আসছে বাজেট, বাড়তে পারে যেসব পণ্যের দাম
আগামী সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার প্রায় সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত। এর ওপর ভিত্তি করে বাজারে কিছু পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়, আবার কিছু পণ্যের কমে। এবার বাজেটে মূল্যস্ফীতি ও শিল্পখাতের ভারসাম্য রক্ষা করতে গিয়ে কিছু পণ্যের শুল্কহার কমানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। আবার শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাবও করা হয়েছে সাধারণ মানুষের নিত্য ব্যবহার্য কিছু জিনিসপত্রের।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে নতুন করে শুল্ক বাড়ানো হলে আরেক দফা দাম বাড়তে পারে। এতে বাড়বে মানুষের জীবনযাপনের ব্যয়ও।
প্রতিবছর বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও নিত্যব্যবহার্য পণ্যের ভ্যাট ও শুল্ক-কর বাড়িয়ে থাকে। এতে বাজারে সেসব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়।
ফ্রিজ-এসি
অব্যাহতির সংস্কৃতির পরিহার করতে রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনারের ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এতে দেশীয় ফ্রিজ-এসির দাম বাড়তে পারে। পাশাপাশি বিদেশি ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী আমদানি বাড়তে পারে।
মোবাইল ফোন
মোবাইল ফোন উৎপাদন ও সংযোজনে হ্রাসকৃত ভ্যাটহার বাড়ানোর হচ্ছে। উৎপাদনের ক্যাটাগরিভেদে দুই থেকে আড়াই শতাংশ ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে। এতে দেশে তৈরি মোবাইল ফোনের দাম বাড়তে পারে।
ব্লেড
সেলুনে শেভিং কাজে ব্যবহৃত ব্লেডের দাম বাড়তে পারে। কারণ স্টেইনলেস স্টিলের স্ট্রিপ থেকে প্রস্তুত ব্লেড এবং কার্বন স্টিলের স্ট্রিপ থেকে প্রস্তুতকৃত ব্লেডের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭ শতাংশ করা হচ্ছে।
টেবিলওয়্যার
বাসা-বাড়িতে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের তৈরি টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার, গৃহস্থালি সামগ্রী, হাইজেনিক ও টয়লেটসামগ্রী উৎপাদনে ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে এসব পণ্যের দাম বাড়বে।
সুতা
দেশীয় টেক্সটাইল মিলে উৎপাদিত সুতার ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে। প্রতি কেজি কটন সুতা ও ম্যান মেইড ফাইবারে তৈরি সুতার সুনির্দিষ্ট কর তিন টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ টাকা করা হচ্ছে। এতে দেশীয় সুতায় তৈরি গামছা, লুঙ্গিসহ পোশাকের দাম বাড়তে পারে।
রড
রড, এঙ্গেল বার তৈরির প্রধান কাঁচামাল স্ক্র্যাপের সুনির্দিষ্ট করের পরিমাণ এক হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ২০০ টাকা করা হচ্ছে। এছাড়া বিলেট-ইনগট সুনির্দিষ্ট কর এবং স্ক্র্যাপ গলানোর রাসায়নিকের ফেরো ম্যাঙ্গানিজ ও ফেরো সিলিকা ম্যাঙ্গানিজের শুল্ক-কর বাড়ানো হচ্ছে। বিধায় নির্মাণসামগ্রীর প্রধান উপকরণ রডের দাম বাড়তে পারে।
হেলিকপ্টার
নতুন অর্থবছরে হেলিকপ্টার আমদানিতে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানো হতে পারে। তাতে হেলিকপ্টার আমদানির খরচ বাড়বে।
কসমেটিকস
নারীদের সৌন্দর্যবর্ধনে ব্যবহৃত লিপস্টিক, লিপলাইনার, আইলাইনার, ফেসওয়াশ, মেকআপের সরঞ্জাম আমদানির ন্যূনতম মূল্য বিভিন্ন হারে বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি কেজি লিপস্টিক আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কায়নের ন্যূনতম মূল্য ২০ ডলার আছে। সেটি বাড়িয়ে ৪০ ডলার করা হতে পারে। একইভাবে অন্য সব কসমেটিক্সের ন্যূনতম মূল্য বাড়ানো হচ্ছে। বিধায় বাজেটের পর এসব সৌন্দর্যবর্ধক সামগ্রীর দাম বাড়তে পারে।
বিদেশি চকোলেট
