এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন প্রদানের সমস্যা দূরীকরণের জন্য গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। পরবর্তী সময়ে গত ১ জানুয়ারি ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পেয়েছেন। এভাবে দ্বিতীয় ধাপে ৬৭ হাজার, তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার, চতুর্থ ধাপে ৮ হাজার ২০০ এবং ৫ম ধাপে প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে দুই মাসের বেতন ও ঈদ উৎসব ভাতা দেওয়া হয়েছে। তবে এই শিক্ষক-কর্মচারীরা ভোগান্তি কিন্তু এখনও দুর হয়নি।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা এখন তাদের প্রতি মাসের বেতন সময়মতো পায়নি। কোনদিন কোন মাস নাগাদ সেই সমস্যা দুর েইবে তার কোন হিসাব এখন অবধি মাউশি দিতে পারেনি। শুধু আজ কাল পরশু বলে বলে সময়ক্ষেপন করে চলেছে মাউশি। এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ইএফটি বাস্তবায়ন নিয়ে মাউশির ভুমিকা শুরু থেকেই প্রশ্নবিদ্ধ দিন দিন আরও প্রশ্ন বিদ্ধ হচ্ছে। এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ইএফটির মাধ্যমে প্রদান করা হোক এটা মাউশি কোন ভাবে চায়না। কি কারণে চায় না তা অন্য এক আলোচনা আজ আমি এখানে সেই আলোচনা করব না। আজ যে আলোচনা করতে এসেছি তা হল ইএফটির তথ্য সংশোধনের সর্বশেষ আপডেট নিয়ে।
মাউশি ইএফটির তথ্য সংশোধনের জন্য শিক্ষক কর্মচারীদের সময় বেঁধে দিয়েছিল এবং মাউশি থেকে জানানো হয়েছিল যে, এই সময়ের মধ্যে তথ্য সংশোধন করতে যে সকল শিক্ষক কর্মচারী ব্যর্থ হবে তাদের বেতন বন্ধ হয়ে যাবে। কোন শিক্ষক কর্মচারীর কি কি তথ্য সংশোধন করতে হবে তা প্রতিষ্ঠানের ইএফটির প্যানেল দৃশ্যমান করা হবে সে তথ্য দেখে শিক্ষক কর্মচারীগণ তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য সংশোধন করবে। কিন্তু আজ অবধি মাউশি প্রতিষ্ঠানের ইএফটি প্যানেলে শিক্ষক কর্মচারীদের ভুল তথ্য দৃশ্যমান করায়নি। কিছু কিছু শিক্ষক কর্মচারীদের ভুল তথ্য দৃশমান করেছে তা হল যাদের জন্মতারিখ ভুল ছিল তাদের প্রতিষ্ঠানের ইএফটি প্যানেলে দৃশমান হয়েছে শুধু অন্য কোন ভুলের তথ্য দৃশ্যমান হয়নি আজ পর্যন্ত। সর্বশেষ ইএফটির তথ্য সংশোধনের বিষয়ে মাউশি থেকে যা জানা গিয়েছে তা হল প্রতিষ্ঠানের ইএফটির প্যানেলে মাউশি থেকে শিক্ষক কর্মচারীদের ভুলের কোন তথ্য দৃশমান করা হবে না। সকল শিক্ষক কর্মচারীগণ তাদের নিজের তাগিদে ভুল সনাক্ত করে সেই মতে সংশোধন করতে হবে। তবে সেই ক্ষেত্রে মাউশি কিছু নির্দেশনা প্রদান করেছে তাহলো।
১) যে সকল শিক্ষক কর্মচারীর এমপিওর সাথে শিক্ষা সনদের অমিল রয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে সনদ ঠিক রেখে এমপিও সংশোধন করতে হবে। এমপিও সংশোধন করলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইএফটির তথ্য সংশোধন হয়ে যাবে।
২) যাদের জাতীয় পরিচয় পত্রে সমস্যা রয়েছে তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করতে হবে। জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করে তারপর প্রয়োজন মত এমপিও তথ্য সংশোধন করতে হবে।
৩) যাদের নামের বানানের সমস্যা রয়েছে প্রথমে তাদের দেখতে হবে নামের বানান কোথায় ভুল রয়েছে সেই মতে সংশোধনের ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি শিক্ষকের ক্ষেত্রে হয় তাহলে তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করে এমপিওর তথ্য সংশোধন করতে হবে। আর কর্মচারীর ক্ষেত্রে হলে শিক্ষা সনদ সংশোধন সংশোধন করাই ভাল।
৪) যাদের নামের বানানের ক্ষেত্রে ডট(.), দাড়ি(।), কমা(,), হাইফেন(-), স্পেস( ) জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের আপাতত কোন প্রকার সংশোধনে যাওয়ার দরকার নাই পরবর্তীতে মাউশির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৫) এই পর্যন্ত যে সকল শিক্ষক কর্মচারী তথ্য সংশোধনের জন্য এমপিও সংশোধনের জন্য আবেদন করেছেন তাদের আবেদনের ফায়সালা আগামী ২৭ এপ্রিলের মধ্যে হয়ে যাবে।
৬) যাদের ফাইল রিজেক্ট হয়ে গেছে তারা পুনরায় আবার সঠিক ভাবে সংশোধনের জন্য আবেদন করুন।
৭) তবে একটা বিষয় আপনাদের জ্ঞাতার্থে জানিয়ে রাখি তা হল যদি তথ্য সংশোধন না করার কারণে ইএফটিতে আপনার বেতন বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এ বিষয় নিয়ে এত বিভ্রান্ত হওয়ার কোন কারণ নেই পুননায় সঠিক তথ্য প্রেরণ করলেই আপনা আপনি আপনার বেতন চালু হয়ে যাবে।
Leave a Reply