পৃথিবীতে বৈষম্য আর এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারী যেন একসুতোয় গাথা। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চাওয়া পাওয়ার বিষয়ে কোন মুল্যায়ন নেই এদেশের সরকারী আমলাদের। মানুষের ভুল হতে পারে তবে তা একবার বা প্রথমবার যদি হয় তা মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু একই ভুল যদি বার বার হয় তাহলে তা আর বুঝতে বাঁকি থাকে না যে তা ইচ্ছাকৃত। প্রতি ঈদের সময় আসলেই এদেশের গামেন্টেসের শ্রমিকদের যেমন বেতন বোনাস নিয়ে দেন দরবার করা লাগে ঠিক তেমনি এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বেলায়ও প্রতি বছর ঈদ আসলেই বেতন বোনাস নিয়ে এক বাড়তি টেনশন কাজ করে যে কোনদিন বেতন হবে কোন দিন বোনাস হবে। ঈদের আগে বেতন বোনাস পাওয়া যাবে তো? বাসায় ফিরলেই আর কতদিন ছেলেমেয়েদের মুখে শুনতে হবে যে, বাবা তোমাদের বেতন বোনাস কোনদিন হবে। কোনদিন মার্কেট করতে যাব। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের এ সমস্যা কিন্তু কোন অনিচ্ছাকৃত সমস্যা নয় এই সমস্যা পুরোটাই এদেশের আমলাদের ইচ্ছাকৃত যা তারা যুগের পর যুগ ধরে চালূ রেখেছে। কারও কিছু বলার নেই কারও কিছু করারও নেই। এদেশের আমলারা চিরকালই চরম ক্ষমতাধর।
আরও পড়ুন….তাহলে ইএফটি-ই কি আমাদের অভিশাপ হয়ে দাঁড়ালো।
গত রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এক নির্দেশনায় জানিয়েছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের চলতি মাসের বেতন-ভাতা ২৩ মার্চ দেওয়া হবে। এর ফলে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের মতো পেনশনাররাও একইদিনে তাদের অবসরের ভাতা পাবেন; কিন্তু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রায় ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর মার্চ মাসের বেতন ঈদের আগে দেওয়া হবে না সাফ জানিয়ে দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কর্মকর্তারা। এবং তারা এ কথা সংবাদ মাধ্যমকে গর্ব ভরে জানিয়ে দিয়েছে এ তথ্য।
আরও পড়ুন….শিক্ষকদের ভাতা বাড়ানো নিয়ে আমলাদের দর কষাকষি।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বেতন-ভাতার সরকারি অংশের ছাড় করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), মাদ্রাসা ও কারিগরি এই তিনটি অধিদপ্তর। তিনটি দপ্তরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষক-কর্মচারী স্কুল কলেজে, ৩ লাখ ৯৮ হাজার ১৩২ জন। তাদের মার্চ মাসের বেতন এখন দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন মাউশি অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। আর মাদ্রাসা ও কারিগরি অধিদপ্তর ২৩ মার্চের মধ্যে বেতন-ভাতা দেওয়ার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত সেটি সম্ভব নাও হতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন….এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ভাগ্যেন্নোয়নে অন্যতম প্রধান বাঁধা এদেশের আমলারা!
তবে মাউশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের অগ্রীম নয় পাওনা যে ফেব্রুয়ারী মাসের বেতন ও ঈদুল ফিতরের সিকি বোনাস দেওয়ার কথা জানিয়েছে তাও এখনও প্রদান করেনি। কেবল মাত্র প্রতিষ্ঠানের ইএফটি ড্যাশবোর্ডে পেমেন্ট তালিকা প্রকাশ করেছে। পূর্বের ধারাবাহিকতায় পেমেন্টে তালিকা প্রকাশ হওয়ার পরও তিন চার দিন সময় লাগে। সেই মতে আগামী সোমবারের আগে বেতন একাউন্টে ঢোকার সম্ভাবনা কম তবে ঈদের আগেই ফেব্রুয়ারীর বেতন পাওয়া যাবে এটা নিশ্চিত। তবে বোনাস ঈদের আগে পাওয়া যাবে কিনা তা কিন্তু এখনও নিশ্চিত নয়। কারন বোনাস অনুমোদনের জন্য এখনও মন্ত্রণালয়েই পাঠায় নি মাউশি।
তবে একটা খুশির খবর এই যে, ফেব্রুয়ারীর বেতন ১ম থেকে ৫ম লট সবার একসাথে আসার সম্ভাবনা আছে। অর্থাৎ ৫ম লটে যে সকল শিক্ষক কর্মচারীরা বেতন পাবেন তারা ঈদের আগেই ডিসেম্বর, জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারীর বেতন পাবেন এটা নিশ্চিত। পাশাপাশি একটা খারাপ খবরও আছে তা হল আগে জানানো হয়েছিল যে, যে সকল শিক্ষক কর্মচারী এখন পর্যন্ত কোন ধাপেই ইএফটির আওতাভুক্ত হয়নি তাদের ম্যানুয়ালী হলেও ঈদের আগে তাদের বেতন দেওয়া হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মাউশি থেকে তাদের ব্যাপারে কোন আপডেট নিউজ নাই। তাহলে এসকল শিক্ষক কর্মচারীর ঈদ আনন্দ কেমন হবে তা মাউশির বিবেকবান কর্মকর্তাদের নিকট প্রশ্ন থাকল?
Leave a Reply