চকোলেটের দামও বাড়তে পারে। চকলেট আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কায়নের ন্যূনতম মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব থাকছে বাজেটে। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের চকলেটের শুল্কায়নের ন্যূনতম মূল্য চার ডলার। এটি বাড়িয়ে ১০ ডলার করা হচ্ছে। এতে আমদানি করা সব ধরনের চকোলেটের দাম বাড়তে পারে।
খেলনা
স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা দিতে বাজেটে বিদেশি খেলনার ট্যারিফ মূল্য বাড়ানো হচ্ছে। এতে বিদেশি খেলনার দাম বাড়বে।
মার্বেল-গ্রানাইট
বাসা-বাড়ির মেঝেতে ব্যবহৃত মার্বেল-গ্রানাইড পাথর আমদানির সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শাতংশ করা হচ্ছে। এতে মার্বেল-গ্রানাইডের দাম বাড়তে পারে।
মোটর
ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণে এতে ব্যবহৃত ৭৫০ ওয়াটের ডিসি মোটরের আমদানি শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে।
অন্যান্য
এছাড়াও দাম বাড়তে পারে- তারকাঁটা, সব ধরনের স্ক্রু, নাট-বোল্ট, ইলেকট্রিক লাইন হার্ডওয়্যার, পোল ফিটিংস, সেল্ফ কপি পেপার, ডুপ্লেক্স বোর্ড/কোটেড পেপার, প্লাস্টিকের তৈরি ওয়ান টাইম গ্লাস, বাটি, প্লেট ইত্যাদি; তামাক বীজ, মোটরসাইকেল ও সাইকেলের যন্ত্রাংশ, গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মায়েদের ফুড সাপ্লিমেন্ট, বেভারেজ আইটেম, দরজার তালা ইত্যাদি।
আসছে বাজেট, কমতে পারে যেসব পণ্যের দাম
আগামী সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার প্রায় সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত। এর ওপর ভিত্তি করে বাজারে কিছু পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়, আবার কিছু পণ্যের কমে। এবার বাজেটে মূল্যস্ফীতি ও শিল্পখাতের ভারসাম্য রক্ষা করতে গিয়ে কিছু পণ্যের শুল্কহার কমানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। শুল্কহার কমলে পণ্যের দাম কমবে বাজারে।
আইসক্রিম
সব বয়সি মানুষের পছন্দ আইসক্রিম। আগামী বাজেটে সরবরাহ পর্যায়ে আইসক্রিমের সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এ কারণে বাজারে আইসক্রিমের দাম কমতে পারে।
বাস-মাইক্রোবাস
যানজট কমাতে ১৬ থেকে ৪০ আসনবিশিষ্ট বাস আমদানিতে শুল্ক কমতে পারে। বর্তমানে এ ধরনের যানবাহন আমদানিতে ১০ শতাংশ হারে আমদানি শুল্ক আছে। এটি কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এ ছাড়া মাইক্রোবাসের সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে বাস-মাইক্রোবাসের দাম কমতে পারে।
লবণ
আয়োডিনযুক্ত লবণ উৎপাদনের ব্যবহৃত পটাশিয়াম আয়োডেট দাম বাড়ায় বাজারে লবণের দাম বাড়ছে। তাই আগামী বাজেটে পটাশিয়াম আয়োডেটের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করা হচ্ছে। এতে বাজারে লবণের দাম কমতে পারে।
চিনি
পরিশোধিত চিনি আমদানিতে সুনির্দিষ্ট শুল্ক টনপ্রতি সাড়ে ৪ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে চার হাজার টাকা করা হচ্ছে। এতে চিনির দাম কমতে পারে।
শিরিশ কাগজ
শিরিশ কাগজের কাঁচামাল ফেনোলিক রেজিন এবং স্যান্ড পেপার কোটিং ম্যাটেরিয়ালের আমদানি শুল্ক কমানো হচ্ছে। এতে বাজারে শিরিশ কাগজের দাম কমতে পারে।
ক্রিকেট ব্যাট
দেশে ক্রিকেট ব্যাট তৈরি কারখানার সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ কারণে বিদেশি ক্রিকেট ব্যাটের আমদানিনির্ভরতা কমেছে। দেশীয় এই শিল্পকে আরও উৎসাহ দিতে ব্যাট তৈরির প্রধান কাঁচামাল কাঠ আমদানির শুল্ক ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৬ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে বাজারে ক্রিকেট ব্যাটের দাম কমতে পারে।
অন্যান্য
এছাড়াও দাম কমতে পারে- মাখন, পোড়ামাটির প্লেট ও পচনশীল উপাদানে তৈরি গ্লাস, প্লেট ও বাটি ইত্যাদি। জাপানের জনপ্রিয় সি-ফুড স্ক্যালোপ, হোস পাইপ ইত্যাদিরও দাম কমতে পারে। পাশাপাশি জাপানি সি-ফুড স্ক্যালোপ আমদানিতে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হতে পারে। এতে স্ক্যালোপের দাম কমতে পারে।
