উৎসব ভাতা ও অন্যান্য ভাতা নিয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের উৎকণ্ঠা ও শঙ্কা বাস্তবভিত্তিক ও যুক্তিযুক্ত—এটি কেবল আর্থিক নিরাপত্তার বিষয় নয়, সম্মান ও মর্যাদার সাথেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কারণ এদেশের প্রেক্ষাপটে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো কোন কালেই এদেশের সরকার বা সরকার ব্যবস্থার সাথে ঔতোপ্রতোভাবে জড়িত তাদের সুদৃষ্টিতে ছিল না। এদেশের সরকার ও আমলারা চিরকালই এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের রাষ্ট্রের বোঝা মনে করে। তারা চান এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা সর্বদা প্লেটোর রাষ্ট্র দর্শন মেনে চলুক।
গত রমজান মাসের শুরুতে একটি শিক্ষক সংগঠনের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন শিক্ষা উপদেষ্টা তার বিদায়ী প্রেস বিফিংয়ে বলেছিলেন যে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের সকল বৈষম্য দুরীকরণে সরকার একমত তবে বৈষম্য এর অবস্থা এত বেশি হয়ে গেছে যে, তা এক বছর বা দুবছরের বাজেট দিয়ে মেটানো সম্ভব নয়। তবে আমরা নীতিগতভাবে চাই সেই বৈষম্যগুলো নিরসন হোক। তাই এবছর থেকে আমরা হয়ত শুরু করে যাব যাতে করে দিনে দিনে এই ধারা অব্যাহত রেখে বৈষম্যগুলো নিরসন হয়।
আরও পড়ুন…..এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের এ-ই ভোগান্তির শেষ কোনদিন?
কিন্তু অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় হল এই যে, গত ১৩ এপ্র্রিল যখন ঐসময়ের আন্দোলনরত সংগঠনের নেতৃবৃন্দ যখন শিক্ষা উপদেষ্টার নিকট তাদের বয়ানকৃত অর্থাৎ বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা ও ঐ প্রেস বিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন কিন্তু বর্তমান শিক্ষা উপদেষ্টার নিকট কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চান। তখন বর্তমান শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন কই আমি তো এই বিষয়ে কিছু জানি না। তিনি আরও বলেন তাহলে আমাকে ঐ সময়ের পেপার কাটিংগুলো সরবরাহ করেন। এই হলো আমাদের অভিভাবক। সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয় হলো যে, বিদায়ী উপদেষ্টা যখন প্রেস বিফিং করেন তখন কিন্তু সেখানে বর্তমান শিক্ষা উপদেষ্টাও উপস্থিত ছিলেন তারপরও তিনি যদি এখন বলেন যে, আমি তো আপনাদের এই সকল বিষয়ে কিছু জানি না। তাহলে বিষয়টি নিয়ে উৎকন্ঠা ও শঙ্কা দুটোই আছে আমার মনে।
অন্যান্য মন্ত্রণালয়ে গিয়ে যে খবর পাওয়া গিয়েছে সেখান হতে বলা হয়েছে যে, হ্যাঁ আপানাদের উৎসব ভাতা বাড়বে তবে তা অবশ্যই ১০০% নয়। কিন্তু তাহলে প্রশ্ন হলো কত % কিন্তু এ ব্যাপারে কেউ মুখ খুলছে না। শুধু বলছে কিছু দিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি হবে। তাহলে কি শঙ্কা মনে জাগা কি স্বাভাবিক নয়। তাহলে কি আমাদের নিয়ে আবারও নতুন কোন ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কোন রকম একভাবে যে কোন প্রকারের উৎসব ভাতার বৃদ্ধি দিয়ে আপাতত রেহাই পেতে চাচ্ছে বর্তমান সরকার।
উৎসব ভাতা নিয়ে উৎকণ্ঠার মূল কারণগুলো:
নিয়মিত না পাওয়া বা দেরি হওয়া:
বৈষম্যপূর্ণ বণ্টন:
প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা:
অন্যান্য ভাতা নিয়ে শঙ্কাঃ
বাসাভাড়া, চিকিৎসা ভাতা ও অন্যান্য ভাতা – এগুলো না পাওয়া:
ভবিষ্যৎ পেনশন বা অবসরের নিশ্চয়তা নেই:
এই শঙ্কা ও উৎকণ্ঠার প্রভাব কী?
পরিশেষে যে কথা বলব তা হল যে জেগে জেগে ঘুমায় তাকে কিন্তু ঘুম থেকে জাগানো যায় না। যেমন আমাদের চোখের সামনে অন্যায় দেখেও যদি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে উদ্বুদ্ধ না হই তাহলে কেউ কোন দিন আমাদের ঐক্যবদ্ধ করতে পারবে না। আর আমরা যদি এক্যবদ্ধ হতে না পারি তাহলে কোনদিনই আমাদের বৈষম্যগুলো দুর হবে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে মিছিল মিটিং করা আবশ্যক। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোন প্রয়োজন থাকে কী? শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব কর্মকর্তাদের কেন বসে বসে বেতন দেয়া হবে। ৮০% উপরে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কোন আন্তরিকতা না থাকলে সে মন্ত্রণালয়ের কি দরকার?
[…] […]