কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আওতাধীন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারীরা গত দুই মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না, যার ফলে তারা চরম অর্থনৈতিক সংকটে দিন কাটাচ্ছেন। সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি মাসে ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) পদ্ধতির পাইলটিং কার্যক্রমের আওতায় তাদের বেতন প্রদান করা হয়েছিল। এরপর মার্চ ও এপ্রিল—দুই মাস পার হয়ে গেলেও নতুন করে কোনো বেতন পাননি তারা।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতো দ্রুত ও নির্ভরযোগ্যভাবে বেতন পৌঁছে দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন ইএফটির মাধ্যমে প্রদানের উদ্যোগ নেয়। এ সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে দেশের আটটি বিভাগের আটটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মোট ২২১ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন পরীক্ষামূলকভাবে ইএফটির মাধ্যমে প্রদানের ব্যবস্থা করে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর। ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথম দফায় তারা এই পদ্ধতিতে বেতন পেয়ে আশাবাদী হলেও মার্চ ও এপ্রিল মাসে বেতন না পেয়ে হতাশ হয়েছেন।
বেতন না পাওয়ার বিষয়ে কথা বললে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. খ ম কবিরুল ইসলাম বলেন, “বেতন বন্ধ থাকার পেছনে কোনো যৌক্তিক কারণ দেখছি না। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখছি এবং দ্রুত শিক্ষকদের বেতন প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এদিকে বেতন না পাওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষকরা। বরিশাল বিভাগের এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “ইএফটি পদ্ধতিতে বেতন দেওয়া হলে আমাদের ভোগান্তি কমবে ভেবেছিলাম। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, দুই মাস ধরে বেতন বন্ধ। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, ধার করতে হচ্ছে আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকে। সামনে কোরবানি ঈদ—এই অবস্থায় বেতন না পেলে পরিবার-সন্তানদের সামনে দাঁড়ানোই কঠিন হয়ে পড়বে।”
শিক্ষকরা বলছেন, সরকারের আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগে তারা সমর্থন জানালেও কার্যকর ব্যবস্থাপনার অভাবে এই উদ্যোগ এখন তাদের দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে। তারা অবিলম্বে বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং ইএফটি কার্যক্রমকে স্থিতিশীলভাবে পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন।
Leave a Reply