1. admin@kp-nat.com : admin : Ayub Ali
  2. ayub.bhs@gmail.com : Ayub ali : Ayub ali
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ০১:১৪ অপরাহ্ন
Title :
এখন থেকে সরকারী চাকুরীজিবীদের মূল বেতন প্রতি বছর বৃদ্ধি পাবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধি আমলাতান্ত্রিক জটিলতার খপ্পরে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধির সর্বশেষ আপডেট NID তে নাম, জন্মতারিখ ভুলের কারণে ৫ হাজারের অধিক শিক্ষক কর্মচারীর বেতন বন্ধ শিক্ষা ও শিক্ষকদের নিয়ে আমলাদের কোন চিন্তাভাবনা নেই, চিন্তুা শুধু ট্রেনিং নিয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বদলি শুরুর দিনক্ষন সম্পর্কে যা জানাল মাউশি অনুদান পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ জুন মাসের বেতনের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে কোনদিন যাবে যা জানাল মাউশি ৩০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান পাচ্ছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীগণ ইএফটি তথ্য সংশোধন সর্ম্পকে সর্বশেষ যা জানাল মাউশি

এপ্রিলের বেতন নিয়ে যখন অনিশ্চয়তা, মে মাস ও উৎসব ভাতা নিয়ে তাহলে আশঙ্কা।

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫
  • ৭৬১ Time View
এপ্রিলের বেতন নিয়ে যখন অনিশ্চয়তা, মে মাস ও উৎসব ভাতা নিয়ে তাহলে আশঙ্কা।

বাংলাদেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা আজ গভীর হতাশা ও দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন পার করছেন। এপ্রিল মাসের বেতন এখনও না পেয়ে অনেকে পরিবার চালানো বা নিত্যপ্রয়োজন মেটানো নিয়ে চিন্তায় আছেন। অথচ সামনে মে মাস, রোজার ঈদ পেরিয়ে কোরবানির ঈদের প্রস্তুতিও প্রায় শুরু হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠে আসে— “এপ্রিলের বেতনই যদি ঝুলে থাকে, তবে মে মাসের বেতন এবং ঈদুল আজহার উৎসব ভাতা কবে পাওয়া যাবে?”

এই প্রশ্নটা আজ হাজার হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর হৃদয়ের চিৎকার হয়ে উঠেছে। এটা শুধুই আর্থিক প্রশ্ন নয়— এটা মর্যাদা, ন্যায়বিচার ও মানবিকতার প্রশ্ন। প্রতিমাসে যদি এভাবে আর্থিক নিশ্চয়তার জায়গা অনিশ্চয়তাপূর্ণ হয় তাহলে মনোবল দিন দিন শন্যের কোঠায় পৌছায়।

এপ্রিলের বেতনে যে অনিশ্চয়তা দেখা গেছে

২০২৫ সালের এপ্রিল মাস শেষ হয়ে গেছে। অথচ এখনো (মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত) বেশিরভাগ এমপিওভুক্ত(মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষক কর্মচারীরা এপ্রিলের বেতন পেয়েছেন) শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের এপ্রিলের বেতন পাননি। যে বেতনের ওপর তাঁদের পুরো মাসের দৈনন্দিন খরচ নির্ভর করে, সেই অর্থ সময়মতো হাতে না পেলে জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলিই থাকে অনিশ্চিতঃ

  • বাসা ভাড়া, বিদ্যুৎ-পানি বিল, বিদ্যুতের বিল।
  • সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ।
  • নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয় বাবদ খরচ
  • চিকিৎসা ও ঋণের কিস্তি।
  • বাসায় বৃদ্ধ বাবা মা থাকলে তাদের খরচ।

