ইএফটির মাধ্যমে বেতন প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর হতে শিক্ষক কর্মচারীদের মধ্যে আনন্দের জোয়ার উঠে। কিন্তু সেই আনন্দ ম্লান হতে খুব বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি। অল্পদিনের মধ্যে সেই খুশি বিশাদে পরিণত হতে শুরু করেছে। ১ মাস শেষ হয়ে আরও এক মাস শেষ হতে চলেছে এখন পর্যন্ত কোন খবর নাই বেতনের। মাউশি থেকে প্রতি সপ্তাহে নতুন নতুন তথ্য জানায়। প্রতি সপ্তাহে নতুন নতুন সমস্যা যুক্ত হয়। সঠিক কারণ জানা যায় না। শুধু তারিখ আর তারিখ এভাবেই চলছে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে তামাশা।
বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে যে নাটকের দৃশ্য ধারণ চলছে তা আসলে কোনদিন এর শেষ দৃশ্যের ধারণ শেষ হবে আর কোনদিন এ নাটক অন ইয়ারে যাবে তা সত্যি সত্যি বলা মুশকিল।
গত ০৫ তারিখে সরকার যখন ঘোষণা করে যে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন আগামী জানুয়ারী মাস থেকে অর্থাৎ ডিসেম্বর বেতন ইএফটিতে পাবে। এর ফলে যা হলো এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীগণ আনন্দে আত্নহারা হওয়ার উপক্রম। কেননা তারা ভাবতে শুরু করলেন যে, এখন থেকে আর তাদের বেতন পেতে মাসের অর্ধেক অতিক্রম হবে না। এখন থেকে তারা বেতন পাওয়ার জন্য সভাপতি নামক এক মানব যন্ত্রের স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য দিনের পর দিন তার কাছে ধরনা দিতে হবে ন। এখন থেকে তাদের বেতন সরাসরি মাসের ০১ তারিখে নিজ ব্যাংক একাউন্টে জমা হয়ে যাবে।
বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। পরবর্তী সময়ে গত ১ জানুয়ারি ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে ৬৭ হাজার, তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার এবং চতুর্থ ধাপে ৮ হাজার ২০০ এর অধিক শিক্ষক-কর্মচারীকে বেতন দেওয়া হচ্ছে। আর ৫ম ধাপে আরও ৮৮০০ শিক্ষক কর্মচারী ইএফটির আওতায় আসবে। যদিও ৫ম ধাপের ইএফটির আওতাভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা এখনও তাদের বেতন ইএফটির মাধ্যমে পায়নি। সংকটের সমাধান কিন্তু এখানে নেই বরং এখানে রয়েছে সংকটের পূর্বাভাস।
বর্তমানে যে অবস্থা তাতে এ সপ্তাহে বেতন হবে তার কোন ভরসা পাওয়া যাচ্ছে না। এ সপ্তাহেও যদি বেতন না হয় তাহলে আগামী সপ্তাহ শুরুর নাগাদ কিন্তু মার্চ মাস। মার্চ মাস শুরু হলে ২মাসের বেতন পাওনা হয়ে যাবে শিক্ষক কর্মচারীরা। একটা বিষয় কি আমরা ভেবে দেখেছি যারা জানুয়ারী মাসের ১ তারিখে ১ম ধাপের ইএফটিতে বেতন পেয়েছিল তাদের বেতন পাওয়া কিন্তু ২ মাস হয়ে গেল। এক মাসের বেতন দিয়ে কি ২ মাস চলে শিক্ষক কর্মচারীদের। অন্যান্য চাকুরীজীবিদের চললেও শিক্ষকদের তো চলে না। কারণ এই পেশায় তো অন্য কোন আয় নেই বললেই চলে। হ্যাঁ বলতে পারেন টিউশনি থেকে আয় কিন্তু প্রশ্ন হলো টিউশনি কতজন শিক্ষক করে। বেশিভাগ শিক্ষকের আয় বলতে এই সরকার প্রদত্ত বেতন। এর উপর নির্ভর করেই আমাদের জীবন যাপন করতে হয়।
মাউশিতে কোন বিবেকবান লোক জন চাকুরী করে না যারা কিনা এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বিষয়টা মানবিকতা দিয়ে দেখবেন। আমরা তো আপনারে নিকট দয়া চাইছি কি চাইছি নাতো যেটা চাইছি তা হলো আমাদের পাওনা। পাওনা পরিশোধ করতে এত টালবাহানা কেন? আসলে আপনাদের পরিকল্পনা কি এভাবে করে ইএফটি পরিকল্পনা নষ্ট করা।
Leave a Reply