1. admin@kp-nat.com : admin : Ayub Ali
  2. ayub.bhs@gmail.com : Ayub ali : Ayub ali
শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ০৭:২৬ পূর্বাহ্ন

বাজেটে MPO ভুক্তদের চাওয়া পাওয়ার প্রতিফলন ঘটবে তো? ভেবে দেখেছেন..!

  • Update Time : বুধবার, ৪ জুন, ২০২৫
  • ৩০৬ Time View
বাজেটে MPO ভুক্তদের চাওয়া পাওয়ার প্রতিফলন ঘটবে তো? ভেবে দেখেছেন..!

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য জাতীয় বাজেট বরাবরই একটি বড় আগ্রহের বিষয়। কারণ, এই বাজেটেই নিহিত থাকে তাঁদের জীবনমান উন্নয়নের সম্ভাবনা। তবে এ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেই বাড়তি অর্থের ব্যবহার কীভাবে হবে, তা ভেবে দেখলে আশার জায়গাগুলো অনেকটাই ম্লান হয়ে যায়।

বাজেটে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খাতে গতবারের চেয়ে এবার বেশি বরাদ্দ ৩৪৫৫ কোটি টাকা। এ-ই টাকা শুধু এমন নয় যে শুধু এমপিওভুক্তদের জন্য ব্যয় হবে। এখান হতে সমগ্র মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষায় ব্যয় হবে।

প্রথমত, সরকার চলতি অর্থবছরে যে বিশেষ বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে, সেটি বাস্তবায়ন করতে বড় অঙ্কের অর্থই প্রয়োজন হবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদেরও এই বিশেষ বেতন কাঠামোর আওতায় আনা হবে বলে আশ্বাস রয়েছে। ফলে বাজেটের একটি বড় অংশ সরাসরি চলে যাবে এই খাতে।

দ্বিতীয়ত, সম্প্রতি এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য ঈদ বোনাস বাড়ানো হয়েছে এই ঈদুল আযহা থেকে। যা কিনা পরবর্তী বছর গুলোতেও নিশ্চিত ভাবে চলমান থাকবে এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরাও এই সুবিধা পাবেন, ধরে নিলে বুঝতেই পারছেন, এই বাড়তি খরচ মেটাতে আরও অর্থ বরাদ্দ লাগবে।

এবার প্রশ্ন আসে, এইসব ব্যয়ের পর হাতে থাকবে কতটুকু? এবং সেই টুকু দিয়ে কী হবে?

বাস্তবতা হলো, দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা যেসব ভাতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছেন—যেমন বাড়িভাড়া ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, ও বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টার ঘোষণা মতে শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা ইত্যাদি—এই বাজেটের আলোকে সেগুলোর দৃশ্যমান উন্নয়ন খুব একটা আশা করা আপনদের কাছে কতটুকু যুক্তিযুক্ত মনে হচ্ছে আপনার কাছে। এমনকি যারা নতুনভাবে এমপিওভুক্ত হওয়ার অপেক্ষায় আছেন, তাঁদের জন্যও কিন্তু অর্থের প্রয়োজন হবে সেই সকল কিছু মিলেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস কতটুকু আছে বলে আপনি মনে করেন।

আমাদের জাতীয় প্রবণতা হচ্ছে—সংখ্যার পেছনে ছুটে অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা। আমরা বরাদ্দের টাকার অঙ্ক শুনেই ধরে নিই, এই বুঝি আমাদের অনেক কিছু পেয়ে গেলাম ভাল করে জানার বোঝার চেষ্টা করি না। সামনের মুলা ঝুলানো দেখে মনে করি শিক্ষক সমাজের ভাগ্যে বুঝি ‘উন্নতির সুবাতাস’ বইতে চলেছে। অথচ খোলাসা করে দেখলে বোঝা যায়, কাজের কাজ তেমন কিছুই না হয়তবা। ঘোষিত অর্থের অধিকাংশ অর্থ চলে যাচ্ছে পূর্বঘোষিত কাঠামোগত ব্যয় মেটাতেই। ফলাফল, যেটুকু অবশিষ্ট থাকে, তা দিয়ে নীতিগত বা কাঠামোগত কোনো বড় পরিবর্তন আনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।

এই মুহূর্তে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সবচেয়ে বড় প্রত্যাশা হওয়া উচিত—একটি সমন্বিত নীতিমালা, যা তাঁদের বেতন, ভাতা, সুযোগ-সুবিধা এবং চাকুরীর শেষের অবসর ও কল্যাণের পাওনা নিয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেবে। শুধুমাত্র বাজেটে বরাদ্দ বাড়ালেই যদি সমাধান হতো, তবে এত বছরেও তাঁদের ন্যায্যতা কেন প্রতিষ্ঠিত হয়নি?

আমরা ভুলে যাচ্ছি, শিক্ষক সমাজ জাতি গঠনের অন্যতম প্রধান । অথচ তাঁদের ন্যূনতম জীবনমান নিশ্চিত করা ছাড়া আমরা ‘উন্নত রাষ্ট্র’ গঠনের স্বপ্ন দেখি। আমরা মুখেই কেবল কথার খৈ ফুটিয়ে চলি বাস্তবে অন্তঃসারশ্যূর্ন এবং এটি কেবল একটি অর্থনৈতিক অসামঞ্জস্য নয়, এটি একটি নৈতিক ব্যর্থতা।

অতএব, শুধু বরাদ্দের অঙ্ক দেখে উচ্ছ্বসিত না হয়ে আমাদের উচিত—এই বাজেট বাস্তবায়নের কাঠামো, অগ্রাধিকার এবং বরাদ্দের প্রকৃত উপযোগিতা নিয়েও সমানভাবে ভাবা এবং সেই মতে সময় থাকতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি করা। সঠিক ভাবনার প্রকাশ ঘটানো আর সেই ভাবনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে হবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনের নিশ্চয়তা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আমার খবর
© All rights reserved © 2025 Kisukhoner Pathshala
Customized By BlogTheme