টেকনিক্যাল সমস্যায় আটকে আছে লাখো শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা।
আইবাস ডাবল প্লাস সফটওয়্যারের ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারে এমপিও শিক্ষকদের বেতন দেয়ার অংশ হিসেবে ডিসেম্বরের ৭ম ধাপ, জানুয়ারির ৪র্থ ধাপ, ফেব্রুয়ারির ৩য় ধাপ ও মার্চের ২য় ধাপের বেতনের প্রস্তাব আগামী সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ে যাবে। এই কার্যক্রম আরো আগে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা টেকনিক্যাল কারণে বিলম্ব হচ্ছে। এসব ধাপের বেতন ছাড়ের পর এপ্রিলের বেতন নিয়ে কাজ শুরু হবে। গত বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) একাধিক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
এই টেকনিক্যাল সমস্যা আরও যে, কতদিন এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বয়ে বেড়াতে হবে তা স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কারও পক্ষে বলা অসম্ভব। এব্যাপারে মাউশি যে, নির্দোষ সেটা কিন্তু মাউশি হলফ করে বলতে পারবে না। কারণ একই সমস্যা প্রতিমাসে কিভাবে ঘটতে পারে। অন্য কোন সমস্যা যদি ঘটে থাকে তাহলে তা পরিস্কার করে মাউশি সঠিক কারণ বলতে পারে তা কিন্তু বলে না। তাহলে শিক্ষক কর্মচারীগণ অবশ্যই ধরে নিবে যে, সমস্যা মাউশির ইচ্ছায়। মাউশি কি সত্যিই চায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ইএফটি সমস্যা দুর করতে।
তারা জানান, এপ্রিলের বেতন নিয়ে এখনো কাজ শুরু হয়নি। ডিসেম্বরসহ চার ধাপের বেতন ছাড় হওয়ার পরে এপ্রিলের বেতন নিয়ে কাজ শুরু হবে। চার ধাপের বেতনে বিলম্ব হওয়ার কারণ হিসেবে কর্মকর্তারা বলছেন, টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে এসব ধাপের বেতন ছাড়ে দেরি হচ্ছে। আশা করি আগামী সপ্তাহের শুরুতেই এই চার ধাপের বেতনের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে যাবে। এরপর অনুমোদন দেয়ার পরপরই বেতন ছাড়ের প্রক্রিয়া শুরু হবে। এর আগে গত ২৭ মার্চ ডিসেম্বরের ষষ্ঠ ধাপের প্রস্তাব অনুমোদন হয়। সে ধাপে মোট ১০ হাজার ১১৩ জন শিক্ষক- কর্মচারী ছিলেন। এর মধ্যে স্কুলের ৭ হাজার ৮১৯ জন ও কলেজের ২ হাজার ২৯৪ জন।
জানা গেছে, ডিসেম্বরের সপ্তম ধাপের বেতনের প্রস্তাব দুই সপ্তাহ আগে মন্ত্রণালয়ে যাওয়া কথা ছিলো। কিন্তু তা ডিসেম্বরসহ চার ধাপের বেতন ছাড় হওয়ার পরে এপ্রিলের বেতন নিয়ে কাজ শুরু হবে। আগামী সপ্তাহের শুরুতেই এই চার ধাপের বেতনের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে যেতে পারে। তার পরপরই এপ্রিলের বেতন ছাড়ের প্রক্রিয়া শুরু হবে
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, তথ্য সংশোধন করেছেন এবং প্রোফাইল আপডেট করেছেন তারা সপ্তম ধাপে রয়েছেন। এ ছাড়াও ষষ্ঠ ধাপের কিছু শিক্ষক-কর্মচারী বাদ পড়েছিলেন তারাও সপ্তম ধাপে রয়েছেন। এই দুই ধাপের কাজ শেষে ঈদের বেতন ও উৎসব ভাতা নিয়ে কাজ শুরু করবেন কর্মকর্তারা। এখনি এ ব্যাপারে ঈদের বেতন ও উৎসব ভাতা নিয়ে কিছু বলছেন না তারা।
এর আগে ২৭ মার্চ ষষ্ঠ ধাপের বেতনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রণালয়। সে ধাপে মোট ১০ হাজার ১১৩ জন শিক্ষক- কর্মচারী ছিলেন। এর মধ্যে স্কুলের ৭ হাজার ৮১৯ জন ও কলেজের ২ হাজার ২৯৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী ছিলেন। জানা গেছে, এ ধাপে তথ্য সংশোধন ও প্রোফাইল আপডেট করা শিক্ষক-কর্মচারীরা ছিলেন।
প্রসঙ্গত, সরকারি শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতা পান। তবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সরকারি কোষাগার থেকে ছাড় হলেও তা রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংকের মাধ্যমে ‘অ্যানালগ পদ্ধতিতে ছাড় হতো। এই অর্থ তুলতে শিক্ষকদের নানা ভোগান্তিতে পড়তে হতো। ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বেতন-ভাতা ছাড়ের জন্য কয়েক পর্যায়ে অনুমোদনসহ সংশ্লিষ্ট কাজে অনেক ক্ষেত্রেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা পেতে দেরি হতো। অনেক সময় পরের মাসের ১০ তারিখের পরও আগের মাসের বেতন-ভাতা জুটতো।
এই পরিস্থিতির উত্তরণে গত ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ইএফটিতে বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওর বেতন-ভাতা দেয়ার ঘোষণা দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিকভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের ২০৯ জন শিক্ষক-কর্মচারীর অক্টোবর মাসের এমপিও ইএফটিতে ছাড় হয়। পরে গত ১ জানুয়ারি ১ লাখ ৮৯ হাজার শিক্ষক ইএফটির মাধ্যমে বেতন-ভাতার সরকারি অংশের টাকা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপে আরো ৬৭ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীকে বেতন ছাড় হয়। ৩য় ধাপে ইএফটির আওতাভুক্ত হয় আরও ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মচারী। এভাবে পর্যায়ক্রমে প্রায় ৩ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষক কর্মচারী এখন পর্যন্ত ইএফটির আওতাভুক্ত হয়েছেন। এবং অপেক্ষায় রয়েছে আরও প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার শিক্ষক কর্মচারী যারা এখনও ডিসেম্বর ২০২৪ মাসের বেতন পায়নি।
Leave a Reply