সিন্ডিকেট না থাকায় প্রচুর গরম মসলা আমদানি, কমেছে দামও
বড় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট না থাকায় এবার কোরবানিকে সামনে রেখে গরম মসলা আমদানি হয়েছে প্রচুর। তাই অন্যান্যবারের মতো মসলার দাম বাড়েনি লাগামছাড়া। তবুও পাইকার ব্যবসায়ীরা বাজার মন্দার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন দাবি করলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা বললেন,ব্যব্সা হচ্ছে মোটামুটি। এদিকে সরকারি সংস্থা বলছে পর্যাপ্ত আমদানির কারণে এবার মসলার বাজার স্থিতিশীল।
হাতে গোনা কদিন পরই কোরবানির ঈদ।কোরবানির ঈদে বেশ বেড়ে যায় গরম মসলার চাহিদা।এসব গরম মসলার মধ্যে রয়েছে-এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, জিরা,গোলমরিচ, ধনিয়া, জৈত্রিক, জায়ফল,আদা, পিয়াজ, রসুন ও হলুদ।এই মসলা বাজারের বড় অংশই আমদানিনির্ভর। তাই কোরবানিকে সামনে রেখে বেড়েছে মসলার আমদানিও।
অন্যান্য বছর গুটিকয়েক ব্যবসায়ী মসলা আমদানি নিয়ন্ত্রণ করলেও এবার আমদানি ছিল উম্মুক্ত। ফলে মসলা আমদানি হয়েছে প্রচুর।চলতি অর্থ বছরের প্রথম ১০মাসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ১২ প্রকারের মসলা আমদানি হয়েছে এক লাখ ৬৩ হাজার ৯৯০টন।পাইপলাইনে আছে আরো মসলা। আমদানি বাড়ায় ও সিন্ডিকেট না থাকায় তাই এবার কমেছে মসলার দাম।
মসলার দাম কম থাকলেও ব্যবসা মন্দা চলায় ক্ষতির সম্মুখীন দাবি চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকার ব্যবসায়ীদের। তবে মোটামুটি ব্যবসার কথা বললেন, খুচরা ব্যবসায়ীরা।
পর্যাপ্ত মসলা আমদানির কারণে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরী ও দাম বাড়ানোর কোন সুযোগ নেই বলে জানান চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সংঘ নিরোধ কেন্দ্রের উপ পরিচালক ড. মুহাম্মদ শাহ আলম।
মসলা আমদানিতে দীর্ঘদিন ছোট ও মাঝারী ব্যবসায়ীরা বড়দের নিকট জিম্মি ছিল।এবার আমদানি চ্যানেল সহজ হওয়ায় সাধারণ ব্যবসায়ীদের পর্যাপ্ত আমদানির কারণে স্বাভাবিক রয়েছে বাজার।
এলএনজি আমদানিতে ভ্যাট প্রত্যাহার
প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ বাজেটে এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব রয়েছে। বর্তমানে আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ অগ্রিম কর দিতে হয়। বিক্রির সময়ও রয়েছে ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ উৎসে কর। এছাড়া মার্জিন বিল পরিশোধে গ্যাস বিতরণ সংস্থাগুলোর কাছ থেকে ৫ শতাংশ উৎসে কর কাটা হয়।
জ্বালানি তেলেও শুল্ক কমছে
বাজেটে ক্রুড ফুয়েল অয়েলের শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে শতাংশ এবং অন্যান্য জ্বালানি আমদানিতে ১০ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশ কমানো হতে পারে। এতে জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা কমতে পারে। পাশাপাশি টায়ার, টিউব, ব্রেক প্যাড, মার্বেল-গ্রানাইটসহ স্থানীয় শিল্পের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতির আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের প্রস্তাবও থাকতে পারে।
চামড়া শিল্পে শুল্ক ছাড়
ঈদুল আজহা ও চামড়া শিল্পের সম্ভাবনা বিবেচনায় কিছু রাসায়নিক উপাদানে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব থাকতে পারে। এতে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে খরচ কমবে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঋণপত্রে কমছে উৎসে কর
