1. admin@kp-nat.com : admin : Ayub Ali
  2. ayub.bhs@gmail.com : Ayub ali : Ayub ali
বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ০৭:৫৬ অপরাহ্ন

MPO শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন প্রদানে প্রতিবন্ধকতা আর কতকাল?

  • Update Time : বুধবার, ৭ মে, ২০২৫
  • ১৯৩ Time View
MPO শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন প্রদানে প্রতিবন্ধকতা আর কতকাল?

বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড বলা হয় আমাদের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের। এর বড় একটি অংশ এমপিওভুক্ত (মাসিক বেতন আদেশ) প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। অথচ, দীর্ঘদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে — এই শিক্ষক ও কর্মচারীরা নিয়মিত বেতন-ভাতা পেতে গিয়ে নানা ধরণের প্রশাসনিক, প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক জটিলতায় পড়ছেন।

সমস্যার মূল উৎস কোথায়?

১. বাজেট বরাদ্দ ও প্রশাসনিক জটিলতা

প্রতিবছর বাজেট ঘোষণার সময় এমপিওভুক্তদের জন্য বরাদ্দ রাখা হলেও তা সময়মতো ছাড় হয় না বা পর্যাপ্ত হয় না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন, এরপর তা হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের দপ্তরে গেলে সেখানে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা যায়।

২. ডিজিটাল পদ্ধতির অপার দক্ষতার অভাব

বর্তমানে বেতন প্রদানের জন্য ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (EFT) পদ্ধতি চালু হয়েছে, যা theoretically স্বচ্ছ ও আধুনিক পদ্ধতি। কিন্তু এর বাস্তবায়নে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী ভোগান্তিতে পড়েন। জাতীয় পরিচয়পত্র, ব্যাংক একাউন্ট তথ্য, কিংবা অন্যান্য যাচাইয়ের ক্ষেত্রে তথ্যের অমিল বা সার্ভার জটিলতা তৈরি হয়।

৩. নিয়মিত বেতনের নিশ্চয়তা নেই

অনেক শিক্ষক-কর্মচারী মাসের পর মাস বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করেন। বিশেষ করে নতুন এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে বেতন ছাড়ের বিষয়ে একাধিক স্তরে অনুমোদনের প্রয়োজন হয়, যা সময়সাপেক্ষ ও ক্লান্তিকর।

৪. জবাবদিহিতার অভাব ও রাজনীতিকরণ

শিক্ষাখাতে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার অভাবও একটি বড় সমস্যা। অনেক সময় প্রতিষ্ঠান প্রধান বা স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে রাজনীতিক প্রভাব খাটিয়ে অগ্রাধিকার পাওয়া যায়। আবার, প্রকৃত চাহিদার ভিত্তিতে না হয়ে এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত হয় রাজনৈতিক বিবেচনায়।

এই সমস্যা কতটা গুরুতর?

  • একজন শিক্ষক তাঁর সম্মানজনক পেশায় নিয়োজিত থাকার পরও যখন সময়মতো বেতন পান না, তখন তা কেবল ব্যক্তি নয়, পুরো শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি অবিচার।
  • শিক্ষক-কর্মচারীদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা না থাকলে শিক্ষার মানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
  • শিক্ষার্থীও এতে প্রভাবিত হয়, কারণ একজন আর্থিক চাপে থাকা শিক্ষক কখনোই শিক্ষাদানে পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারেন না।

সমাধান কী হতে পারে?

  1. বাজেট বরাদ্দ দ্রুত ছাড়ের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ
  2. EFT বা ডিজিটাল পদ্ধতির উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ
  3. সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে বেতন পরিশোধের বাধ্যবাধকতা আইনিভাবে নিশ্চিত করা
  4. শিক্ষক ফোরাম বা সংগঠনের কার্যকর ভূমিকা ও নিরপেক্ষ তদারকি বোর্ড গঠন
  5. দুর্নীতি ও পক্ষপাতিত্ব রোধে স্বচ্ছতা ও গণমাধ্যমের নজরদারি বৃদ্ধি

শেষ কথা

আজকের শিক্ষার্থী আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আর সেই শিক্ষার্থীকে গড়ার দায়িত্বে থাকা শিক্ষক যদি ন্যায্য সম্মান ও প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হন, তবে তা একটি রাষ্ট্রের জন্য আত্মঘাতী।

প্রশ্নটা আজ তাই সবার:
“আর কতকাল এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন প্রদানে এমন প্রতিবন্ধকতা থাকবে?”
এই প্রশ্নের উত্তর শুধু সরকারের কাছে নয়, সমাজের প্রতিটি সচেতন নাগরিকের কাছেও দায়বদ্ধ থাকা উচিত।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আমার খবর
© All rights reserved © 2025 Kisukhoner Pathshala
Customized By BlogTheme