1. admin@kp-nat.com : admin : Ayub Ali
  2. ayub.bhs@gmail.com : Ayub ali : Ayub ali
রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ০৫:১৫ পূর্বাহ্ন
Title :
নতুন শিক্ষাক্রম কেমন হবে যা জানার এনসিটিবি এখন থেকে সরকারী চাকুরীজিবীদের মূল বেতন প্রতি বছর বৃদ্ধি পাবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধি আমলাতান্ত্রিক জটিলতার খপ্পরে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধির সর্বশেষ আপডেট NID তে নাম, জন্মতারিখ ভুলের কারণে ৫ হাজারের অধিক শিক্ষক কর্মচারীর বেতন বন্ধ শিক্ষা ও শিক্ষকদের নিয়ে আমলাদের কোন চিন্তাভাবনা নেই, চিন্তুা শুধু ট্রেনিং নিয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বদলি শুরুর দিনক্ষন সম্পর্কে যা জানাল মাউশি অনুদান পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ জুন মাসের বেতনের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে কোনদিন যাবে যা জানাল মাউশি ৩০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান পাচ্ছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীগণ

এমপিও শিক্ষকদের নিয়ে সরকার ও আমলারা আরও কতকাল তাচ্ছিল্য করবে

  • Update Time : শনিবার, ১১ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ২২ Time View
অবহেলা
Mpo

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিয়ে সরকার ও আমলাদের আচরণ নিয়ে আপনার প্রশ্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার একটি বড় সমস্যাএমপিওভুক্ত শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে তাদের অধিকার এবং সুবিধা আদায়ের জন্য সংগ্রাম করছেন, কিন্তু তাদের প্রতি সরকার এবং আমলাদের তাচ্ছিল্য বা অবমূল্যায়ন এখনো অনেকাংশে অব্যাহত রয়েছে। এটি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং শিক্ষকদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমরা যদি এই পরিস্থিতির মূল কারণ এবং এর সমাধান বিশ্লেষণ করি, তাহলে দেখতে পাব যে এটি শুধুমাত্র শিক্ষকদের প্রতি অবিচার নয়, বরং বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ

১. এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন:
এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা (মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা, যারা সরকারের বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্ত নন) দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও তাদের প্রতি সরকার ও আমলাদের আচরণ অনেক সময় অত্যন্ত অবমূল্যায়িত। অনেক শিক্ষক মনে করেন, তাদেরকে মানবাধিকার এবং সম্মানজনক待遇 থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

কিছু মূল কারণ:

  • বৈষম্যমূলক বেতন ও সুবিধা: সরকারী শিক্ষক এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মধ্যে বেতন বৈষম্য রয়েছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের প্রায়ই সরকারি শিক্ষকদের তুলনায় কম বেতন এবং সুবিধা দেয়া হয়। এটি তাদের কাজে মনোযোগ এবং উৎসাহ কমিয়ে দেয়।
    অবহেলা এবং অবমূল্যায়ন: অনেক সময় আমলাদের বা সরকারি কর্মকর্তাদের দৃষ্টিভঙ্গি এমন থাকে যে, তারা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের প্রতি কোনো গুরুত্ব দেন না। বিভিন্ন অফিসিয়াল নীতিমালা এবং সুবিধা প্রদান করার ক্ষেত্রে তারা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অবহেলা করেন।
  • তথ্য এবং প্রশাসনিক অকার্যকারিতা: এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য নিয়মিত বেতন বৃদ্ধি, পেনশন সুবিধা, স্বাস্থ্যসেবা বা পদোন্নতি নিয়ে কোনো স্থিতিশীল নীতি বা কার্যকরী পরিকল্পনা নেই। ফলে, তারা অবিচারের শিকার হন।

২. আন্দোলন এবং সংগ্রাম:
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলন এখন প্রায়ই সরকারের দৃষ্টিতে উপেক্ষিত থাকে। তারা তাদের অধিকার আদায়ের জন্য বিভিন্নভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে সরকার এবং আমলাদের পক্ষ থেকে কার্যকরী সমাধান খুব কমই আসছে।

কিছু প্রকৃত চ্যালেঞ্জ:

  • এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সম্মান এবং অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক স্তরে শক্তিশালী সমর্থন দরকার, যা এখনো তাদের কাছ থেকে অনুপস্থিত।
  • আন্দোলনের পরেও, তাদের দাবি পূরণের জন্য কোনো স্থায়ী পদক্ষেপ বা দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। এটা শিক্ষক সমাজের মধ্যে হতাশা এবং অবিশ্বাস তৈরি করছে।
  • শিক্ষকদের দাবি এবং আন্দোলনগুলো অনেক সময় রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বা অস্থায়ী সমাধান এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। স্থায়ী সমাধানের পথ খোঁজে না।

৩. আমলাদের ভূমিকা এবং অবহেলা:
বাংলাদেশের আমলারা অনেক সময় শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন করেন এবং তাদের সমস্যাগুলোর সমাধান করতে আগ্রহী হন না। এর ফলে, শিক্ষকদের ন্যায্য অধিকার আদায় করা কঠিন হয়ে পড়ে।

কিছু অবহেলার কারণ:

