1. admin@kp-nat.com : admin : Ayub Ali
  2. ayub.bhs@gmail.com : Ayub ali : Ayub ali
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৪৯ অপরাহ্ন

“স্বার্থবাদী নেতৃত্ব ও আমলাতান্ত্রিক নিপীড়নে এমপিও শিক্ষা আজ বিপর্যস্ত”

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১১৮ Time View
*"স্বার্থবাদী নেতৃত্ব ও আমলাতান্ত্রিক নিপীড়নে এমপিও শিক্ষা আজ বিপর্যস্ত"*

আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে?
মুখে হাসি বুকে বল, তেজে ভরা মন
‘মানুষ হইতে হবে‘ – এই যার পণ৷
বিপদ আসিলে কাছে হও আগুয়ান
নাই কি শরীরে তব রক্ত, মাংস, প্রাণ?
হাত পা সবারই আছে, মিছে কেন ভয়?
চেতনা রয়েছে যার, সে কি পড়ে রয়?
সে ছেলে কে চায় বল, কথায় কথায়উ
মনে প্রাণে খাট সবে, শক্তি কর দান,
তোমরা ‘মানুষ’ হলে দেশের কল্যাণ৷

উপরের কবিতাটি আমরা অনেকে পড়েছি বার বার পড়েছি এবং কবিতাটির দ্বারা উদাহারণ টেনে অন্যকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। তবে নিজের মধ্যে কখনও সেই গুনাগুণ আছে কিনা তা পরখ করে দেখিনি কখনও।

আমি এখানে কাউকে ছোট বড় করার উদ্দেশ্যে কিছু লিখছি না যদি আমার লেখা দ্বারা কেউ সামগ্রিক ভাবে মনে কষ্ট পান তাহেলে আশা করি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। যাই হোক আসল প্রসংগে আসি তা হল আমরা এমপিওভুক্ত শিক্ষক সমাজ আমাদের সংগঠন সংখ্যা ৬২টি। এই ৬২ সংগঠনের মধ্যে কে বড় আর কে ছোট তাই জাহির করতে তারা সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকে আর এটা করতে গিয়ে তাদের আসল যে কাজ তারা সেটাই ভুলে যান। দেখেন আমরা তো কেউ তাদের উপর আমাদের দায়িত্ব বোঝা হিসাবে চাপিয়ে দেই নি। তারা নিজেরা কিন্তু ইচ্ছাকৃত ভাবে দায়িত্ব মাথা পেতে নিয়েছে। দায়িত্ব নেওয়ার পর দায়িত্ব পালন করার জন্য আর কোন ইচ্ছা তাদের দেখা যায় না। তাদের দেখা যায় শুধু মাঝে মাঝে এখানে ওখানে কয়েকজন মিলে গিয়ে সেলফিবাজি করতে, কাউকে আবার দেখা যায় কিছুদিন পর পর সামাজিক মাধ্যমে লাইভে এসে নিজেকে জাহির করতে যে, আমি এই করেছে, সেই করেছি বাস্তবে সে কিন্তু কিছুই করেনি যা কিছু হয়েছে অন্যের প্রচেষ্টায় বা আপনাআপনি। কিছু কিছু সংগঠন আছে মৌসুমী অর্থাৎ রাজনৈতিক পালাবদলের পর তাদের আর দেখা যায় না। প্রকৃত সেই সংগঠক আমরা আজ পর্যন্ত দেখা পেলাম না যে কিনা শিক্ষক তথা এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের প্রকৃত নেত হিসাবে কাজ করবে যার থাকবে না ব্যাক্তি স্বার্থ, থাকবে না ক্ষমতার লোভ। থাকবে না অর্থের মোহ। সেই নেতা যদি আমাদের থাকত এই দেশে তাহলে আমাদের পেশার এই করুন দশা কোনদিন হত না, তাহলে আমাদের নিয়ে এদেশের আমলারা এভাবে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারতনা।

আমাদের শিক্ষক নেতাদের বড় অভিযোগ যে, আন্দোলনের ডাক দিলে সাধারণ শিক্ষক কর্মচারীরা আন্দোলনের মাঠে হাজির হয় না। হ্যাঁ বিষয়টি ১০০% সত্যি এর মধ্যে কোন এক বিন্দু মিথ্যা নেই। একটা কথা বলুন তো আপনারা সাধারণ শিক্ষকদের ডাকলে না আসার কারণ কি আপনারা জানেন না সত্যি। নেতৃত্বদানকারী নেতা যদি ডেকে কাউকে না পায় তার মানে কি দাঁড়ায় এটাই দাঁড়ায় যে সাধারণ শিক্ষক কর্মচারীরা কোন ভাবেই আপনাদের বিশ্বাস করে না। সাধারণ শিক্ষক কর্মচারীদের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করার মতো কোন অর্জন কি আপনারা আজ অবধি দেখাতে পেরেছেন।

আপনারা আন্দোলনের সঠিক পলিসি নির্ধারণ করতে পারেন না যে কিভাবে আন্দোলন সামনে অগ্রসর হবে কিভাবে প্রতিকুলতা জয় করতে হয়। কখন আন্দোলন করতে হয়, কোন সময় আন্দোলন করতে হয়, কখন প্রতিপক্ষের সহিত মিটিং করতে হয়। আপনারা আন্দোলনের নামার আগের রাতে মিটিং বসেন এটা কোন ধরনের সমঝোতা। সমঝোতা যদি করতে হয় তাহলে আন্দোলনে যাওয়ার আগে অথবা আন্দোলন চলাকালীন সময়ে।

