বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আসন ঈদুল আজহার পূর্বেই তাদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন যে কোন সময় জারি করা হতে পারে বলে জানা গেছে। যদিও সঠিক দিন তারিখে প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (২১ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন…..শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প (সেসিপ) এর মেয়াদ বৃদ্ধি।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক-১) সাইয়েদ এ. জেড. মোরশেদ আলী বলেন, ‘শিক্ষকদের উৎসব ভাতা বাড়ানো হচ্ছে এটা নিশ্চিত তবে কতটুকু বাড়বে সে বিষয়ে এখনই নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব হচ্ছে না। সময়মত বিশেষ করা যখন প্র্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা হবে তখন বিষয়টি সকলের মাঝে পরিস্কার হয়ে যাবে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, ‘শিক্ষকরা মূল বেতনের ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা পান। তারা শতভাগ উৎসব ভাতা বৃদ্ধির দাবি করেছিলেন। তবে শতভাগ বৃদ্ধি করা হবে না। এটি বৃদ্ধি করে ৫০ শতাংশ করা হতে পারে। খুব বেশি হলে এটি ৭৫ শতাংশ করা হতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি আরও বলেন শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদান। কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতির বিবেচনায় সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টায় যতটুকু সম্ভব ততটুকু করবে। দীর্ঘদিনের বৈষম্য তো আর একদিনে বা একবছরে পূরণ করা সম্ভব নয়।
কবে নাগাদ উৎসব ভাতা বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি চলতি মাসের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করার। তবে চলতি মাসে প্রজ্ঞাপন হওয়ার সম্ভাবনা কম। আগামী মাসের প্রথমার্ধের মধ্যে উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি করা হতে পারে। আমি আবারও যত দ্রুততর সময়ের মধ্যে আমরা চেষ্টা করছি প্রজ্ঞাপন জারি করার। এখন দেখা যাক কখন কিভাবে সমস্যাগুলো শিক্ষক ও সরকার উভয়ের স্বার্থ রক্ষা করে সমাধান করা যায়।
এর আগে গত ৫ মার্চ বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ শিক্ষকদের উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাড়ি ভাড়াসহ অন্যান্য ভাতা বাড়ছে বলে জানান। উৎসব ভাতা বাদে অন্যান্য ভাতাগুলো আগামী বাজেট থেকে বাড়ানোর কথা রয়েছে। শুধু মাত্র উৎসব ভাতা বর্তমান বাজেট থেকে বাড়ানোর কথা রয়েছে যা বর্তমানে বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে।
তিনি বলেন, ‘কয়েকমাস আগেই আমি সবাইকে আশ্বাস দিয়েছিলাম, সাধ্যমত এ বছর এবং আগামী বছরের বাজেটে যতটুকু অর্থ সংকুলন করা যায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে আমরা যতদূর পারি চেষ্টা করব দাবিগুলো মেটাতে।’ এই মুহুর্তে যতটুকু বাড়ানো হবে ততটুকু নিয়েই শিক্ষক কর্মচারীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানান। ভবিষ্যতে প্রয়োজন মতে দেখা যাবে।
বিদায়ী উপদেষ্টা বলেন,এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের যে সমস্যা তা এক দুই বছরের বাজেট দিয়ে পুরণ করা বা মেটানো কোন মতেই সম্ভব নয়। তবে শুরু করা দরকার। সেই মতে বর্তমান সরকার কাজ শুরু করে দিয়ে যাবে। এটা বোঝানো খুব কঠিন। আজকেই বেসরকারি বেতন সরকারি বেতনের সমান করে দিতে হবে- এটা ন্যায্য দাবি বুঝলাম, কিন্তু এক বছরের বাজেট দিয়ে কীভাবে ১৫ বছরের বৈষম্য ঠিক করা যায়? কিন্তু শুরুটা করা দরকার। সেই শুরুটা আমরা করে দিয়ে যাচ্ছি।’
ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘তাদের (এমপিওভুক্ত শিক্ষক) উৎসব ভাতা, বিনোদন ভাতা, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা- এ বছরের ঈদুল আজহা থেকে শুরু করে আগামী বছরের বাজেট থেকে অন্তত কিছু বাড়াতে পারবো, এখানেও আমি ঘোষণা দিচ্ছি না কত বাড়াবো। আমি জানি সেটুকু বাজেটের মধ্যে এ বছর এবং আগামী বছরের বাজেটের মধ্যে প্রভিশন রাখা হচ্ছে।’
[…] আরও পড়ুন…….এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধ… […]