এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কেন জানি না বা কোন কারণে তাও জানি না এদেশের অনেক পেশাজীবিরাই পছন্দ করে না। তার মধ্যে অন্যতম হলো এদেশের আমলারা। এদেশের আমলারা চিরকালই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অপছন্দ করে। তাদের কোন বিষয় সামনে আসলেই তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ে তা কিভাবে পিছনে ফেলা যায়। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চাওয়া পাওয়া নিয়ে কোন অভিযোগ বা আবদার সরকারের দৃষ্টিগোচর করা হলে কোন সময় এদেশের আমলারা সরাসরি বিরেধিতা করে আবার কোন সময় অসহোযোগীতা মুলক বিরোধিতা করে, কোন সময় ধীরে চল নীতিতে চলার চেষ্টা করে ইত্যাদি ইত্যাদি। এদেশের সকল বিবেকবান সাধারণ জনগণ ও সুশীল সমাজ সকলের নিকট আমার বিনীতভাবে জানতে চাওয়া আসলে এটা হওয়া উচিত কিনা? আমারা জানতে চাওয়া আমলারা যে প্রতিফলন দেখান তা কি এদেশের আপামর সকল জনগণের চাওয়া কিনা, আমলারা যে ভাব গাম্ভীর্য দেখান তা কি এদেশের সকল মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে কিনা?
আরও পড়ুন….তাহলে ইএফটি-ই কি আমাদের অভিশাপ হয়ে দাঁড়ালো।
একটা বিষয় ভেবে দেখেন আমলারাও এদেশের সন্তান আমরাও এদেশেরই সন্তান। তারা এদেশের নীতি নির্ধারনে কাজ করছে, তারা এদেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে দেশে ও দেশের বাহিরে তাদের সুচিন্তিত মেধা ও মননশীলতা মাধ্যমে দেশকে রিপ্রেজেন্ট করছে। যারা মাধ্যমে দেশ ও জাতি হিসাবে আমরা নিজেদের একটা স্তরে পৌছাতে সক্ষম হচ্ছি। একটা দেশের আমলাতন্ত্র কিন্তু সেদেশের উন্নতি ও অবনতি পিছনে অনেক বড় কারিগর হিসাবে কাজ করে তা বলার অবকাশ রাখে না। কিন্তু আমাদের কি এদেশের উন্নতির পিছনে কোন অবদানই রাখিনা। এদেশের ৯৭-৯৮% শিক্ষার্থী পড়াশুনা করে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। সেই শিক্ষার্থীদের যদি আমরা শিক্ষাদান করে দেশের প্রয়োজন অনুযায়ী গড়ে তুলতে না পারি তাহলে কি দেশের সার্বিক অবস্থা কোন দিকে যাবে ভেবে দেখেছেন।
আরও পড়ুন…এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ভাগ্যেন্নোয়নে অন্যতম প্রধান বাঁধা এদেশের আমলারা!
আমলাদের কাজ কি? প্রতিনিয়ত একটা পেশাকে বা পেশাজীবিদের ক্রমাগত ছোট করা নাকি অন্য কিছু? আমলারা যে ধরনের গাইডলাইন দেয় তা মেনেই তো আমরা এবং সরকারী স্কুলের শিক্ষরা এদেশের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করে থাকি। তাহলে কেন আমাদের চাওয়া পাওয়ার বিষয় আসলে আমলারা প্রতিনিয়ত বিরেধিতা করবে, কেন তারা প্রতিনিয়ত নেগেটিভ মনোভাব প্রকাশ করবে।
এদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হলে শুধু কি? এদেশের আমলাতন্ত্র, সরকারী বিদ্যালয়ের শিক্ষক দিয়েই হয়ে যাবে নাকি আমাদের মত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের প্রয়োজন পড়বে না। যদি না পড়ে তাহলে আমাদের প্রত্র পাঠ বিদায় করে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। যদি এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কোন অবদানকে আপনাদের প্রয়োজন না হয় তাহলে তাদের পিছনে যে, সামান্য বিনিয়োগ করছেন তা পুরোপুরি বন্ধ করে দেন তাহলে নিশ্চয়ই দেশের অনেক অপচয় বন্ধ হবে। আর যদি প্রয়োজন এদেশে থাকে তাহলে আমাদের প্রয়োজন গুলো মেটানোর চেষ্টা করুন। আমরা আর এভাবে চিরকাল নিগৃহিত, নিপীড়িত হতে চাইনা। আমাদের দিয়ে যদি এদেমের প্রয়োজন মেটাতে চান তাহলে আমাদের প্রয়োজনও এদেশকেই মেটাতে হবে। কোন মতেই ডাবল স্ট্যান্ডার্ড মেনে নেওয়া আর মেনে নেওয়া হবে না। কোন মতেই আর এদেশের কুচক্রী আমলাদের ষড়যন্ত্রের শিকার আমরা হব না বা হতে চায় না এদেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষক সমাজ। এবারও যদি এদেশের আমলারা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের কোন বিষয় নিয়ে অহেতুক নাক গলাতে আসে বা কোন প্রকার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় তাহলে কিন্তু এই ফ্যাসিষ্ট আমলাদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। এই আমলাদের সম্পর্কে তো আর আমরা জানি না বা এই আমলাদের কার্যকলাপ আমরা দেখিনি এমন তো নয়। দীর্ঘ ১৬ বছর একটি রাজনৈতিক দলকে কিভাবে ফ্যাসিবাদি শক্তিতে পরিণত হতে হয় তার অন্যতম প্রধান সহকারী ছিল কিন্তু আমাদের এই আমলাতন্ত্র।
পরিশেষে একটা পরিস্কার মেসেজ দিতে চাই এদেশের স্বনামধন্য আমলাদের, যে অনেক তো হলো এবার না হয় একটু থামেন, এবার একটু আপনাদের মেধাগুলোকে ভাল কাজে লাগান তাহলে আপনাদের দ্বারা এদেশ যেমন অনেক ভাল কিছু পাবে তেমনি আপনারও এদেশের সকল স্তরের মানুষের অন্তরে জায়গা পাবেন।
অনেক বিরোধিতা করেছন এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নানা বিষয়ে। তাই আবারও শেষ বারের মতো অনুরোধ করে বলছি আর বিরোধিতা না করে গঠনমুলক নীতি নির্ধারণে দেশের সরকারকে সহযোগীতা করুন কিভাবে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবী গুলো সঠিক উপায়ে বাস্তবায়ন করা যায়। তা না করে যদি আপনারা বাস্তবায়নে অতীতের মতো বাঁধা দেওয়াল তৈরি হয়ে দাঁড়ান তাহলে তার পরিণাম কিন্তু পূর্বের ন্যয় নাও হতে পারে।
Leave a Reply