সরকার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) শিক্ষক-কর্মচারীদের উৎসব ভাতা দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ঈদুল আজহায় তাদের মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে উৎসব ভাতা প্রদান করা হবে। বর্তমানে তারা ২৫ শতাংশ হারে এই ভাতা পেয়ে থাকেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৬৮ জন। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সরকারের অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ২২৯ কোটি টাকা।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ অর্থ মন্ত্রণালয়ে উৎসব ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠায়। ১৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বাজেট মনিটরিং ও সম্পদ কমিটির সভায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে প্রস্তাবটি অনুমোদন পায়।
তবে এই অতিরিক্ত ব্যয় মেটাতে নতুন বাজেট বরাদ্দ না দিয়ে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান বাজেট থেকেই অর্থ জোগান দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ বিভাগ। ফলে ২২৯ কোটি টাকা সংকুলানের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বিভিন্ন খাতে বরাদ্দকৃত অব্যবহৃত অর্থ ব্যবহার করা হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের ২১ এপ্রিল অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদারকে পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে নতুন স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বরাদ্দ রাখা ৫০ কোটি টাকা জুন মাসের মধ্যে ব্যবহার না হলে অব্যয়িত থেকে যাবে। এ ছাড়া, অনেক এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে সরকারিকরণ হওয়ায় সেগুলোর বেতন-ভাতা এখন রাজস্ব খাত থেকে প্রদান করা হচ্ছে। ফলে এমপিও খাতে প্রায় ১৭৯ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এই দুই উৎস মিলিয়েই ২২৯ কোটি টাকার সংস্থান করা সম্ভব হবে বলে জানানো হয় চিঠিতে।
অর্থ উপদেষ্টা ও অর্থ সচিব বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করায় এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সিদ্দিক জোবায়েরের সঙ্গেও ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (টিবিএস) কে জানান, যেহেতু এই অর্থ বিদ্যমান বাজেট থেকেই মেটানো সম্ভব, তাই অর্থ বিভাগ এ সিদ্ধান্তকে ইতিবাচকভাবে দেখছে। আগামী ২৯ এপ্রিল অর্থ উপদেষ্টা দেশে ফেরার পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হতে পারে।
সরকারি ছুটির তালিকা অনুযায়ী, আগামী ৭ জুন দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হতে পারে। চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে তারিখ চূড়ান্ত হবে।
গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা বিভিন্ন সময় চাকরি জাতীয়করণ, বেতন-ভাতা বৃদ্ধি ও অন্যান্য সুবিধার দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। এ সিদ্ধান্তকে তারা সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
১০০ভাগ দিলে খুশী হতাম। তবে নেই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো।