1. admin@kp-nat.com : admin : Ayub Ali
  2. ayub.bhs@gmail.com : Ayub ali : Ayub ali
শনিবার, ০৩ মে ২০২৫, ১২:১০ অপরাহ্ন

বেসরকারি শিক্ষকদের সংগঠনের শক্তি কম কেন?

  • Update Time : মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ১৯ Time View

বাংলাদেশে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সমস্যাগুলোর একটি প্রধান কারণ হলো শিক্ষকদের সংগঠনের শক্তি কম। সংগঠনের দুর্বলতা শিক্ষকদের স্বার্থ সুরক্ষা, দাবি আদায়, এবং সমস্যা সমাধানে বাধা সৃষ্টি করে। এটির পিছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এবং এর সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো:


শিক্ষকদের সংগঠনের শক্তি কম হওয়ার কারণ:

১. সংগঠনের বিভাজন

বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে অনেক সংগঠন থাকলেও তারা প্রায়ই একে অপরের সঙ্গে বিভক্ত। অভিন্ন স্বার্থ থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন দলাদলি এবং রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তারা একসঙ্গে কাজ করতে পারে না।

২. প্রভাবহীন নেতৃত্ব

অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সংগঠনের নেতৃত্ব দক্ষ এবং দূরদর্শী নয়। অদক্ষ নেতৃত্বের ফলে সংগঠন কার্যকর পরিকল্পনা বা আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়।

৩. আর্থিক দুর্বলতা

শিক্ষকদের সংগঠনের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিলের অভাব রয়েছে। সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত আর্থিক সংস্থান না থাকলে আন্দোলন বা সমাধানের প্রচেষ্টাগুলো টেকসই হয় না।

৪. শিক্ষকদের মধ্যে ঐক্যের অভাব

বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে একক চেতনার অভাব রয়েছে। তারা প্রায়ই স্থানীয় সমস্যাগুলো নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, যা বৃহত্তর আন্দোলনে বাধা সৃষ্টি করে।

৫. প্রশাসনিক চাপ

অনেক সময় শিক্ষকদের সংগঠনগুলো প্রশাসনিক চাপের মুখে পড়ে এবং তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সাহসী ভূমিকা পালন করতে পারে না।

৬. সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব

শিক্ষকদের সংগঠনের উপর রাজনৈতিক প্রভাব থাকার কারণে তারা শিক্ষকদের প্রকৃত স্বার্থের পরিবর্তে রাজনৈতিক লক্ষ্য পূরণের দিকে বেশি মনোযোগ দেয়।


শিক্ষকদের সংগঠনের শক্তি কম হওয়ার প্রভাব:

  • শিক্ষকদের দাবি আদায় প্রক্রিয়া ধীরগতি হয়ে যায়।
  • বেতন বৃদ্ধি বা অন্যান্য সুবিধার জন্য সংগঠিত প্রচেষ্টা কার্যকর হয় না।
  • শিক্ষকদের পেশাগত মর্যাদা রক্ষায় দুর্বল ভূমিকা পালন করা হয়।
  • প্রশাসন ও সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে শিক্ষকদের মতামত প্রতিফলিত হয় না।
  • শিক্ষকেরা নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদে জড়িয়ে পড়েন, যা আন্দোলনের সফলতায় বাধা সৃষ্টি করে।

সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান:

১. একীভূত নেতৃত্ব গঠন

সব বেসরকারি শিক্ষকদের মধ্যে ঐক্য তৈরি করে একক নেতৃত্ব গঠন করতে হবে, যা শিক্ষকদের স্বার্থ রক্ষায় অভিন্ন নীতি নির্ধারণ করবে।

২. দক্ষ নেতৃত্ব নির্বাচন

শিক্ষকদের মধ্যে দক্ষ, সৎ এবং দূরদর্শী নেতাদের নির্বাচিত করতে হবে, যারা শিক্ষকদের দাবিগুলো সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন।

৩. সাংগঠনিক দক্ষতা বৃদ্ধি

শিক্ষকদের সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি সুসংগঠিত কাঠামো তৈরি করতে হবে, যেখানে সদস্যরা নিয়মিত মতামত ও সহযোগিতা দিতে পারবেন।

৪. আর্থিক স্বচ্ছতা এবং তহবিল সংগ্রহ

সংগঠনের জন্য একটি স্বচ্ছ আর্থিক কাঠামো তৈরি করতে হবে। শিক্ষকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা সংগ্রহ বা তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।

৫. নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখা

শিক্ষকদের সংগঠনকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। সংগঠনের মূল লক্ষ্য শিক্ষকদের পেশাগত স্বার্থ রক্ষা করা, যা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের সঙ্গে জড়িত থাকা উচিত নয়।

৬. সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি

শিক্ষকদের পেশাগত মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এর জন্য গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা যেতে পারে।

৭. সরকারের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ

শিক্ষকদের সংগঠনকে সরকারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে এবং যৌক্তিক উপায়ে তাদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরতে হবে।


উপসংহার

শিক্ষকদের সংগঠন শক্তিশালী হলে তা তাদের পেশাগত স্বার্থ রক্ষায় এবং দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এজন্য প্রয়োজন দক্ষ নেতৃত্ব, আর্থিক স্বচ্ছতা, এবং শিক্ষকদের মধ্যে ঐক্য। সংগঠনের মাধ্যমে শিক্ষকেরা যদি তাদের দাবি যৌথভাবে উপস্থাপন করতে পারেন, তবে প্রশাসন এবং সরকারকে তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করতে বাধ্য করা সম্ভব হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আমার খবর
© All rights reserved © 2025 Kisukhoner Pathshala
Customized By BlogTheme