সর্বশেষ গত ২২/০৪/২৫ তারিখে সর্বশেষ আপনারা কয়েকজন মিলে মন্ত্রণালয়ে গেলেন সিনিয়র সচিব মহোদয়ের সাথে মিটিং করতে কখন গেলেন যখন তার আগের দিন অর্থ মন্ত্রণালয়ে উৎসব ভাতার প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আর মিডিয়াতে রটালেন যে, আপনারা যাচ্ছেন উৎসব ভাতা বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে। কিন্তু আসল বাস্তবতা কিন্তু তা বলে না সেখানে উৎসব ভাতা ছাড়া অন্য আরও অনেক এজন্ডা ছিল এবং সেগুলোই সেখানে প্রাধান্য পেয়েছে আপনাদের নিকট। ওখানে যে বিষয় গুলো ছিল তার বেশ কয়েকটি ছিল অর্থনৈতিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়। নিচে আপনাদের সাথে যাওয়া একটি সংগঠনের প্রেস রিলিজ দিলাম-

এখানে মিটিংয়ে যারা যারা গিয়েছিলেন তাদের মধ্যে কিন্তু রয়েছে অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক এবং একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের ছত্র ছায়ায় পালিত সংগঠনের স্বঘোষিত নেতা। এখন বিষয়টি একবার ভেবে দেখেছেন যে, অবসর প্রাপ্ত ঐ নেতা তো আমাদের সাথে কোন সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারবেনা। কারণ তিনি তো আর চাকুরী করেন না। তাহলে তার তো বোনাস বৃদ্ধি হলে কোন লাভ হবে না। তাহলে উনি ঐখানে কেন গিয়েছেন। গিয়েছেন এইজন্য যে, ঐখানে একটি মধুর হাঁড়ি আছে সেই হাঁড়ির বাটোয়ারার ভাগ কিভাবে পাওয়া যায়। ঐ শিক্ষক নেতা পূর্বেও বিভিন্ন ভাবে শিক্ষকদের বিভিন্ন চাওয়া পাওয়ার দাবি গুলো যাতে বর্তমান সরকারের হাত ধরে না আসে তার বিরোধিতা করেছেন।

এতক্ষণ তো করলাম ঘরের শত্রু বিভীষণ সেই আলাপ, এখন আসি তাদের ব্যাপারে দুই একটি কথা বলার জন্য যারা কিনা এদেশের নীতি নির্ধারনী কাজ করে থাকেন ইংরেজী যাদের বলা হয় Policy Maker। হ্যাঁ তারা পলিসি মেক করে কিভাবে তাদের জীবন ব্যবস্থাকে ফুঁলিয়ে ফাঁপিয়ে আরও স্থুলকায় করা যায় সেই বিষয়ে। তারা পলিসি মেক করে কিভাবে তাদের উপর নির্ভরশীল সমাজ বা ব্যাক্তিদের ঠকানো যায়, তারা সারাজীবন পলিসি মেক করে কিভাবে দেশের টাকা বিদেশে পাচার নিজে করতে পারে এবং অন্যদের পাচারের রাস্তা শিখিয়ে দেয়। তাদের মাথার মধ্যে সারাক্ষণ ঘুরপাক খায় কিভাবে এ দেশের সকল পেশার, সকল শ্রেণীর মানুষদের দাবিয়ে রাখা যায়। কিভাবে তাদেরকে স্বাবলম্বী হতে বাঁধা প্রদান করা যায়।

তেমনি আজীবন এদেশের আমলাদের অবহেলা বা চক্রান্তের শিকার এক পেশার নাম হল এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পেশা। এ পেশায় যারা কর্মরত আছে তাদেরকে এদেশের আমলারা সারাজীবন কিভাবে তাদের ন্যর্য চাওয়া পাওয়া থেকে বঞ্চিত রাখা যায় সেই চেষ্টা করে এসেছে। কখনও তারা এদেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের সুনজরে দেখে নি। কখনও অবহেলা, কখনও অবজ্ঞা, কখনও অপমান ইত্যাদির মাধ্যমে প্রতিনিয়ত ছোট করেই গেছেন। এদেশের স্বনামধন্য আমলারা কখনও ভাবেই না যে, এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার শতকরা ৯৭ ভাগ শিক্ষা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মাধ্যমে হয়।

আমাদের আমলাদের সর্বশেষ এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি যে আক্রোশোর সংযোজন করেছেন তা হলো এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বর্তমান সরকারের ঘোষণাকৃত বিভিন্ন চাওয়া পাওয়ার বিষয়ে সরাসরি বিরোধিতা করা বা গড়িমসি করা। এবার যে নীতি গ্রহণ করেছেন আমলারা অতীতের সবকিছুকেই ছাড়িয়ে গেছে এবার। এবার তারা টার্গেট করেছে এমপিওভুক্ত ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের।

কিন্তু কেন? এই প্রশ্নের উত্তর কিভাবে দিবে আমাদের আমলারা। কেন তারা বার বার এভাবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের তাদের রোষানলের শিকার করেন। আমাদের দেশের সরকার পরিচালনার সাথে যারা জড়িত তাদের কি এ বিষয়ে কোন ভুমিকা পালন করার প্রয়োজন তারা দেখে না।

এই অবিচার বা অবহেলা শুধুমাত্র নীতিগত সমস্যাই নয়, এটি এক ধরনের মানসিকতা ও কাঠামোগত বৈষম্যের বহিঃপ্রকাশ। এজন্য দরকার শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বর, সমাজে তাদের অবদান তুলে ধরা, এবং সরকারকে নীতিনির্ধারণে চাপ প্রয়োগ করা।

আরও জানতে ক্লিক করুন

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আমার খবর
© All rights reserved © 2025 Kisukhoner Pathshala
Customized By BlogTheme