  • প্রশাসনিক উদাসীনতা: অনেক সময় আমলাদের কাছে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সমস্যাগুলি অগ্রাধিকার পায় না। তাদের কাছে এটি গুরুতর সমস্যা হিসেবে দেখানো হয় না, ফলে সমস্যাগুলি সমাধান হয় না।
  • রাষ্ট্রের উদাসীনতাঃ রাষ্ট্রের অন্যান্য সকল কর্মকর্তা কর্মাচারীরা স্বযংক্রিয়ভাবে রাষ্ট্র প্রদত্ত সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে। কিন্তু এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ক্ষেত্রে নানাবিধ টালবাহানা সকলক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয়।
  • দুর্নীতি এবং অফিসিয়াল অকার্যকারিতা: কিছু ক্ষেত্রে দুর্নীতি এবং অকার্যকারিতা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সুবিধা প্রদান বা সমস্যার সমাধান হতে বাধা সৃষ্টি করে।
  • শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধার অভাব: অনেক আমলা মনে করেন, শিক্ষকরা সমাজের সম্মানিত শ্রেণি নয়, বরং সরকারি কর্মচারী যারা তাদের কাজের প্রতি কোনো গুরুত্ব পায় না।
  • অধিক অকার্যকর সংগঠনঃ অতিরিক্ত ও অকার্যকর সংগঠন রয়েছে যাদের মুল লক্ষ্য ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখা তাদের শিক্ষকদের ন্যার্য দাবী পাওনা নিয়ে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নাই।
  • অবসরপ্রাপ্তরা সংগঠনের দ্বায়িত্বেঃ অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক কর্মচারীরা কর্মরত শিক্ষকদের সমস্যা কতটুকু অনুধাবন করতে পারে তা নিয়ে সন্দিহান। আর এ সুযোগটাই রাষ্ট্র ও আমলারা খুব ভাল ভাবে গ্রহণ করে।

৪. সরকারি নীতির অভাব:
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট এবং দীর্ঘমেয়াদী নীতি নেই। সরকার যে বিভিন্ন প্রকল্পে শিক্ষকদের অবদানকে গুরুত্ব দেয়, তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হতে দেখা যায় না। অন্যান্য চাকুরীজীবিদের ন্যায় আমাদের সাথে এদেশের সরকার বা সরকার যন্ত্র সকল সময়েই দুই ধরনের নীতি বাস্তবায়ন করে।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সুপারিশ:

  • নির্দিষ্ট নীতি প্রণয়ন: সরকারকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদী নীতি প্রণয়ন করতে হবে, যাতে তারা তাদের কাজের মাধ্যমে অবিচারের শিকার না হন
  • বেতন সমতা: এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য বেতন কাঠামো এবং সরকারি শিক্ষকদের সঙ্গে বৈষম্য দূর করা জরুরি। যদি শিক্ষকদের মধ্যে সমতা এবং সম্মান থাকে, তবে তারা তাদের কাজের প্রতি অধিক মনোযোগ দিতে পারবেন।
    শিক্ষকদের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা: সরকারের উচিত শিক্ষকদের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা এবং তাদের প্রতি অবমূল্যায়ন বন্ধ করা। এদেরকে সম্মানিত পেশাজীবী হিসেবে দেখা প্রয়োজন।
  • শিক্ষকদের প্রতি সরকারী দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন: সরকার এবং আমলাদের উচিত শিক্ষকদের সমস্যা সমাধানে আগ্রহী হওয়া এবং তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন দাবির সমাধান দ্রুত করা।
  • রাষ্ট্রের অন্যান্য পেশাজীবিদের ন্যায় তারাও যেন রাষ্ট্র প্রদত্ত সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারে তার সঠিক বন্দোবস্ত করা।

৫. সচেতনতা এবং সংগঠন:
শিক্ষকদের মধ্যে একতা এবং সংগঠনের মাধ্যমে আন্দোলন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যদি শিক্ষকরা একত্রিত হন এবং তাদের দাবি নিয়ে একটি শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলেন, তাহলে তারা সরকার এবং আমলাদের কাছ থেকে সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হতে পারেন।

  • শিক্ষকদের সংগঠন তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
  • এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের এত বেশি সংগঠন আছে যে, কে কেমন ভুমিকা পালন করবে তা তারা নিজেরাও অবগত নয়। বেশি সংগঠন থাকার কারণে নেত্বৃতের অভাব প্রকট। যে কারণে রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের অপরাপর পেশাজীবিরা আমাদের অবহেলা করে নির্দ্বিধায়।

উপসংহার:
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের প্রতি সরকার এবং আমলাদের তাচ্ছিল্য এবং অবমূল্যায়ন একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা, যা শিক্ষক সমাজের জন্য দুঃখজনক। এটি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং শিক্ষকদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার পথে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। তবে, যদি শিক্ষকরা একত্রিত হন এবং তাদের দাবি নিয়ে বিশ্বস্তভাবে আন্দোলন চালিয়ে যান, তাহলে কিছুটা হলেও সমাধান আসতে পারে। সরকারের উচিত শিক্ষকদের মর্যাদা এবং অধিকারকে স্বীকৃতি দেয়া, এবং আমলাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করা, যাতে তারা শিক্ষকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে পারেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আমার খবর
© All rights reserved © 2025 Kisukhoner Pathshala
Customized By BlogTheme