বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত সাড়ে তিন লাখ শিক্ষক-কর্মচারীদের ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার বা ইএফটির মাধ্যমে ডিসেম্বর মাসের বেতন-ভাতা ৪ ধাপে প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষক কর্মচারীদের দিয়েছে সরকার। বেতন পাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে ১ম ধাপে ১ লাখ ৮৯ হাজার প্রার্থীর তথ্যে কোনো ভুল পাওয়া যায় নি। তবে অবশিষ্ট প্রায় দুই লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য সংশোধন করতে হবে। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তথ্য সংশোধন না হলে তাদের বেতন বন্ধ হয়ে যাবে।
৫ম ধাপের শিক্ষক কর্মচারীদের ডিসেম্বরের বেতন হওয়ার কথা ছিল ১৩ তারিখে মধ্যে। কিন্তু নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের কারণে তাদের বেতন পেতে দেরি হয়। নতুন যাদের এমপিওভুক্ত হয়েছে তাদের তথ্য ভেরিফিকেশনের কাজ শেষ হয়নি বিধায় তাদের বেতন প্রদান করা সম্ভব হয়নি।অবশেষে তাদের ভেরিফিকেশনের কাজ শেষ করেছে মাউশি। ৫ম ধাপের ৮ হাজার ৮৮৭ জন শিক্ষক কর্মচারী কিন্তু আজ তিন মাস থেকে বেতন পাচেছ না।
আরও পড়ুন”উৎসব যেন আজীবনের অভিশাপ”
সেই ধারাবাহিকতায় ৫ম ধাপে আরও প্রায নতুন পুরাতন মিলে ১৬ হাজারের অধিক শিক্ষক কর্মচারীর ডিসেম্বরের বেতন আজ ছাড় করার জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে, সর্বশেষ চতুর্থ ধাপের মোট ৮ হাজার ২৩৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন ছাড় হয়েছিলো। তাদের মধ্যে স্কুলের ৬ হাজার ৩৮০ জন ও কলেজের ১ হাজার ৮৫৮ জন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আইবাস ডাবল প্লাস সফটওয়্যারে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারে (ইএফটি) ডিসেম্বরের পঞ্চম ধাপের প্রস্তাব ছাড়ের জন্য মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে। এ ধাপে মোট ১৬ হাজার ৪৮৫ জন শিক্ষক- কর্মচারী রয়েছেন।
রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অনুমোদনের পরে খুব দ্রুতই শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতনের মেসেজ পাওয়া শুরু করবেন।
এর আগে, সর্বশেষ চতুর্থ ধাপের মোট ৮ হাজার ২৩৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন ছাড় হয়েছিলো। তাদের মধ্যে স্কুলের ৬ হাজার ৩৮০ জন ও কলেজের ১ হাজার ৮৫৮ জন।
তার আগে, তৃতীয় ধাপে স্কুল- কলেজের মোট ৮৪ হাজার ৭৭৬ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অ্যাকাউন্টে টাকা গেছে। তাদের মধ্যে স্কুলের ৬৫ হাজার ৬৮৩ জন ও কলেজের ১৯ হাজার ৯৩ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, সরকারি শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। তবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হতো। এই অর্থ তুলতে শিক্ষকদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো। ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বেতন-ভাতা ছাড়ের জন্য কয়েক পর্যায়ে অনুমোদনসহ সংশ্লিষ্ট কাজে অনেক ক্ষেত্রেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পেতে দেরি হতো। অনেক সময় পরের মাসের ১০ তারিখের পরও আগের মাসের বেতন-ভাতা জুটতো।
এই পরিস্থিতির উত্তরণে গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। পরে গত ১ জানুয়ারি ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে আরও ৬৭ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে বেতন ছাড় হয়।
বেসরকারি স্কুল-কলেজের ৩ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ২ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য যাচাই করে মাউশি অধিদপ্তর। ২৭ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর তথ্য পায়নি সংস্থাটি। অবশিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীদের তথ্য পেলেও তাতে ত্রুটি থাকায় সেগুলো সংশোধন করার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গেছে।
Leave a Reply