ঈদুল আযহার আগেই মে মাসের বেতন পাবেন কি না—এই প্রশ্নটি গত কয়েকদিন ধরেই দেশের লাখো বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর মুখে মুখে। অনিশ্চয়তা, দুশ্চিন্তা আর নানা গুজবে ঘিরে তৈরি হয়েছিল এক ধরনের উদ্বেগ। তবে শেষ পর্যন্ত কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। মে মাসের বেতন প্রদানের সরকারি আদেশ (জিও) জারি হওয়ায় অপেক্ষার প্রহর এখন আর খুব বেশি দীর্ঘ নয়।
সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় মে মাসের বেতন প্রদানের অনুমোদন দিয়ে জিও জারি করেছে। ফলে আইবাস++ সিস্টেমে বেতন ছাড়ের প্রস্তুতি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরাসরি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দিচ্ছে, যা আগে analog পদ্ধতিতে হতো এবং সময়সাপেক্ষ ছিল।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) সূত্রে জানা গেছে, আসছে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) মে মাসের বেতন আইবাস++ সিস্টেমে ঢুকবে। এরপর ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা ছাড় হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। সব ঠিকঠাক থাকলে রবিবার (১ জুন) বা সোমবার (২ জুন) এর মধ্যেই দেশের সব শিক্ষক-কর্মচারীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেতন পৌঁছে যাবে।
ঈদ মানে খুশি, পরিবার, আত্মীয়স্বজন, আর কিছু বাড়তি ব্যয়ের পরিকল্পনা। নতুন জামা-কাপড়, শিশুদের জন্য উপহার, বাড়ির বাজার—সবকিছুতেই দরকার নির্ভরযোগ্য আর সময়মতো অর্থপ্রাপ্তি। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অনেকেই শুধু সরকারি অংশের বেতনেই নির্ভর করেন। তাই ঈদের আগে বেতন না পেলে তাদের জন্য সেটা কেবল আর্থিক নয়, মানসিক চাপেরও বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
ইএফটি (EFT) বা ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের আওতায় শিক্ষকদের বেতন দেওয়া প্রক্রিয়া যেমন দ্রুত, তেমনি স্বচ্ছ। আগে যেখানে ভোগান্তি ছিল, সেখানে এখন প্রযুক্তির ছোঁয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা ঘরে বসেই মোবাইল নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানতে পারছেন তাদের বেতন জমা হয়েছে কি না।
বেতন সংক্রান্ত সকল জটিলতা কাটিয়ে এবার হয়তো ঈদের বাজারে নির্ভার মনে অংশ নিতে পারবেন দেশের লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারী। এখন শুধু প্রয়োজন নির্ধারিত সময়ে অর্থ ছাড় ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তা পৌঁছে দেওয়া। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এই প্রক্রিয়ায় তৎপর রয়েছে বলে জানা গেছে।
আশা করা যায়, আসছে ঈদুল আযহা শিক্ষকদের জন্য শুধু আনন্দ নয়, আর্থিক স্বস্তিও বয়ে আনবে।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) পদ্ধতিতে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। তবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা এতদিন রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে তুলনামূলক ধীর ও ভোগান্তিকর ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে এ সুবিধা পেতেন।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দীর্ঘদিন ধরে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) পদ্ধতিতে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। তবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা এতদিন রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে তুলনামূলক ধীর ও ভোগান্তিকর ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে এ সুবিধা পেতেন।
এরপর ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী ইএফটি’র মাধ্যমে সরকারি অংশের বেতন-ভাতা পেয়েছেন। পরবর্তী ধাপে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে আরও ৬৭ হাজার, ৮৪ হাজার এবং ৮ হাজার ২০০ জন শিক্ষক-কর্মচারী এই সুবিধার আওতায় এসেছেন।
ইতোমধ্যে তারা এপ্রিল মাসের বেতন পেয়ে গেছেন এবং আগামী সপ্তাহেই মে মাসের বেতন-ভাতা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
Leave a Reply