1. admin@kp-nat.com : admin : Ayub Ali
  2. ayub.bhs@gmail.com : Ayub ali : Ayub ali
বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫২ অপরাহ্ন

শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প (সেসিপ) এর মেয়াদ বৃদ্ধি।

  • Update Time : সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫
  • ২২৯ Time View
শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প (সেসিপ) এর মেয়াদ বৃদ্ধি।

গত বছরের ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন আওয়ামী লীগ সিন্ডিকেট। যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে ঘুষ, দুর্নীতির অভিযোগ।

সংশোধিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেসিপ) প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

রোববার (২০ এপ্রিল) পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ও একনেকের চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

জানা গেছে, এ নিয়ে সাতবার বাড়ল এ প্রকল্পের মেয়াদ।

অভিযোগ রয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন আওয়ামী লীগ সিন্ডিকেট। যাদের বিরুদ্ধে রয়েছে ঘুষ, দুর্নীতির অভিযোগ।

মাধ্যমিক শিক্ষা স্তরে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন, দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং সমান সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে আধুনিক মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে এ প্রকল্প শুরু হয়। এডিবির প্রকল্প ঋণ ও জিওবি থেকে এ প্রকল্প ব্যয় বরাদ্দ দেওয়া হয়।

২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হওয়া প্রকল্পটির প্রাথমিক ব্যয় ছিল ১ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা। সময় ছিল ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। বর্তমানে এটির ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮২৬ কোটি টাকা। প্রকল্পটি শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮৯ শতাংশ।

এ প্রকল্পের মেয়াদ আর না বাড়াতে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অভিযোগ পাঠিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। লিখিত অভিযোগে তারা জানান, সেসিপ প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ প্রকল্পের কর্মকর্তারা ঘুষ, দুর্নীতি ও বিগত ভোটে সরকারকে সরাসরি সহযোগিতা করেছে। তাছাড়া এ প্রকল্পের অধিকাংশ কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও সাবেক মন্ত্রী দীপু মনি সিন্ডিকেটের যারা দেশের নির্দিষ্ট কয়েকটি জেলা থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। এসব জেলা হচ্ছে গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কুষ্টিয়া, কিশোরগঞ্জ।

সর্বশেষ অনুমোদন অনুযায়ী প্রকল্পটির মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ৩৮২৬.৯২৪৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে জিওবি ১৬৮১.৯২৪৭ কোটি টাকা ও এডিবির প্রকল্প ঋণ ২১৪৫.০০ কোটি টাকা। শুরুতে এ প্রকল্পের মেয়াদকাল ছিল চার বছর পর এটি বৃদ্ধি পেয়ে ১১ বছরে এসে দাঁড়িয়েছে।

সেসিপ প্রকল্প নিয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘মূলত যে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এ প্রকল্পে অর্থায়ন করে আসছিল, তারা আর নতুন করে অর্থায়ন করবে না। যে কারণে এ প্রকল্পে ব্যয় বাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এটির কার্যক্রম পরিচালনা করা যাচ্ছে না। এটিতে যে জনবল রয়েছে, তাদের বেতন-ভাতাও দেওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে এটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।’ এ মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রকল্পটির মেয়াদ আর বাড়বে না বলে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা।

