এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের উৎসব ভাতা ৫০ শতাংশে উন্নীত করার বিষয়ে সম্মতিপত্র দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এই খবর অনেক পুরাতন এবং এই খবর যতটা আনন্দের ছিল ঠিক তার মধ্যে ছিল কিছু হতাশারও। এতে শিক্ষকদের ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলেও, সম্মতিপত্রে ‘কর্মচারী’ শব্দটি উল্লেখ না থাকায় কর্মচারীদের ভাতা বৃদ্ধি আপাতত হচ্ছে না বলে নিশ্চিত করা হয়েছিল। এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের জন্য যা একটি কালো অধ্যায় হিসাবে দেখা হচ্ছিল।
বিষয়টি সমাধানে শিক্ষা ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিকবার বৈঠক করার পর অবশেষে আশা করা যায় এই বিষয়ে ইতিবাচক খবরই আসতে চলেছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন সুত্রের মাধ্যমে জানতে পারা গিয়েছে যে, শুধু শিক্ষকই নয় বর্ধিত উৎসব ভাতার অংশ কর্মচারীরাও পেতে চলেছে। আশা করা যায় শিক্ষকদের সাথে আগামী ঈদুল আযহার পূর্বেই এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ২৫% বৃদ্ধি হয়ে ৭৫% হতে চলেছে। সূত্র জানায়, সম্মতিপত্রে কর্মচারীদের নিদিষ্ট করে উল্লেখ না থাকায় এই বিপত্তি বাঁধে তবে শেষ পর্যন্ত সেই সমস্যা কেটে গেছে। শুধু স্কুল ও কলেজের কর্মচারীরা নয় মাদ্রাসা ও কারিগরি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরাও আগামী ঈদুল আযহার পূর্বেই বর্ধিত উৎসব ভাতা পেতে চলেছে। যদিও মাদ্রাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের হিসাব দেরিতে যাওয়ার কারণে একটু জটিলতা তৈরি হয়েছে কারণ শুধু মাদ্রাসা ও কারিগরি জন্য ৩৮ কোটি টাকার প্রয়োজন তবে আশা করা যায় এই সকল সমস্যা কাটিয়ে তারাও আগামী ঈদের পূর্বেই বর্ধিত উৎসব ভাতা পাবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, মাউশি শিক্ষক ও কর্মচারী উভয়ের উৎসব ভাতা ২৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বিদ্যমান ৫০ শতাংশ ভাতা বাড়িয়ে ৭৫ শতাংশ করার বিষয়েও অর্থ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে বিষয়টি পরিস্কার নির্দেশনা ছিলনা। যার কারণে কর্মচারীদের নিয়ে প্রাথমিকভাবে এই সমস্যা তৈরি হয়েছিল।
প্রথমে প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছিল যে, যেহেতু কর্মচারীরা আগেই ৫০ শতাংশ ভাতা পাচ্ছেন বলে তাদের বিষয়টি গুরুত্ব পায়নি। পরে মাউশির পক্ষ থেকে বিষয়টি বেশ ইতিবাচক ভাবে উত্থাপন করলে শেষ পর্যন্ত বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়টি নিয়ে আর কোন জটিলতা তৈরি করতে চায় নি।
জানা গেছে, গত ২১ এপ্রিল মাউশি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ঈদুল আযহা উপলক্ষে শিক্ষক-কর্মচারীদের উৎসব ভাতা বাড়াতে ২২৯ কোটি টাকা পুনঃউপযোজনের প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। অর্থ মন্ত্রণালয় ১৪ মে কেবল শিক্ষকদের জন্য ভাতা বৃদ্ধির সম্মতি দেয়। এতে কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত না করায় নতুন করে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
বর্তমানে পরিস্থিতি এমন যে, ঈদের আগে শিক্ষকদের জন্য বর্ধিত উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন প্রস্তুত হলেও কর্মচারীদের নিয়ে এই সৃষ্ট জটিলতার কারণে এখন অবধি তা জারি করা সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, যদি দ্রুত সমস্যা সমাধান করে দ্রুতই প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
প্রজ্ঞপন জারি করতে দেরি হওয়ায় বর্তমানে শিক্ষক-কর্মচারী উভয়ের মধ্যেই হতাশা ও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে বর্তমানের নতুন যে সংবাদ তা হলো এবারের ঈদের পূর্বে মাউশি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত মোতাবেক বর্ধিত উৎসব ভাতা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা আশা করা যায় কেটে যাবে। এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের দাবি শতভাগ উৎসব ভাত পাওয়ার তার পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হলেও কিছুটা বৃদ্ধি হওয়ায় কিছুটা স্বস্তির নিঃস্বাস তো ফেলা যাবে। দীর্ঘ ২১ বছর যেখানে একটি টাকাও উৎসব ভাতার বৃদ্ধি পায়নি সেখানে তো এই ২৫% বৃদ্ধি পুরোটা স্বস্তিদায়ক না হলেও কিছুটা আরামদায়ক তো বটেই।
Leave a Reply