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিতে উৎসে কর কমানোর প্রস্তাব আসছে বাজেটে। বর্তমানে এসব পণ্যে ১ শতাংশ উৎসে কর থাকলেও তা অর্ধেকে নামানো হতে পারে। এতে ধান, গম, ডাল, ভোজ্যতেল, চিনি, লবণসহ নানা ভোগ্যপণ্যের দাম কমতে পারে। সরকার মনে করছে, উৎসে কর রাজস্বে তেমন প্রভাব না ফেললেও ব্যবসায়ীরা তা অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করেন। তাই কর কমিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তি আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ভূমি নিবন্ধনে কর কমছে
ভূমি নিবন্ধনে কাঠার পরিবর্তে শতাংশের ভিত্তিতে ফি ও কর নির্ধারণের প্রস্তাব আসছে বাজেটে। অগ্রিম কর কিছুটা কমানো হলেও মোট করের পরিমাণ তেমন কমবে না বলে মনে করছে এনবিআর। গত অর্থবছরে এ খাত থেকে রাজস্ব আয় হয়েছিল প্রায় ৬,৫০০ কোটি টাকা।
শুল্ক কমছে চিনি আমদানিতে
চিনির দাম স্থিতিশীল রাখতে প্রস্তাবিত বাজেটে পরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্ক প্রতি টন ৪,৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ৪,০০০ টাকা করার প্রস্তাব থাকতে পারে। আগে থেকেই এ খাতে শুল্ক-কর হ্রাসে সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে।
সয়াবিন ও কাগজ শিল্পের কাঁচামালে শুল্ক হ্রাস
দেশীয় শিল্প ও উৎপাদন খাতে সহায়তায় প্রস্তাবিত বাজেটে সয়াবিন মিল, কাগজশিল্প এবং নিউট্রালাইজড সয়াবিন তেলের ওপর শুল্ক রেয়াতের প্রস্তাব রয়েছে। নির্মাণ ও শিরীষ কাগজ শিল্পে ব্যবহৃত ফেনোলিক রেজিন ও স্যান্ডপেপারের শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ কমানো হতে পারে। এতে উৎপাদন খরচ কমে শিল্প খাত কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে।
কম দামে মিলবে সংবাদপত্রের নিউজপ্রিন্ট
সংবাদপত্রের শিল্পে ব্যবহৃত নিউজপ্রিন্ট আমদানিতে কাস্টমস শুল্ক কমানোর প্রস্তাব ছিল নোয়াবসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনের। সেই প্রস্তাবে সারা দিতে ও দেশীয় গণমাধ্যমকে আরও সহায়তা দিতে নিউজপ্রিন্ট আমদানির কাস্টমস শুল্ক ৫ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করার প্রস্তাব বিবেচনা থাকছে প্রস্তাবিত বাজেটে।
সাশ্রয়ে মূল্যে মিলবে ক্রিকেট ব্যাট
দেশে ব্যাট উৎপাদন ও রপ্তানি উৎসাহিত করতে ব্যাট তৈরির কাঠ আমদানিতে শুল্ক ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৬ শতাংশ করার প্রস্তাব আসছে বাজেটে। এতে ব্যাটের দাম কমে প্রান্তিক পর্যায়েও সহজলভ্য হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দেশি সফটওয়্যার উন্নয়নে বাড়তি সুবিধা
তথ্যপ্রযুক্তি খাত ও সফটওয়্যার রপ্তানি উৎসাহিত করতে বিদেশি অপারেটিং সিস্টেম, ডেটাবেজ, ডেভেলপমেন্ট টুলস ও সিকিউরিটি সফটওয়্যারে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ কমানোর প্রস্তাব আসছে বাজেটে। এতে ফ্রিল্যান্সার ও দেশীয় আইটি প্রতিষ্ঠানের খরচ কমবে।
মাটি ও পাতার তৈরি পণ্যে ভ্যাট প্রত্যাহার
মাটির ও পাতার তৈরি তৈজসপত্রের ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাব আসছে। বর্তমানে এসব পণ্যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। যা বাজেটে প্রত্যাহারের প্রস্তাব রয়েছে বলে এনবিআর সূত্র জানিয়েছে।
বিদেশি জুস
নন-অ্যালকোহলিক জুস আমদানির ওপর সম্পূরক শুল্ক ১৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০০ শতাংশ করার প্রস্তাবও থাকতে পারে প্রস্তাবিত বাজেটে। ফলে বিদেশি জুস মিলতে পারে তুলনামূলক কম দামে।
পিভিসি পাইপ ও কপার ওয়্যার
অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহৃত পিভিসি পাইপের উপকরণ আমদানিতে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ এবং কপার ওয়্যারের উপকরণে ১৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব আসছে বাজেটে। এছাড়া পরিবহণের টায়ার, টিউব, ব্রেক সু-প্যাড, মার্বেল ও গ্রানাইটের কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতিতেও শুল্ক ছাড়ের প্রস্তাব রয়েছে। এতে এসব পণ্যের দাম কিছুটা কমতে পারে।
Leave a Reply