ইচ্ছা এবং সদ্বিচ্ছা—এই দুটি শব্দ সাধারণত একই ধরনের অনুভূতি বা ভাবনা প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত হলেও, তাদের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে।
ইচ্ছা (Desire):
- ইচ্ছা হল একটি মানুষের পছন্দ বা চাহিদা যা সাধারণত ব্যক্তিগত স্বার্থে বা নিজের ভালো থাকার জন্য থাকে।
- এটি নিজস্ব অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক কারণে উদ্ভূত হতে পারে। ইচ্ছা সাধারণত কোনো কিছু অর্জনের বা কোনো লক্ষ্য পূরণের প্রতি আকর্ষণকে প্রকাশ করে।
- ইচ্ছা প্রায় সময়ই স্বার্থপরতা বা ভোগবিলাসী প্রবণতার সাথে যুক্ত থাকতে পারে। উদাহরণ:
- আমি নতুন মোবাইল কেনার ইচ্ছা পোষণ করি।
- আমি ভাল চাকরি পাওয়ার ইচ্ছা রাখি।
- আমার নিজস্ব চাওয়াগুলো।
সদ্বিচ্ছা (Goodwill):
- সদ্বিচ্ছা হল এমন একটি মনোভাব বা ধারণা যা অন্যদের মঙ্গল ও কল্যাণের প্রতি মনোযোগী। এটি এক ধরনের দয়াশীলতা, সহানুভূতি, এবং শুভ ইচ্ছা প্রকাশ করে।
- সদ্বিচ্ছা সাধারণত আত্মলাভের বাইরে থাকে এবং এটি পরমার্থের বা অন্যের মঙ্গল সাধনে নির্ভর করে।
- সদ্বিচ্ছা শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, এবং অন্যদের প্রতি সদিচ্ছার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে। উদাহরণ:
- আমি তোমার জীবনের সকল শুভ কামনা করি (এটি সদ্বিচ্ছার উদাহরণ)।
- সে তার বন্ধুদের জন্য সদ্বিচ্ছা রেখেছে, যাতে তারা সব সময় সুখী থাকে।
এতক্ষণ যে কথাগুলো বললাম সেখানে একটু মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করুন মাউশির ভুমিকা ইএফটি বাস্তবায়নে। মাউশির সদিচ্ছা আছে ইএফটি বাস্তবায়নে তা কি মনে হয়। বা ইচ্ছা তো নাই যে এই কাজটি আমি সঠিক ভাবে সুন্দর ভাবে সম্পুর্ণ করব। যে কোন কাজ শেষ করতে হলে ইচ্ছা এবং সদ্বিচ্ছা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই দুইটার সমন্বয় ভালভাবে করতে না পারলে সে কাজের সুফল ভালভাবে ভোগ করা যায় না।
মাউশির যদি সদ্বিচ্ছা না থাকে তাহলে ইএফটির সুফল কোনদিনই সঠিকভাবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীগণ পাবে না। মাউশি যদি ইএফটি বাস্তবায়নে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের সহায়তা না করে ভুল ত্রুুটি ধরার কাজে ব্যস্ত থাকে তাহলে কোনদিনই ইএফটি নিজ পায়ে দাঁড়াতে পারবেনা সারাজীবন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলবে।
মাউশি আমাদের অভিভাবক সংস্থা অভিভাবক সংস্থার ভুমিকা পালন করতে হয় অনেক ধৈর্য নিয়ে, অনেক সহমর্মীতা নিয়ে, অনেক সহশীলতা নিয়ে সেখানে অনুরাগ ব বিরাগের বশভতী হওয়ার কোন সুযোগ নাই কিন্তু। সেই ভুমিকা কি মাউশির মধ্যে দেখা যাচ্ছে। মাউশি আমাদেরকের তাদের প্রতিপক্ষ বানিয়ে নিচ্ছে।
পার্থক্য:
- উদ্দেশ্য:
- ইচ্ছা সাধারণত নিজের বা ব্যক্তিগত স্বার্থের প্রতি মনোনিবেশ করে।
- সদ্বিচ্ছা অন্যের মঙ্গল বা কল্যাণের উদ্দেশ্যে থাকে।
- স্বার্থ:
ইচ্ছা প্রায় সময়ই স্বার্থপর হতে পারে, কারণ এটি নিজের সুখ বা স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য তৈরি হয়।
- সদ্বিচ্ছা অস্বার্থক, এটি অন্যদের জন্য এবং তাদের কল্যাণের জন্য প্রকাশিত হয়।
- মানসিক অবস্থা:
- ইচ্ছা হতে পারে ক্ষণস্থায়ী বা মুহূর্তিক, তবে এটি প্রেরণা সৃষ্টি করতে পারে।
- সদ্বিচ্ছা অনেক সময় গভীর, স্থায়ী, এবং দয়ালু মনোভাব থেকে উদ্ভূত হয়।
উপসংহার:
- ইচ্ছা মানুষের এক ধরনের ভোগ-বিলাসী চাহিদা বা আকাঙ্ক্ষা, যা ব্যক্তিগত সুখের জন্য হতে পারে।
- অন্যদিকে, সদ্বিচ্ছা মানুষের মধ্যে দয়াশীলতা, সহানুভূতি, এবং অন্যদের কল্যাণের প্রতি মনোভাব তৈরি করে, যা একটি আত্মত্যাগী এবং নিরপেক্ষ ইচ্ছার সাথে সম্পর্কিত।
এই পার্থক্যগুলো দেখে, বুঝতে পারা যায় যে, ইচ্ছা অনেক সময় নিজেকে কেন্দ্র করে, আর সদ্বিচ্ছা অন্যদের ভালোর জন্য কাজ করে।
Post Views: 386
Leave a Reply