বাংলাদেশের যত গুলো পেশা আছে তার মধ্যে আমার মনে হয় সবচেয়ে অবহেলিত এক পেশার নাম হলো এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পেশাগত দায়িত্ব পালন করা। সারাজীবন শুধু আমরা বৈষম্যের যাতাকলে পিষ্ঠ হয়ে গেলাম। আমাদের পেশার অন্যতম প্রধান একটার বৈষম্যের নাম তা হলো বেতন প্রাপ্তির বৈষম্য। কোন মাসের ১০ তারিখে বেতন পেলে আবার কোন মাসের ১৫ তারিখে আবার কখনও কখনও ২০-২২ তারিখে হয়ে যায়। এই সকল সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকার ইএফটির মাধ্যমে বেতন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের গত ৫ অক্টোবর ২০২৪ শিক্ষক দিবসে সরকার ঘোষণা দেয় যে, তাদের বেতনও সরকারী কর্মচারীদের ন্যায় ইএফটির মাধ্যমে প্রেরণ করা হবে। সেই লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শুধু স্কুল ও কলেজের এমপিওভুক্ত ৩,৯৮,০০০ হাজার শিক্ষক কর্মচারীর বেতন ইএফটির মাধ্যমে প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয় বর্তমান সরকার। । সেই ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চলতি মাসের ১ তারিখে ১,৮৯,৯১৩ জন শিক্ষক কর্মচারীর বেতন তড়িঘড়ি করে প্রদান করে।
কিন্তু এই তাড়াহুড়া করতে গিয়ে বিশাল একটি অংশ বাদ পড়ে যায়। যার সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ। সেই সমস্যার সমাধান আজকাল পরশু করতে করতে আজ প্রায় ১৮ দিন পর আজ ১৯ তারিখে কিছু সংখ্যক শিক্ষক কর্মচারীর পেমেন্ট তালিকা প্রকাশ করে যার সংখ্য ৬৭হাজার ৪৪০ জন। এর পর ২৭/০১/২০২৫ তারিখ সোমবার আরও প্রায় ৮৪ হাজার এর অধিক শিক্ষক কর্মচারীর পেমেন্টের তালিকা প্রকাশ করে। এ পর্যন্ত তিন ধাপে ৩,৪২,১২৭ জন শিক্ষক কর্মচারী ইএফটি আওতাভুক্ত হয়েছেন।
এখন প্রায় ৫৬ হাজার এর অধিক শিক্ষক কর্মচারীর ইএফটিতে বেতন ধোয়াশায় পড়ে গেছে। এই শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন কোন দিন কিভাবে দিবে তা নিয়ে মাউশি কর্তৃপক্ষ এখনও পরিস্কার করে কিছু না বললেও তাদের যে সমস্ত তথ্যের সমস্যা আছে তা সংশোধন করতে হবে তাতে কোন প্রকার সন্দেহ নাই। এখন আবার নতুন খবর শোনা যাচ্ছে যে, ২য় ও ৩য় যে সকল শিক্ষক কর্মচারী বেতন পেয়েছে এবং ৩য় ধাপে যারা বেতন পাবে তাদেরও সংশোধনী লাগবে।
২য় ধাপের কি সংশোধনী কতটুকু সংশোধনী লাগবে তা সম্পূর্ণ অজানা। ২য় ধাপের যে সকল শিক্ষক কর্মচারী বেতন পেয়েছে তাদের কি পরিমাণ সংশোধনী লাগবে তা প্রকাশ করুন। সংশোধনী কম লাগুক বা বেশি লাগুক সময় কিন্তু লাগবে। আর সবচেয়ে বড় কথা এটা একটা টেনশনে ব্যাপার।
৩য় ধাপের যে সকল শিক্ষক কর্মচারীর পেমেন্ট তালিকা প্রকাশ করেছেন তাদের বেতন কবে নাগাদ ব্যাংকে জমা হবে তা অজানা। এবং কি কি সংশোধনী লাগবে তাও অজানা। তারপর আসে তাদের সংশোধনীর প্রসংগ কি সংশোধনী লাগবে কতটুকু সংশোধন লাগবে। সংশোধন করতেও তো সময় লাগবে।
এরপর আসে ৪র্থ ধাপের প্রসংগ তাদের তো পেমেন্ট তালিকাও প্রকাশ হয় নি। তাদের কোনদিন সংশোধনের তালিকা প্রকাশ করবেন। তারপর তারা তথ্য সংশোধন করবে তারপর তাদের পেমেন্ট তালিকা প্রকাশ করবেন। তারপর তারা বেতন পাবে। আর এতদিন তাদের জীবনযাপন কিভাবে চলবে তাদের ব্যয়ভার কিভাবে বহন করবে।
তারপর আসে তাদের সংশোধনের প্রসংগ তাদের কিন্তু কারও কারও অনেক বড় ধরনের সংশোধন করা লাগতে পারে যা অনেকটা সময় সাপেক্ষ। অনেক সংশোধন করতে কয়েক মাস পর্যন্ত লাগতে পারে।
তাই বলছি দয়া করে যত দ্রুত সম্ভব যাদের যাদের সংশোধনী লাগবে তাদের কি সংশোধন লাগবে দ্রুত প্রকাশ করুন।
Leave a Reply