বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জন্য প্রকাশিত বদলি নীতিমালার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামছেন নিবন্ধনধারী শিক্ষকরা। তারা বলছেন, নীতিমালায় নিবন্ধনধারী হাজার হাজার শিক্ষকের প্রতি চরম বৈষম্য করা হয়েছে। এই বৈষম্য দূরীকরণে আগামী ১৪ ও ১৫ মে অবস্থান কর্মসূচি ও লংমার্চ কর্মসূচি পালন করবেন তারা।
“বদলি প্রত্যাশী এনটিআরসিএ নিবন্ধিত শিক্ষক ফোরাম”-এর সভাপতি মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “প্রকাশিত বদলি নীতিমালায় শুধু সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বদলির সুযোগ রাখা হয়েছে। অথচ হাজার হাজার নিবন্ধিত শিক্ষক স্বল্প বেতনে শত কিলোমিটার দূরে পরিবার-পরিজন ছেড়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এই বৈষম্য নিরসন না হলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রকাশিত নীতিমালায় সুপারিশপ্রাপ্ত প্রায় ৮০% শিক্ষক নিজ এলাকায় নিয়োগপ্রাপ্ত, যাদের বদলির প্রয়োজন নেই। অথচ শুধুমাত্র ২০% দূরে চাকরিরত শিক্ষকদের বদলির সুযোগ দিতে গিয়ে, সকল সুপারিশপ্রাপ্তকে বদলির আওতায় আনা হয়েছে। বিপরীতে, অনুরূপ মেধাতালিকায় থাকা নিবন্ধনধারী শিক্ষকদের একেবারে উপেক্ষা করা হয়েছে।”
ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. তোফায়েল সরকার বলেন, “বর্তমান সরকার বৈষম্যবিরোধী অবস্থানে বিশ্বাসী। অথচ এই নীতিমালা চরম বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। সুপারিশপ্রাপ্ত ও নিবন্ধনধারী—উভয়ের তথ্য এনটিআরসিএ’র ওয়েবসাইটে বিদ্যমান এবং উভয়েই একই মেধাতালিকাভুক্ত। তবুও এক অংশকে সুযোগ দিয়ে অন্য অংশকে বঞ্চিত করা সংবিধানবিরোধী ও অমানবিক।”
সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা শত কিলোমিটার দূরে থেকে স্বল্প বেতনে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছি। অসুস্থ বাবা-মাকে দেখার সময় পাই না, আত্মীয়-স্বজনের মৃত্যুর খবর শুনেও পাশে দাঁড়াতে পারি না। ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ থাকলেও, এরপর থেকে সেই সুযোগ বন্ধ। বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে গেলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “এই বদলি কার্যক্রম বাজেটবিহীন, সরকারের কোনো অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন নেই। শুধু সদিচ্ছার অভাবেই আজ আমরা রাজপথে নামতে বাধ্য হচ্ছি। শিক্ষকরা যেখানে শ্রেণিকক্ষে থাকার কথা, সেখানে বদলির দাবিতে রাজপথে নামা দুঃখজনক। তাই ১৪ ও ১৫ মে সারাদেশের বদলি প্রত্যাশী শিক্ষকদের যথাসময়ে কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
Leave a Reply