক্ষক কর্মচারীরা। ঠিক এই কারণে বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপনের এই নাটক শুরু করেছে মন্ত্রণালয়।
এখন আমাদের সামনে নাটকের শুটিং দেখা ছাড়া আর কোন উপায় নাই। কারণ আমরা ঐক্যবদ্ধ না। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হতাম তাহলে আমাদের নিয়ে তৈরি নাটক এভাবে বার বার রিশ্যুট হতো না যা হতো মঞ্চনাটকের মতো আমরা সরাসরি উপভোগ করতে পারতাম।
পরিশেষে যে কথা বলব তা হলো আজ থেকে নতুন করে আবার নতুন নাটক দেখার অপেক্ষায় প্রহর গণনার সময় শুরু হলো এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য।
আরও জানতে এখানে ক্লিক করুন
Leave a Reply