1. admin@kp-nat.com : admin : Ayub Ali
  2. ayub.bhs@gmail.com : Ayub ali : Ayub ali
শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৯ অপরাহ্ন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের এত অপছন্দ কেন আমলাদের?

  • Update Time : রবিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৫
  • ৩৪০ Time View
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের এতে অপছন্দ কেন আমলাদের?

এদেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা কি এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার কোন ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বা এদেশের কোন ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। আমারা কি কখনও এদেশের কোন পেশাজীবির মুখের খাবার কেঁড়ে খেয়ে নিয়েছি এমন কোন উদাহারণ কারও নিকট আছে বলতে পারেন। যদি থাকে দয়া করে জানাবেন। যদি না থাকে তাহলে কেন আমাদেরকে এদেশের আমলারা চিরকালই তাদের রোষানলে রাখে। কেন তারা আমাদেরকে তাদের শত্রু বলে ভাবে, কেন তাদের আমাদের কোন চাওয়া পাওয়ার কথা উঠলে গায়ে জ্বালা ধরে বলতে পারেন। বাংলাদেশে এমপিও (মাসিক পে অর্ডার) ভুক্ত শিক্ষকদের সাথে সরকারি আমলাদের বিরোধ বা অসন্তুষ্টি কিন্তু আজ নতুন নয় এটা চলমান বহুকাল ধরেই। পিছনে নানাবিধ কারণ থাকতে পারে। নিচে কিছু সম্ভাব্য দিক তুলে ধরা হলো:

১. আর্থিক চাপ ও বাজেট ব্যবস্থাপনা:

  • এমপিও শিক্ষকদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়া হয়, যা সরকারের জন্য একটি বিশাল আর্থিক বোঝা। আমলাদের কাছে এই খাতের বরাদ্দ বাড়লে অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পে বাজেট কাটছাঁটের প্রয়োজন হতে পারে, যা আমলাদের কাজের জটিলতা বাড়ায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো কাজের জটিলতা বাড়ানোর অভিযোগে তো আপনি কোন একটা বৃহৎ পেশাজীবিকে তো আপনি খাটো করে দেখতে পারেন না।
  • এমপিওতে অন্তর্ভুক্তির জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর চাপ বা রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে আমলারা অস্বস্তিতে পড়তে পারেন, বিশেষ করে যদি তদারকির অভাব বা দুর্নীতির অভিযোগ থাকে। যা এদেশের আমলারা প্রতিনিয়ত ফলাও করে প্রচার করে। তবে দুর্নীতির কথা যদি বলা হয় তাহলে তা মুখ্য আহ্বাবায়ক কারা এর দ্বারা সবচেয়ে বেশি লাভবান হয় কারা।

২. প্রশাসনিক জটিলতা:

  • এমপিও শিক্ষকদের তালিকা নিয়মিত হালনাগাদ, বেতন বিতরণ, এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর তদারকি করতে গিয়ে আমলাদের অতিরিক্ত কাজের চাপ সৃষ্টি হয়। কোনো ত্রুটির দায় তাদের উপর বর্তায়।
  • কিছু ক্ষেত্রে এমপিও সুবিধা পাওয়ার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা শিক্ষকদের অনিয়ম (যেমন: ভুয়া নিয়োগ, উপস্থিতির হেরফের) আমলাদের বিরক্তির কারণ হতে পারে।

৩. রাজনৈতিক প্রভাব:

  • এমপিওভুক্তি প্রক্রিয়ায় প্রায়ই রাজনৈতিক যোগসাজশের অভিযোগ ওঠে। আমলারা চাইলে এই প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে গিয়ে রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়তে পারেন।
  • শিক্ষক সংগঠনগুলো প্রায়শই বেতন-ভাতা বৃদ্ধি বা সুবিধার দাবিতে আন্দোলন করে, যা সরকারের জন্য বিব্রতকর এবং আমলাদের জন্য চাপের কারণ হয়।

৪. দায়িত্ব এড়ানোর সংস্কৃতি:

  • কিছু ক্ষেত্রে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের তুলনায় কম জবাবদিহি করতে বাধ্য হন বলে আমলাদের ধারণা করে থাকেন। কিন্তু বাস্তবে এই ধারণার সাথে খুব একটা মিল খুজে পাওয়া মুশকিল। কারণ সরকারী স্কুলের শিক্ষকরা যে সিলেবাস পড়ায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকরাও সেই একই সিলেবাস পড়ায়। তাই আমলাদের এসমস্ত ধারণা একেবারেই ভিত্তিহীন।

৫. গুণগত মান নিয়ে উদ্বেগ:

  • অনেক আমলা মনে করেন যে এমপিও সুবিধা পেলে কিছু প্রতিষ্ঠান শিক্ষার গুণগত মানের দিকে কম নজর দেয়, যা জাতীয় শিক্ষাস্তরের অবনতির কারণ হতে পারে। এজন্য তারা এমপিও ব্যবস্থাকে সমর্থন করতে অনীহা প্রকাশ করেন। কিন্তু বাস্তবতা হল এদেশের ৯৭ থেকে ৯৮ ভাগ শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান বা পাঠদান করে থাকে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা।

৬. ইতিহাসিক দ্বন্দ্ব:

  • দীর্ঘদিন ধরে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সাথে সরকারি কর্তৃপক্ষের সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে। আন্দোলন, ধর্মঘট, বা মামলা-মোকদ্দমার ঘটনাগুলো সম্পর্কের অবনতি ঘটায়।

৭. ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত স্বার্থ:

  • কিছু ক্ষেত্রে আমলাদের ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত স্বার্থ (যেমন: দুর্নীতির সুযোগ কমে যাওয়া) এমপিও ব্যবস্থার প্রতি তাদের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণ হতে পারে। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি ধারণা আমলারা মনের মধ্যে পুষে রেখেছে যে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের যদি স্বাবলম্বি করে তোলা যায় তাহলে তারা তাদের নিয়ন্ত্রনের বাহিরে চলে যাবে। তাদের অনেক বিষয়ে অনেক ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিবে। এখানে আর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিলাম না।

সমাধানের উপায়:

  • এমপিও প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বাড়ানো।
  • শিক্ষক নিয়োগে মেধাভিত্তিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
  • আমলাতন্ত্র ও শিক্ষক সম্প্রদায়ের মধ্যে নিয়মিত সংলাপের ব্যবস্থা করা।
  • শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে আর্থিক চাপ কমানো।

এই সমস্যা সমাধানে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, আমলাতান্ত্রিক সংস্কার, এবং শিক্ষকদের সাথে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক জরুরি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আমার খবর
© All rights reserved © 2025 Kisukhoner Pathshala
Customized By BlogTheme