দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম স্তম্ভ—এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীরা। বছরের পর বছর ধরে সীমিত সুবিধা, অনিশ্চয়তা ও প্রশাসনিক জটিলতার মধ্যেও তাঁরা নিরবচ্ছিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের আলোকিত করে চলেছেন। তাই তাঁদের বেতন-ভাতা শুধু আর্থিক নয়, এটি তাঁদের আত্মমর্যাদার স্বীকৃতি।
সাম্প্রতিক একটি গুরুত্বপূর্ণ খবরে খানিকটা স্বস্তি ফিরেছে শিক্ষক-কর্মচারী মহলে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপপরিচালক আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, আগামী মে মাসের ৫ থেকে ১০ তারিখের মধ্যেই এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদের এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধ করা হবে।
তবে এই ঘোষণার পাশাপাশি একটি বাস্তবতাও রয়েছে—এখনো পর্যন্ত বেতনের প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়নি। অর্থাৎ, এখনো রয়েছে কিছু আনুষ্ঠানিকতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের অপেক্ষা। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই অগ্রিম ঘোষণা একটি ইতিবাচক বার্তা বটে।
১. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বমূল্যের বাজারে বেতন দেরিতে পাওয়ার অর্থ—ঋণে জর্জরিত হওয়া।
২. রমজান ও ঈদ উদ্যাপনের সময়গুলোতে, আর্থিক সংকট পরিবারে মানসিক চাপ তৈরি করে।
৩. বিদ্যালয়ের মনোযোগ ও কাজের পরিবেশেও এই আর্থিক অনিশ্চয়তা বিরূপ প্রভাব ফেলে।
প্রতিবারের মতোই প্রশ্ন থেকে যায়—যখন শিক্ষকরা নির্দিষ্ট সময়ে বেতন পান না, তখন কোথাও যেন প্রশাসনিক সমন্বয়ের ঘাটতি থেকে যায়। অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর বিলম্ব, অনুমোদন প্রক্রিয়ার ধীরগতি কিংবা বাজেট সংকট—এসব কারণ যাই হোক না কেন, এক শ্রেণির শিক্ষাকর্মীর মৌলিক চাহিদা বারবার অবহেলিত হয়।
যদিও এখনো বেতন প্রস্তাব পাঠানো হয়নি, তবে শিক্ষা অধিদপ্তরের দেওয়া সময়সীমা অনুযায়ী মে মাসের প্রথম ভাগেই বেতন পৌঁছাবে—এমন আশা রাখা যায়। তবে কেবল আশা নয়, প্রয়োজন সময়মতো পরিকল্পনা ও প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা।
শিক্ষকদের বেতন শুধুই একটি অর্থনৈতিক লেনদেন নয়, এটি তাঁদের সম্মান ও মর্যাদার বহিঃপ্রকাশ। তাই দয়া করে এ বিষয়টি বারবার দেরি করে বিতর্কিত না করে, প্রক্রিয়াটিকে স্থায়ী ও পূর্বনির্ধারিত করার উদ্যোগ নেওয়া হোক।
Leave a Reply