এত কিছুর মাঝেও তাঁরা শ্রেণিকক্ষে যান, পাঠদান করেন, শিক্ষার্থীদের সাথে সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমিক অংশগ্রহণ করেন— কারণ এটা কেবল পেশা নয়, দায়িত্ব। কিন্তু প্রশ্ন থাকে— রাষ্ট্র তাঁদের দায়িত্ব কতটা পালন করছে? আমরা যেভাবে এ রাষ্ট্রের দেওয়া দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছি তাহলে রাষ্ট্র কেন তার দায়িত্ব পালন করতে এত গড়িমসি করবে। এ রাষ্ট্র কি সারাজীবন এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ করে যাবে। এদেশের অপরাপর অন্যান্য পেশাজীবিরা যেখানে রাষ্ট্র নিকট থেকে পরিপূর্ণ অর্থনৈতিক সাপোর্ট পায় সেখানে আমরা কেন এরকম বৈষম্যের শিকার হব প্রতিনিয়ত। এদেশে কোনদিনও এমন বিবেকবান শাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে না যেদিন সকল অনিয়ম দুর হবে আর গড়ে উঠবে সমাজের সকল ক্ষেত্রে নিয়মের কঠোর দেয়াল।

মে মাসের বেতন ও উৎসব ভাতা: অনিশ্চয়তার কালো ছায়া দিন দিন বাড়ছে।

মে মাসের বেতন:

যদি এপ্রিলের বেতনই এখনো অনিশ্চিত থাকে, যা পেতে পেতে কমপক্ষে ২০ থেকে ২২ তারিখ হয়ে যাবে তবে মে মাসের বেতন— যা জুনের শুরুতে প্রদানের কথা— তা সময়মতো মিলবে কি না, তা নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে। আর জুনের শুরুতে অর্থাৎ ১ থেকে ২ তারিখের মধ্যে যদি মে মাসের বেতন না পাওয়া যায় তাহলে কিন্তু ঘোর আমানিশার অন্ধকার নেমে আসবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের মাঝে।

ঈদুল আজহার উৎসব ভাতা:

২০২৫ সালের কোরবানির ঈদ সম্ভাব্য ৬ বা ৭ জুনে। অর্থাৎ উৎসব ভাতা জুন মাসের শুরুর দিকে অর্থাৎ ১ থেকে ২ তারিখের মধ্যে দেওয়া প্রয়োজন। বাস্তবতা হলো— উৎসব কিন্তু সরকারি ও এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের জন্য একসাথে শুরু হয়। তাহলে তাদের জন্য বরাদ্দকৃত বেতন ও উৎসব ভাতা তারা সময়মতো পাবে। আর এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত উৎসব ভাতা নিয়ে প্রতিনিয়ত এমন অনিশ্চয়তা দেখা দিবে, এটা কোন ধরনের নিয়ম। এ নিয়ম আর কতদিন চালু থাকবে। এমনিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য বরাদ্দকৃত উৎসব ভাতা যৎসামান্য সেটাও যদি সময়মতো ছাড় না দেওয় না হয়, ব্যাংক যাচাইকরণে দেরি, অথবা তথ্যে অসামঞ্জস্যতা, ইদানিং নতুন সমস্যা আবার এর সাথে যুক্ত হয়েছে যার নাম দেওয়া টেকনিক্যাল সমস্যা ইত্যাদি নানাবিধ কারণে দিনের পর দিন হয়রানি করতেই থাকে তাহলে কতদিন এভাবে সকল অন্যায় মেনে নিবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারী সমাজ। দিন দিন কিন্তু আমাদের সহ্যের বাঁধ ভেঙ্গে যাচ্ছে। মনে রাখবেন আমরা কিন্তু শিক্ষক আমাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে যেমন সমাজের উচু তলার মানুষ তৈরী হয় তেমনি তৈরী হয় সমাজের বৈষম্য নিরসন কারী প্রতিবাদী সমাজ। প্রতিবাদের মুলমন্ত্র কিন্তু আমরাই শেখাই। তারমানে প্রতিবাদের ভাষা কিন্তু আমাদের খুব ভালভাবে জানা রয়েছে। আমরা প্রতিবাদ ভাষা সহজে ব্যবহার করি না কারণ এতে সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিবে। তাই বলে এভাবে কতদিন মেনে নেওয়া যায়। এভাবে কতদিন গুমরে গুমরে আমরা পর্দার আড়ালে গিয়ে কান্না করব। সারাজীবনই কি আমাদের উৎসবের সময় উৎসব ভাতা পাওয়ার জন্য অনিশ্চয়তার প্রহর গুনব।

