বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের পেশা যে কি পরিমাণ বৈষমপীড়িত তা যদি পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লেখা যায় তবেও শেষ হবে না। সেখানে যখন কোন আশার আলো দেখতে পাওয়া যায় তা প্রতাশার চেয়েও কয়েকগুন বেশি উদ্বেলিত হয় এ পেশায় নিয়োজিত মানুষগুলো। বেশ কিছুদিন থেকেই বিক্ষিপ্তভাবে শোনা যাচ্ছে যে, এমপিওভুক্তদের সুযোগ সুবিধার বৃদ্ধি ঘটবে বলে শোনা যাচ্ছিল। তবে এবার মনে হয় সেই অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে এমপিও (MPO) ভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের জন্য। আগামী ২ তারিখ ঘোষিত বাজেটে তাদের জন্য আসতে চলেছে কিছু সুখবর। দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা অনুযায়ী কিছু ভাতা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা জীবনের ব্যয় সামাল দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। নিচে তুলে ধরা হলো সম্ভাব্য পরিবর্তনগুলো:
এখানে আমি একটি বিষয় পরিস্কার করে বলছি তা হল আমাদের এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে যে, আপনারা অযথা যার তার কথা শুনে বিভ্রান্ত হবে না। বাজেটে যদি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সুযোগ সুবিধা বাড়ে তাহলে আপনাদেরও সুযোগ সুবিধাও সমহারে বাড়বে এটা নিশ্চিত। তাই অযথা এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নাই।
বাড়িভাড়ার ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতি মাথায় রেখে এবারের বাজেটে এমপিও ভুক্তদের বাড়িভাড়া ভাতা ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। এটি বিশেষ করে শহরাঞ্চলের শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য তো বটেই সর্বেপরি সকলের জন্যই বড় স্বস্তির বিষয় হবে। কারণ এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য যে পরিমাণ বাড়িভাড়া বরাদ্দ ছিল তা হাস্যকর যদি বলা যায় তাও ভুল হবে মনে হয়। তবে এবার বাজেটে আশা করা যাচ্ছে সেই বৈষম্যের কিছুটা হলেও অবসান ঘটতে যাচ্ছে। সরকারের উচ্চ মহল থেকে শতাংশ আকারে বাড়িভাড়া পাওয়ারই আশ্বাস মিলেছে। হ্যাঁ সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের মতো হয়ত ৪৫ ও ৫০ শতাংশ হবে না ঠিক তবে তারপরেও যদি শতাংশ হারে প্রদান করাটাও বা একেবারে কম পাওনা নয়।
চিকিৎসা ব্যয়ের চাপ কমাতে সরকার চিকিৎসা ভাতায় অতিরিক্ত ৫০০ টাকা যুক্ত করার চিন্তাভাবনা করছে। এটি বাস্তবায়িত হলে স্বাস্থ্য খাতে সবার জন্যই কিছুটা আরামদায়ক পরিস্থিতি তৈরি হবে। এখানেও সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের মতো ১৫০০টাকা করা হচ্ছে না।
শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতা সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের মত এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের প্রদান করা হবে এবং তা সামনের বাজেট থেকেই প্রদান শুরু হবে নিশ্চিত। এই ভাতা এ যাবৎ পর্যন্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীগণ কোনদিনই পায়নি। তবে সামনের বাজেট থেকে এই ভাতা পেতে চলেছে। তবে এই ভাতার ক্ষেত্রে কত টাকা বাড়ানো হবে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে এটা নিশ্চিত এখানেও সরকারীদের মত মুল স্কেলের ১০০% আমাদের দেওয়া হবে না। তারপরও এটি এমপিও ভুক্তদের মানসিক স্বস্তি ও কর্মউৎসাহ বাড়াতে সহায়ক হবে বলেই আশা করা যায়।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, উপরোক্ত সুবিধাগুলো আগামী বাজেটেই অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং এসব সুবিধা নিশ্চিতভাবে পাওয়া যাবে। এটি এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রতি সরকারের সদয় দৃষ্টিভঙ্গিরই প্রমাণ। আর সরকারের এই কৃত্বিতের অনেকাংশেরই দাবীদার কিন্তু বর্তমান পরিকল্পনা উপদেষ্টা ও বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা ড.ওয়াহিদুদ্দিন মাহমুদ।
এমপিও ভুক্তদের জন্য এবারের বাজেট অনেকটাই আশাব্যঞ্জক হতে যাচ্ছে। বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতার বৃদ্ধি এবং শ্রান্তি ও বিনোদন ভাতার সংযুক্তি এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের জীবনে অর্থনৈতিক স্বস্তি এনে দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে। বাজেট ঘোষণার দিনই জানা যাবে এর বিস্তারিত ও কার্যকারিতা।
Leave a Reply