ঢাকা, ২৯ এপ্রিল:
জাতীয়করণ থেকে বাদ পড়া সব চলমান বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবিলম্বে জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে টানা তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
বক্তারা জানান, ২০১৩ সালে তৎকালীন সরকার সারাদেশের সব বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দিলেও গেজেট অনুযায়ী ৩০ হাজার ৩৫২টি বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ২৬ হাজার ১৯৩টি জাতীয়করণ করা হয়। বাকি ৪ হাজার ১৫৯টি বিদ্যালয় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, প্রশাসনিক গাফিলতি এবং নানা কারিগরি কারণে জাতীয়করণের বাইরে থেকে যায়।
শিক্ষক নেতারা বলেন, বাদ পড়া বিদ্যালয়গুলো ২০১২ সালের মে মাসের আগেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং পাঠদানের অনুমতির জন্য আবেদনও করা হয়েছিল। কিন্তু তৎকালীন কিছু কর্মকর্তার কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণে এসব বিদ্যালয়ের অনেকগুলো যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগই পায়নি।
এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২০১২ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণসহ প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তাদের জাতীয়করণ করা হয়নি। এমনকি উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে যাচাই-বাছাই শেষে ১ হাজার ৩০০ বিদ্যালয়ের নাম শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত থাকলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
সংগঠনের সভাপতি মামুনুর রশিদ খোকন বলেন, “দীর্ঘদিন পাঠদান পরিচালনা করেও আমরা ন্যায্য মর্যাদা পাইনি। আমাদের স্কুল জাতীয়করণ না হওয়ায় বেতন-ভাতা নেই, টিফিন নেই, শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি পাচ্ছে না। অন্যের শিশুকে শিক্ষিত করছি, অথচ নিজেদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।”
মহাসচিব মো. ফিরোজ উদ্দিন বলেন, “২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি সব বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেওয়া হলেও ফ্যাসিস্ট সরকার ৪ হাজার ১৫৯টি প্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় বাদ দেয়।”
তিনি বলেন, “আমরা কোনো দয়া নয়, ন্যায্য অধিকার চাই। উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপ চাই, যেন এই অন্যায় বঞ্চনা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।”
সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী লিটন বলেন, “বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব। শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বিশ্বদরবারে বাংলাদেশ আজ শিক্ষা ও উন্নয়নের মডেল। আমরা আশাবাদী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার এই সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন।”
অবশেষে, এ প্রশ্নটা থেকেই যায়:
যে শিক্ষক জীবনের সবটুকু নিংড়ে দেশের ভবিষ্যৎ গড়েন, তিনি কেন বছরের পর বছর ধরে নিজের ভাগ্য নিয়ে রাস্তায় বসে থাকবেন?
Leave a Reply