এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের জানুয়ারি মাসের বেতন চলতি সপ্তাহে হওয়ার সম্ভাবনা কম। আগামী সপ্তাহে শিক্ষক-কর্মচারীরা জানুয়ারি মাসের বেতন পেতে পারেন। তবে তাও পুরোপুরি নিশ্চিত নয় চেষ্টা চলছে।
আজ সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাকে ফোন দিয়ে চলমান সংকট নিয়ে জানতে চাইলে তিনি যে এ তথ্য জানিয়েছেন। তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম প্রথমে যে, শিক্ষক কর্মচারীদের ভুল তথ্য প্রতিষ্ঠানের ইএফটি প্যানেলে কোনদিন বা কখন দৃশ্যমান করা হবে এবং এডিট অপশন চালূ হবে। তার জবাবে তিনি বলেন এডিট অপশন চালু হতে আরও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে কারণ তিনি বলেন আমরা তো সংশোধনের মোটামুটি একটা নির্দেশনা দিয়েছি সেটা দেখে শিক্ষক কর্মচারীগণ তাদের প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো সংশোধনের কাজ শুরু করবে। আর তারপর এডিট অপশন চালূ হলে সেখানে তা আপলোড করবে আপলোড করতে তো আর বেশি সময় লাগবে না তা একদিনের মধ্যে হয়ে যাবে।
তিনি সেখানে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করেন তা হল যে, আমরা এখন এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের জানুয়ারী ২০২৫ এর বেতন নিয়ে কাজ করছে যতদ্রুত সম্ভব তা দেওয়া যায় সেই লক্ষ্যে কাজ চলছে। ১ম হতে ৩য় ধাপের যে সকল শিক্ষক কর্মচারী এখন পর্যন্ত ডিসেম্বরের বেতন পেয়েছেন তারাই জানুয়ারীর বেতন পাবেন। বাকি দুই ধাপের শিক্ষক কর্মচারীগণ কিন্তু এখনও ডিসেম্বরের বেতন পাননি অতএব তারা এখন জানুয়ারীর বেতনের জন্য উপযুক্ত নয়।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মাউশির এক কর্মকর্তা জানান, ‘চলতি সপ্তাহে শিক্ষক-কর্মচারীদের জানুয়ারি মাসের বেতন হওয়ার সম্ভাবনা কম। আমাদের ঊর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তা চলতি সপ্তাহে ঢাকার বাইরে থাকবেন। এর ফলে বেতন সংক্রান্ত কাজ করা সম্ভব নাও হতে পারে। তবে আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত বেতন ছাড় করতে।’
এখানে প্রশ্ন হলো এই যে, এখনও যদি বেতন ছাড় করতে যদি কর্মকর্তাদের ঢাকার বাইরে ছুটিতে আছেন এ ধরনের কথা শুনতে হয় তাহলে আর মাউশি কি পরিবর্তনের ছোয়া লাগলো। আর এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ভাগ্যের কি পরিবর্তন হলো।
শিক্ষক-কর্মচারীদের জানুয়ারি মাসের বেতন আগামী সপ্তাহে হতে পারে জানিয়ে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘চতুর্থ ধাপে ৮ হাজার ২০০ এর কিছু বেশি শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন চলতি সপ্তাহে ছাড় হতে পারে। এই শিক্ষকরা ডিসেম্বর মাসের বেতন পাবেন। এর বেশি আপাতত কোনো তথ্য জানানো সম্ভব নয়।’
জানা গেছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। তবে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত আটটি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ’ পদ্ধতিতে ছাড় হয়। এই অর্থ তুলতে শিক্ষকদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো। সেই বাস্তবতা থেকে শিক্ষক কর্মচারীদের রেহাই দিতে বর্তমান সরকার এমপিওশিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ইএফটিতে প্রেরণের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সেই বাস্তবতা এখনও অনেক দুরের বাতিঘর।
ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বেতন-ভাতা ছাড়ের জন্য কয়েক পর্যায়ে অনুমোদনসহ সংশ্লিষ্ট কাজে অনেক ক্ষেত্রেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পেতে দেরি হয়। অনেক সময় পরের মাসের ১০ তারিখের পরও আগের মাসের বেতন-ভাতা জোটে। আর এখন মাসের ১৫ তারিখ পার হয়ে ২০ তারিখেও বেতন পাওয়া যাচ্ছে না।
গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। পরবর্তী সময়ে গত ১ জানুয়ারি ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে ৬৭ হাজার, তৃতীয় ধাপে ৮৪ হাজার এবং চতুর্থ ধাপে ৮ হাজার ২০০ এর অধিক শিক্ষক-কর্মচারীকে বেতন দেওয়া হচ্ছে। আর ৫ম ধাপে আরও ৮৮০০ শিক্ষক কর্মচারী ইএফটির আওতায় আসবে।
Leave a Reply