বর্তমানে যে পরিস্থিতি আসতে চলেছে তাতে করে এই পরিস্থিতিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের ঈদের বাজার করা, পশু কেনা বা পরিবার নিয়ে মানসিক শান্তিতে ঈদ উদযাপন করা যেন অলীক কল্পনায় পরিণত হতে চলেছে।

সমস্যার গভীরতার দিকগুলোঃ

  1. প্রক্রিয়ার জটিলতা ও কেন্দ্রীয়করণ:
    শিক্ষকদের বেতন এখন কেন্দ্রীয়ভাবে অনুমোদিত ও ছাড় হয়। কিন্তু এত স্তরের অনুমোদন ও যাচাই লাগায় পুরো প্রক্রিয়া বিলম্বিত হয়। তাই উচিত এসকল ব্যবস্থা বিকেন্দ্রিকরণ করা এতে কাজের চাপ কমবে এবং দ্রুততর সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা যাবে।
  2. তথ্য যাচাইকরণে বিলম্ব:
    EFT-ভিত্তিক বেতন প্রক্রিয়া চালু করার মুল উদ্দেশ্য হলো যাতে বেতন ভাতা প্রদানের জটিলতা কমানো যায় কিন্তু মাউশি প্রতিনিয়ত এ ব্যবস্থাকে কেন জানিনা জটিল করে তুলছে। তাই এটিকে আরও কিভাবে সহজ কৌশলে বাস্তবায়ন করা যায় সেই কৌশল বের করতে হবে।
  3. কার্যকর মনিটরিংয়ের অভাব:
    শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ দল নেই যারা সমস্যা সনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারে।
  4. ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অনুপস্থিতি:
    সময়োপযোগী পরিকল্পনা বা স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার ব্যবস্থার মাধ্যমে এই বিলম্ব এড়ানো সম্ভব, কিন্তু সেগুলোর যথাযথ প্রয়োগ নেই।

এই অবস্থার উত্তরণ কীভাবে সম্ভব?

  1. বেতন ও ভাতা প্রদানের সময়সীমা আইনগতভাবে নির্ধারণ করা হোক (যেমন: প্রতি মাসের ১-৩ তারিখের মধ্যে)
  2. উৎসব ভাতা প্রদানে আলাদা বরাদ্দ এবং Fast Track ছাড় প্রক্রিয়া চালু করা হোক
  3. বেতন প্রদান ব্যবস্থার ডিজিটাল অডিট ও পর্যালোচনা করা হোক
  4. শিক্ষক-কর্মচারী সংগঠনগুলোকে সরকারের সাথে যৌথ সমন্বয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হোক
  5. যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর কারণে বিলম্ব ঘটে, তাঁদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা হোক

পরিশেষে যে কথা বলব তা হলো দয়া করে আমাদের নিয়ে এভাবে খেলা করা বন্ধ করুন। আজ শিক্ষক সমাজের কণ্ঠে একটাই ধ্বনি—

“আমরা রাজপথ চাই না, আমরা কেবল সম্মান চাই। আমরা লড়াই চাই না, কেবল সময়মতো বেতন ও উৎসব ভাতা চাই।”

একটি রাষ্ট্র যদি তার শিক্ষকদের মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয়, তবে সেটি আসলে তার ভবিষ্যৎ নির্মাণেই ব্যর্থ হচ্ছে।

আজ প্রয়োজন দ্রুত সিদ্ধান্ত, সময়মতো বরাদ্দ, এবং সর্বোপরি একটি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আমার খবর
© All rights reserved © 2025 Kisukhoner Pathshala
Customized By BlogTheme