সাধারণত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো নিয়মিত পরিদর্শনের জন্য উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত রাজস্ব খাতে জনবল রয়েছে। কিন্তু মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শনে তেমন কোনো কাঠামো নেই। সেজন্য ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে এ প্রকল্পটি হতে নেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে প্রকল্পটির মেয়াদ ছিল ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত। পরে ধাপে ধাপে মেয়াদ বেড়েছে প্রকল্পটির। প্রকল্পটিতে যারা কাজ করছেন তাদের কারোর সরকারি চাকরির বয়স নেই। আর এ পরিদর্শন কার্যক্রম চলমান রাখারও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সেই বিবেচনায় এ প্রকল্পের জনবলকে রাজস্ব খাতে স্থায়ী জনবল হিসেবে স্থানান্তরের বিষয়ে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে। কিন্তু সেটির বাস্তবায়ন ঝুলে আছে। এতে প্রকল্পে যারা কর্মরত আছেন তারা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, এ প্রকল্পে যারা বিদ্যালয় পরিদর্শক হিসেবে কাজ করছেন, তাদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের বিষয়ে সরকারের কোনো আপত্তি নেই। আমরাও চাই যে, তারা রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত হোক। কেননা মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম তদারকির জন্য এরকম একটি ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কিছু জটিলতা রয়েছে। প্রকল্পের জনবলকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রশ্নে একটি পক্ষ আপত্তি জানিয়ে আদালতে মামলা করেছে। ওই মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এসব জনবলকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা যাচ্ছে না। তবে সরকারের নীতিগত অবস্থান হলো, সরকার এ প্রকল্পের জনবলকে প্রয়োজনীয়তার নিরিখেই রাজস্ব খাতে স্থানান্তরে আগ্রহী।

শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, প্রকল্পে কর্মকর্তারা বছরের পর বছর প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করে দেশ-বিদেশে নামে-বেনামে সম্পদ গড়ে তুলেছেন। প্রকল্পের কেনাকাটা, প্রশিক্ষণ, কর্মশালার নামে দেশি-বিদেশি ট্যুর করে দেশের অর্থ নষ্ট করে চলেছেন। এ প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি না করে এই পরিমাণ অর্থ জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে দান করার দাবিও করেন তারা।

পরিকল্পনা কমিশনের সেসিপ-সংক্রান্ত ৯ মার্চের সর্বশেষ সভায় বলা হয়েছে, এ প্রকল্পে নিয়োজিত জনবল যে সেবা দেন, তা মূলত শিক্ষা খাতের নিয়মিত কার্যক্রম; যা রাজস্ব খাতে নিয়োজিত জনবল দিয়ে করানো সমীচীন। প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ৩০ হাজারের বেশি বেসরকারি বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার প্রায় ৫ লাখ শিক্ষকের ইএমআইএস ও এমপিও বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে ইএফটিতে বেতন-ভাতা, বই বিতরণ কার্যক্রমে যুক্ত। এসব কাজ ভবিষ্যতে এ প্রকল্পে না রাখারও সুপারিশ করা হয়। তবে এ দফায়ও আরও দুই বছর এ প্রকল্প চলবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বৈঠকে উপস্থিতি প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, সেসিপ প্রকল্পটি খুবই অপরিহার্য। এটি বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এটি ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে নানা নামে চলে আসছে। পরে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে এটি সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেসিপ) নামে বরাদ্দ পায়।

তিনি আরও জানান, সচিব ড. কাইয়ুম আরা বেগমের সভাপতিত্বে আলোচনায় জানানো হয়, এ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। একই সঙ্গে এ প্রকল্পের অত্যাবশ্যকীয় কার্যক্রম রাজস্ব বাজেটের আওতায় কীভাবে খাত তৈরি করে নতুন জনবল নিয়োগ করা যায়, তাও বের করবে।

সেসিপ প্রকল্পের কর্মকর্তারা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসগুলোতে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, কারিকুলাম বাস্তবায়ন, হাতেকলমে বিজ্ঞান শিক্ষা প্রসার, আইসিটিভিত্তিক শিক্ষার প্রসার, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণ, স্কুল মনিটরিং ও নিবিড় অ্যাকাডেমিক সুপারভিশন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেল শক্তিশালীকরণ ও সফটওয়্যারের সার্বিক তত্ত্বাবধানের কাজে নিয়োজিত। ফলে এসব সেবা তারা নিয়ন্ত্রণ করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

2 responses to “শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প (সেসিপ) এর মেয়াদ বৃদ্ধি।”

  1. […] আরও পড়ুন……..শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প (সেসিপ) এর মেয়… […]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আমার খবর
© All rights reserved © 2025 Kisukhoner Pathshala
Customized By BlogTheme