গত বছর ৫ অক্টোবর জাতীয় শিক্ষক দিবসে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের বিদায়ী শিক্ষা উপদেষ্টা ঘোষণা দেন যে, আগামী জানুয়ারী মাস হতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা ইএফটির মাধ্যমে হবে। বিদায়ী উপদেষ্টার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল যে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে মাউশির যে স্বেচ্ছাচারিতা তা দুর করা। কিন্তু তা দুর করা যে এত সহজ নয় তা তখন বোঝা না গেলেও এখন আস্তে আস্তে তা বোঝা যাচ্ছে। কারণ যে সরিষা দিয়ে ভুত তাড়াবে সেই সরিষার মধ্যেই তো ভুত লুকিয়ে আছে তাহলে ভুত দুর হবে কি করে। এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন প্রদানের দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠান হলো মাউশি। আর যত অনিয়ম কিন্তু মাউশির মধ্যে। বাংলাদেশের অন্য কোন সরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন ইএফটিতে প্রদানের জন্য এধরনের জটিলতা তৈরি হয়েছে বলতে পারবেন। হয়নিতো হয়েছে শুধু এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বেলায়। তার অর্থ এই দাাঁড়ায় যে, নিশ্চয়ই এর মধ্যে কোন না কোন শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে।
গত সপ্তাহে মাউশি থেকে জানানো হয় যে, আগামী ২০ মার্চের মধ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ফেব্রুয়ারীর বেতন ও ২৫% বোনাস প্রদান করা হবে সেই লক্ষ্যে মাউশি কাজ করছে। কিন্তু এখানে প্রশ্ন হলো যে, আজ যখন এই লেখা লিখছি তখন ১৩ তারিখ বৃহস্পতিবার এখন অবধি বেতন প্রদানের দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি হয়েছে বলে মাউশি সুত্রে নিশ্চিত হওয়া যায় নি। ১৪ ও ১৫ তারিখ সাপ্তাহিক ছুটি ১৬ তারিখে নতুন সপ্তাহ শুরু সেই দিনও কাজ শুরু হবে বলে মনে হয় না। তার মানে ১৭ তারিখে হয়তবা বেতন প্রদানের কাজ শুরু হতে পারে। ১৭ তারিখ বেতন প্রদানের লক্ষ্যে কাজ শুরু হলে ২০ তারিখের মধ্যে কি শেষ হবে বলে মনে হয়।
মাউশির ইএমআইএস সেলের কোন কর্মকর্তাকে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে। প্রথমত তারা ফোন ধরতে চায়না তারপর যদিও তারা ফোন ধরে কথা শেষ হওয়ার আগেও ফোন কেটে দেয়। ফোন ধরলে কমন যে কথা শোনায় তা হলো আমারা চেষ্টা করছি এ সপ্তাহের মধ্যেই দেওয়ার জন্য। এভাবে আর এ কথার পর যে কত সপ্তাহ চলে যায় তার কোন হিসাব নেই। ইএমআইএস সেলের যারা চাকুরী করেন তাদের কাজ কি? তাদের কাজ কিন্তু আমাদের বিভিন্ন বিষয় দেখাশুনা করা তারা তা না করে তারা যে কাজ করে তা হলো আমাদের তথা শিক্ষকদের উপর প্রভুত্তগিরি ফলানো।
এখন আবার পূর্বের কথায় ফিরে আসি ২০ তারিখে ফেব্রুয়ারীর বেতন ও সিকি বোনাস দেওয়ার কথা তবে মাউশির যে ভাব দেখাচ্ছে তাতে মনে হয় ২০ তারিখে বেতন বোনাস দিতে পারবে। আর ২০ তারিখে যদি বেতন বোনাস না দিতে পারে তাহলে কিন্তু সত্যি সত্যি শিক্ষক কর্মচারীদের ঈদের আগে ভোগান্তি পোহাতে হবে। কারণ ২০ তারিখ এর পর যে ৪/৫ দিন ব্যাংক খোলা থাকবে তাতে করে ভোগান্তিরি শেষ সীমায় পৌছে যাবে।
সারাজীবন এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন দিতে গেলে মাউশির মনে খুব কষ্ট এয়। তবে সবকিছুর কিন্তু একটা শেষ আছে। মাউশি ও মাউশির কিছু স্বৈরাচারী মনোভাবের পোষণকারী কর্মকর্তারা যেভাবে দিনের পর দিন অন্যায় অনিয়ম করে চলেছে এমপিভু্ক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে তারও একদিন শেষ হবে ইনশাআল্লাহ। এদেশে কেউ কি কোন দিন ভেবেছিল ফ্যাসিবাদি শক্তির বিনাশ এভাবে হবে ভাবেনিতো। ঠিক তেমনি মাউশির এমন অন্যায় অবিচারের প্রতিকারও একদিন ঠিক হবে।
Leave a Reply