এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের ঐক্যবদ্ধ চলমান আন্দোলনের কারণে হোক বা সরকারের ঐকান্তিক ইচ্ছার কারণেই হোক শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদান করতে পারে সরকার। এব্যাপারে আলাপ আলোচনা চলছে। যা অবশ্যই আমাদের জন্য অত্যন্ত খুশির খবর হতে পারে। জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, অন্যান্য ভাতা সমুহের বৃদ্ধি আগামী বাজেট থেকে করা হলেও উৎসব ভাতার বৃদ্ধিটা যেন আগামী ঈদুল ফিতর থেকেই করা হয়। আর বর্তমান সরকারের মননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা সেই সময়ও অবশ্যই ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছিলেন। বলেছিলেন দেখি চেষ্টা করে যদি সম্ভব হয় আমি চেষ্টা করব। তবে সেই চেষ্টা হয়তবা বাস্তবে রূপ পেলেও পেতে পারে এবার উৎসবের আগে।
মাউশির ডিজি মহোদয় বলেন আগামী ঈদের আগেই যেন শিক্ষক কর্মচারিগণ পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা পান তার ব্যাপারে তার পক্ষ চেষ্টার ত্রুটি থাকবেনা বলে আশ্বস্ত করেছেন।
বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের আসন্ন ঈদেই শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সাংবাদিক মনির হায়দার। এ সময় শিক্ষকদের চাকুরী জাতীয়করণের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করা হয়। এবং যতদিন জাতীয়করণ সম্ভব ন হয় ততদিন তাদের চাকুরীর বৈষম্য যতটুকু কমানো যায় তার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সাংবাদিক মনির হায়দার মেহেরপুর প্রেসক্লাবে মতবিনিময় সভায় আসলে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য ও অন্যান্য নানা অসুবিধা নিয়ে আলোচনা হয়। আসন্ন ঈদে তাদের শতভাগ উৎসব বোনাস, সরকারি নিয়মে বাড়ী ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধি এবং অবসর ও কল্যাণ সুবিধা বোর্ড গঠন করে দ্রুত অবসর প্রাপ্ত শিক্ষকদের সমস্যার অবসানের জন্য জোড়ালো আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে যত দ্রুত সম্ভব দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হয়।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সাংবাদিক মনির হায়দার আসন্ন ঈদেই এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের কীভাবে শতভাগ উৎসব ভাতা কার্যকর করা যায় তা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান। এছাড়া শিক্ষক অন্যান্য যে ন্যায় সঙ্গত দাবি রয়েছে পর্যায়ক্রমে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্যও প্রধান উপদেষ্টার কাছে তিনি বিষয়টি তুলে ধরবেন।
মতবিনিময় সভায় শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসচিব জাকির হোসেন বলেন, মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করতে শিক্ষাক্ষেত্রে সকারি ও বেসরকারি বৈষম্য দূরিকরণের লক্ষ্যে আমরা বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে ধারাবাহিকভাবে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি। তবে দাবি নিয়ে বারবার আলোচনা হয়েছে এখনও সমাধান হয়নি। শিক্ষকদের আর্থিক সমস্যার সমাধান না হলে শিক্ষার আমূল পরিবর্তন অসম্ভব। যত দ্রুত শিক্ষকদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। আসন্ন ঈদের শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদান করতে হবে। প্রায় ৯০ হাজার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকরা অবসর ও কল্যাণের টাকা পাচ্ছে না দ্রুত অবসর বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট পুনর্গঠন করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সাংবাদিক মনির হায়দার জানান, শিক্ষকদের সব দাবিই যুক্তিসঙ্গত। তবে বাস্তবায়ন করা সময় সাপেক্ষ। আসন্ন ঈদে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের শতভাগ উৎসব ভাতা যাতে পান সে ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া অতি দ্রুত অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সমস্যা সমাধান করা হবে। শিক্ষকদের অন্যান্য দাবিগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় সেগুলোর বিষয়েও আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য এই সিদ্ধান্তটি যদি বাস্তবায়ন হয় তাহলে তা হবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরদের এক যুগান্তকারী এবং যুগোপোযোগী সিদ্ধান্ত। এবং এর ফলে যা হবে তা হল ঈদের আনন্দ এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীর মধ্যেও পরিলক্ষিত হবে। এতদিন উৎসব মানেই ছিল এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য এক হতাশার ও আশঙ্কার নাম।
Leave a Reply